শাইখুল জিহাদ ওসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহ্ এর শাহাদতের প্রায় দু’মাস পরে ২০১১ সালে ময়দান ওয়ার্দাক প্রদেশে এই ঘটনা ঘটে।
ক্রুসেডার মার্কিন বাহিনী খবর পেয়েছিলো যে, ইমারতে ইসলামিয়ার প্রয়াত আমিরুল মুমিনিন মোল্লা মোহাম্মদ ওমর মুজাহিদ আফগানিস্তানের ময়দান ওয়ার্দাক প্রদেশের সৈয়দাবাদ জেলার টানগি এলাকায় অবস্থান করছেন।
এই তথ্যের ভিত্তিতে ক্রুসেডার বাহিনী রাতে টনগি এলাকায় হেলিকপ্টার দিয়ে বেশ কয়েকবার অভিযান পরিচালনা করে, তাদের গন্তব্য আমিরুল মু’মিনিন এর অবস্থানে যেকোন মূল্য পৌঁছা।
এ সময় স্থানীয় আইয়ুবি নামক এক শিক্ষার্থী , যিনি সবে দ্বাদশ শ্রেণি থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন, তালেবানদের স্থানীয় কমান্ডার মৌলভী মহিবুল্লাহর নেতৃত্বে তালেবানে যোগ দেন। তালেবানে যোগ দেওয়ার পর তিনি প্রথমবারের মত রাতে তালেবানদের সাথে অভিযানের জন্য বের হন এবং একটি মসজিদে তাঁরা অবস্থান নেন। তিনি দায়িত্বপান পাহারাদারির, এসময় হঠাৎ তিনি শুনতে পান চিনুক হেলিকপ্টারের শব্দ।
তিনি মৌলভী সাহেবকে চেঁচিয়ে বললেন যে হেলিকপ্টার এসেছে, মৌলভী সাহেব এই সংবাদ পেয়েই সকল সাথীদের দ্রুত প্রস্তুত হতে বললেন , এরপর মৌলভী সাহেব স্থানীয় যুবককে রকেট দিয়ে চিনুক হেলিকপ্টার টার্গেট করে আঘাত করার নির্দেশ দিলেন। আর সে খুব দক্ষতার সাথেই তার লক্ষ্যবেধ করতে সক্ষম হয়, ফলে মহুর্তেই ধ্বংস হয়ে যায় মার্কিন হেলিকপ্টার। নিহত হয় হেলিকপ্টারে থাকা সকল মার্কিন ক্রুসেডার।
পরের দিন দুপুরে উক্ত এলাকায় পূণরায় অভিযান ও তল্লাশী চালাতে শুরু করে মার্কিন বাহিনী। তারা প্রথমে অবস্থান নেয় মুজাহিদদের হামলার শিকারে পরিণত হওয়া চিনুক হেলিকপ্টারটির নিকটে। এরপর মুজাহিদগণ আড়াল থেকে পূণরায় বিধ্বস্ত হওয়া মার্কিন হেলিকপ্টারটি টার্গেট করে দুইটি রকেট লাঞ্চার হামলা চালান। যার ফলে এবারও পরিপূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যায় মার্কিন হেলিকপ্টারটি, ঘটনাস্থলেই তখন নিহত হয় সেখানে অবস্থানরত ৩০ মার্কিন ক্রুসেডার, আহত হয় অন্যরা।
এই সফল হামলার পরে ক্রুসেডার মার্কিন বাহিনী মুজাহিদদের সন্ধানে উক্ত এলাকায় একাধিক অভিযান শুরু করে। অভিযানের দু’দিন পরে, তালেবানদের প্রাদেশিক গভর্নর মৌলভী আহমাদ উল্লাহ গোলাম বিমানটি কারা গুলি করেছে তা জানতে ফোন করেন স্থানীয় মুজাহিদদের নিকট। স্থানীয় মুজাহিদরা বিস্তারিত সংবাদ প্রাদেশিক গভর্নরকে জানান। এরপর তিনি হেলিকপ্টারটি গুলি করা মুজাহিদদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, হেলিকপ্টারটি আমাদের উপরেও হামলা চালিয়েছিলো, যাদের টার্গেট ছিল আমিরুল মু’মিনীন মোল্লা মুহাম্মদ ওমর মুজাহিদ। আর এই অভিযানে অংশ নিয়েছিলো আমেরিকার বিশেষ বাহিনী। আমরা জানতে পেরেছি যে, এই টিমটি শাইখ ওসামা বিন লাদেন রহ. এর বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযানেও অংশগ্রহণ করেছিলো। তোমরা সকলে সতর্ক থাকবে, কেননা তাদের স্পেশাল ফোর্সের সৈন্যদেরকে তোমরা হত্যা করেছো, তারা অবশ্যই নেড়ে কুকুরের ন্যায় পূণরায় তোমাদের খোঁজে অভিযান চালাবে।
গভর্নরের এই কথার চারদিন পরেই মার্কিন বাহিনী ওই এলাকায় ভারী অভিযান চালাতে শুরু করে এবং চার দিন যাবৎ উক্ত এলাকায় তারা মুজাহিদদের সন্ধানে অভিযান চালায়। চতুর্থদিন আসরের সময় স্থানীয় তালেবান কমান্ডার মৌলভী মহিবুল্লাহ তাঁর সহযোগীদের নিয়ে গাড়ি চালানোর সময় শত্রুরা তাকে লক্ষ্য করে আক্রমণ চালায়। ক্রুসেডার মার্কিন বাহিনীর এই আক্রমণে তিনি এবং তাঁর সাথে থাকা সকল মুজাহিদ শহাদাত বরণ করেছিলেন। আল্লাহ্ তা’আলা তাদের শাহাদাতকে কবুল করুন, আমিন।
এরপর স্থানীয়রা জানান, এই হামলার পর বেশ কয়েকটি হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমান ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিলো, এরপর তারা ঘটনাস্থলের আশেপাশের অঞ্চলটিকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছিলো।
এরপর তালেবানদের এই বীর মুজাহিদদের হামলায় নিহত হওয়া আমেরিকান সেনাদের শ্রদ্ধা জানাতে একটি অনুষ্ঠানে তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রপতি (ওবামা) এর চোখে অশ্রু ভরে উঠলো। আল্লাহু আকবার, এভাবেই প্রথমবারের মত আফগান তালেবানরা বিশ্ব মুসলমানদের আইডল (ওসামা বিন লাদেন) রহ. এর শাহাদাতের প্রতিশোধ নিয়েছিলেন।