কাবুল সরকারের দায়িত্বহীন বক্তব্য : ইমারতে ইসলামিয়ার প্রতিক্রিয়া

0
993
কাবুল সরকারের দায়িত্বহীন বক্তব্য : ইমারতে ইসলামিয়ার প্রতিক্রিয়া

কাবুল সরকারের কয়েকজন প্রতিনিধির দায়িত্বহীন বক্তব্যের বিষয়ে ইমারতে ইসলামিয়ার মুখপাত্র নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন।

গত তিনদিন যাবত কাবুল সরকারের দুইজন প্রতিনিধি মিডিয়ায় ইমারতে ইসলামিয়ার বিরুদ্ধে অদ্ভুত ধরনের প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে; উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ইসলামী শাসনের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে যাচ্ছে। এ বিষয়ে ইসলামী ইমারাহর অবস্থান নিম্নরুপ:

* ইসলামী সরকার ব্যবস্থার নিজস্ব পরিচয় ও সিস্টেম রয়েছে। যারা কাবুল সরকারের প্রতিনিধিত্ব করছে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে তারা তা বুঝতে অক্ষম। তারা ইসলামী শিক্ষা ও ইতিহাস সম্পর্কে অনবগত।

* ইসলামী ইমারাহর শাসনকালে ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী শাসনকার্য পরিচালিত হতো। ইসলামে ফিকহী বিধি-নিষেধের নামই হচ্ছে আইন, যা সাধারণভাবে সমাজে প্রয়োগ করা হয়। পৃথিবীর সব দেশে আইনের বিরোধিতাকে অপরাধ বিবেচনা করা হয়; অপরাধীকে সাজা দেওয়া হয়। ভিত্তিহীন অভিযোগ উত্থাপন করা, ইসলামী আইনকে ইসলামবিরোধী আখ্যা দেয়া, বক্তার অজ্ঞতা ও নির্বুদ্ধিতার পরিচয় বহন করে।

* তালেবান ক্ষমতায় আসার পূর্বে ক্ষমতার লড়াই ও গৃহযুদ্ধের ফলে গোটা কাবুল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। ষাট হাজার আফগানকে হত্যা করা হয়েছিল। আপনাদের দৃষ্টিতে সেগুলোই কি ভালো ছিল?

* সর্ব সাধারণের মাথায় পেরেক ঠুকা; মৃতদেহের সামনে নৃত্য করা; চেকপোস্টে নাগরিকদের সম্পদ লুণ্ঠন করা ও তাদেরকে হেনস্থা করা কি গর্বের বিষয়?

* সতীত্ব রক্ষার্থে মেকরোয়েনের (রাশিয়া ১৯৬০ সালে কাবুলে মেকরোয়েন টাওয়ার নির্মাণ করে) চতুর্থ তলা থেকে কুমারীর ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করা; কাবুল ও অন্যান্য প্রদেশে গুন্ডাদের অসংখ্য অগণিত অপকর্ম কোন ধরনের কৃতিত্ব?

* ব্রিফকেস ভরা ডলারের বিনিময়ে গোলামী কবুল করা; মাতৃভূমিকে যারা জবরদখল করেছে তাদের লেজুড়বৃত্তি করা; তাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নিজ জাতির বিরুদ্ধে লড়াই করা; দখলদারদের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তি করা কোন ধরনের সাফল্য?

* গনতন্ত্রের নামে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ করা; ঘোষ, দুর্নীতি ও লুণ্ঠনের বিস্তার ঘটানো; অযোগ্য, অপদার্থরা শাসক হয়ে বসা; যুদ্ধাপরাধীদেরকে শক্তিশালী করা; রাজপ্রাসাদ থেকে নিয়ে সরকারের প্রতিটি ক্ষেত্রকে অশ্লীলতা, দুর্নীতি ও দুঃশাসনের ঘুর্ণাবর্তে ঠেলে দেয়া; মাদকের চাষ ও মাদক ব্যবসার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা; লাখো যুবকের নেশায় আসক্ত হওয়া; শহরে লুটপাট চালানো; গাড়ি, অর্থকড়ি, মোবাইল ফোন, মোটরসাইকেল হাতিয়ে নেয়ার জন্য হত্যা বা গুম করা; লক্ষ লক্ষ ডলারের অর্থ সাহায্য সত্ত্বেও দেশকে চরম দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দেয়া; এ ধরনের হাজারো অপকর্ম ছাড়া এই জাতিকে আর কিছু কি আপনারা উপহার দিতে পেরেছেন?

এই অশুভ চেহেরাগুলো শুরু থেকেই দেশ, জাতি ও ইসলামী শাসনের বিরোধীতা করে আসছে। বিশ বিশটি বছর ধরে গোলামীর বেড়ি গলায় পরে গোটা জাতিকে দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ করার চেষ্টা করছে। তাই আত্মমর্যাদাবোধ-সম্পন্ন, আপোষহীন আফগান জাতিকে সদা সতর্ক থাকতে হবে।

ইসলামী ইমারাহর অধীনে আফগানরা একে অপরের ভাই বলে বিবেচিত হবে; সরকার সর্বসাধারণের সেবক হবে; আল্লাহ প্রদত্ত শরয়ী অধিকার থেকে কেউ বঞ্চিত হবে না; কারো উপর সীমালঙ্ঘন করা হবে না।

আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, মান-মর্যাদা সুরক্ষিত থাকবে। বহিঃর্শক্তির সাথে পরাধীনতামূলক সম্পর্ক থাকবে না। আমরা স্বাধীন ও স্বনির্ভর ভূমিতে বসবাস করবো।

যারা আফগান জাতিকে তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করবে তাদের মুখোশ উন্মোচন করে দেয়া হবে। অপদস্থতা আর লাঞ্ছনা ছাড়া তারা আর কিছুই পাবে না।

و ما ذالك على الله بعزيز

আল্লাহর কাছে কঠিন কিছু নেই।

 

মুহতারাম জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ হাফিজাহুল্লাহ

মুখপাত্র, ইসলামি ইমারত আফগানিস্তান

০৫-০২-১৪৪২ হিজরী

২২-০৯-২০২০ ঈসায়ী

 

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধসেতুর মাঝখানে গর্ত, নেই কোন ব্যবস্থা
পরবর্তী নিবন্ধআওয়ামী লীগ নেতার সহায়তায় সরকারি জমিতে ভবন নির্মাণ