শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে দুর্যোগ সহনীয় ঘর টাকার বিনিময়ে বরাদ্দের অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি উপজেলার ৭ নং মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের হাসলীগাঁও গ্রামের।
ওই গ্রামের সেকান্দর আলীর অভিযোগ, ইউপি চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম তোতা ও ইউপি সদস্য নিজাম ঘর পেতে তার কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা নিয়েছেন।
সেকান্দরের দাবি, ঋণ-ধার করে ওই টাকা তিনি চেয়ারম্যানকে দেন। তিনি পেশায় একজন দিনমজুর। ঋণের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে দেনাদারের চাপে এখন তিনি দিশেহারা।
অভিযোগ রয়েছে, সেকান্দর আলীর মতো আরও অনেকেই চেয়ারম্যানদের ঘুষ দিয়ে এখন বিপাকে পড়েছেন।
অন্যদিকে, লিখিত অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম তোতা বলেন, আমি সেকান্দর আলীকে চিনি না। স্থানীয় ইউপি সদস্যের মাধ্যমে সে ভোটার আইডি কার্ডের কপি ও ছবি জামা দেয়। পরে সরেজমিনে গিয়ে তার সাথে কথা বলে তাকে ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়। আর ঘুষের টাকা লেনদেনের বিষয়টি গোপনে ইউপি সদস্যের সাথে হয়ে থাকতে পারে তবে তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না।
চেয়ারম্যানের দাবি, রাজনীতিতে তার বিরোধী পক্ষের লোকজনের ইন্ধনে গুটিকয়েক লোক তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে স্থানীয় ইউপি সদস্য নিজাম বলেন, ওগুলো সব মিথ্যা কথা। ঘর পেতে চেয়ারম্যানের কাছে সেকান্দর আলী আবেদন করেছে। পরে ঘর নির্মাণের আগে ইউএনও স্যার এলাকায় এসে তাকে জিজ্ঞেস করেছে ঘরের জন্য কাউকে টাকা দিয়েছেন কি না। তখন সে (সেকান্দর আলী) অস্বীকার করেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলার গৌরীপুর ও সদর ইউনিয়নের একজন ভিক্ষুক এবং একজন প্রতিবন্ধী বলেন, দুর্যোগ সহনীয় ঘর তৈরি করে দেয়ার কথা বলে প্রায় প্রতিটি ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সদস্যরা উপকার প্রত্যাশীদের কাছ থেকে ঘুষ হিসাবে ২৫ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন। আর এ কথা সবাইকে না বলতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন।
প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বলেন, ঘর নির্মাণে ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা উপকারভোগীদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন এই ধরণের অভিযোগ তিনি শুনেছেন।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার সময় ইউপি চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে দরিদ্রদের তালিকা নেয়া হয়। প্রতি ইউনিয়নে ১০ জন তহদরিদ্রের ঘর পাওয়ার কথা থাকলেও আমরা চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে ২০ জনের তালিকা চেয়েছি। পরে যাচাই বাছাই করতে ইউএনও সাহেবকে সাথে নিয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে ১০ জন প্রকৃত দরিদ্রকে বাছাই করা হয়েছে। তারপরও যদি চেয়ারম্যানরা ওইসব দরিদ্র মানুষদের চাপ প্রয়োগ করে টাকা নিয়ে থাকে তাহলে কি করার থাকে।
প্রকল্পের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল মাহামুদ বলেন, চেয়ারম্যানদের তালিকা অনুযায়ী আমি ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সরেজমিনে গিয়ে উপকার প্রত্যাশীদের সাথে কথা বলেছি। তাদের সাথে মিটিং করে বলা হয়েছে এই ঘর পেতে আপনাদের এক পয়সাও খরচ হবে না। বিডি জার্নাল