রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি থেকে হেফাজতে ইসলাম, চরমোনাই, আলেম-উলামা ও সর্বস্তরের মুসলমানদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক সন্ত্রাসী শ্লোগান ও বক্তব্য দেয়া হয়েছে। গত শনিবার ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, পাবনা, নরসিংদী, ঠাকুরগাঁওসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় মুসলিমবিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধনের আয়োজন করে একাধিক উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন।
দেশব্যাপী আয়োজিত এই উস্কানিমূলক কর্মসূচিতে জাগো হিন্দু পরিষদ, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, পূজা উদযাপন কমিটি, হিন্দু যুব পরিষদ, আইনজীবী বিজয়া সম্মিলন পরিষদ, বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ, জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ, মাইনোরিটি ওয়াচ, জলদাস ফেডারেশন, হিন্দু ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ, শারদাঞ্জলী ফোরাম, হিন্দু মহাজোটসহ অর্ধশতাধিক উগ্র ইসলামবিদ্বেষী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেয়। উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর ব্যানারে আয়োজিত উক্ত ইসলামবিদ্বেষী সভায় বাম সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ছিলো লক্ষণীয়।
উগ্র হিন্দুত্ববাদী নেতাদের দাবি তারা হিন্দুদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, নারী নির্যাতন, হিন্দু ছাত্রদের ছাত্রত্ব বাতিলের অপপ্রয়াস, অধ্যাপক কুশল চক্রবর্তীকে হত্যা হুমকি, শহীদুন্নবী জুয়েলকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও সভা সমাবেশে অন্য ধর্মের প্রতি অব্যাহত কটূক্তির প্রতিবাদ ও সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, কমিশন ও সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনের দাবিতে সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। তবে এই উদ্দেশ্যমূলক শিরোনামের আড়ালে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য আয়োজিত সভায়,
‘জয় শ্রীরাম’; ‘মৌলবাদের আস্তানা, জালিয়ে দাও পুড়িয়ে দাও’; ‘হেফজাতের আস্তানা, জালিয়ে দাও পুড়িয়ে দাও’; ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’; ‘হেফাজতের গালে গালে, জুতা মারো তালে তালে’; ‘চরমোনাই’র গালে গালে, জুতা মারো তালে তালে’; ‘কওমির দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’ ধইরা ধইরা জবাই কর, একটা দুইটা জবাই কর’ প্রভৃতি শ্লোগান দেয়া হয়েছে।
ইতোমধ্যে উগ্রবাদের দোসর “জাগো হিন্দু পরিষদ চট্টগ্রাম জেলা” এর কর্মীদের এমন উস্কানিমূলক স্লোগানের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তারা যেভাবে ভারতের মুসলিমনিধনের উগ্র হিন্দুত্ববাদের ব্র্যান্ডেড স্লোগান ‘জয় শ্রীরাম’ বলে ‘কুরুক্ষেত্রের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার’ শ্লোগান দিয়েছে তাতে জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও তার সহযোগী হিন্দুত্ববাদী সংগঠন গুলো কী ভারত উপমহাদেশে রামরাজত্ব প্রতিষ্ঠার বৃহত্তর এজেন্ডার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে উস্কানি দিচ্ছে!
উক্ত কর্মসূচিতে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের আহ্বানে তারা মাঠে নামলেও তাদের সাথে যোগ দিয়েছে পূজা উদযাপন পরিষদ ও যুব ঐক্য পরিষদসহ অন্যান্য হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। এসমস্ত রাম-বামদের নৈরাজ্যবাদী আস্ফালন মুসলিম ও দেশবিরোধী গভীর গোপন ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ। কেননা হেফাজত, কওমী কিংবা চরমোনাই কারো সঙ্গে হিন্দু-বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ বা অন্যান্য হিন্দুবাদী পরিষদের দুশমনি থাকার কথা নয়। যেহেতু সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে তাদের কোন বক্তৃতা, কর্মসূচি কিংবা অবস্থান নেই।
এছাড়া বাংলাদেশের ইতিহাসে সংখ্যালঘুরা কোন ইসলামপন্থী দলের আক্রমণের শিকার হয়েছে এমন নজিরও খুঁজে পাওয়া যায় না। এদেশের সংখ্যালঘুরা পৃথিবীর যেকোনো দেশের সংখ্যালঘুদের চাইতে শান্তি ও নিরাপত্তার সঙ্গে আছে। এদেশে ধর্মের নামে কোন সংখ্যালঘুর উপর আক্রমণ হয় না। এছাড়া বিচ্ছিন্নভাবে যে’কটি হিন্দুদের উপসনালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে তার সাথে সেক্যুলার রাজনৈতিক নেতাদের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলে বা কোথাও তাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের এ ধরনের কার্যক্রমের সাথে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। এরপরেও তাদের এ ধরনের উস্কানিমূলক কর্মসূচি কেন? যেই জয় শ্রীরাম স্লোগান দিয়ে পাশের দেশে মুসলমানদের হত্যা করা হচ্ছে সেই শ্লোগান বাংলাদেশে কেন?
উত্তরটা একেবারে সহজ। তারা যাদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক শ্লোগান দিচ্ছে তাঁরা মুসলিম। তাঁরা ভারতের জুলুম নির্যাতন এবং নিপীড়নের বিরুদ্ধে কথা বলে, সীমান্তে হত্যার বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলে। সেই সংগঠনগুলো ভারতে মুসলিম নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলে, মোদি সরকারের ভারত থেকে মুসলিম তাড়ানো এবং মসজিদ ধ্বংসের প্রতিবাদ করে।
তারা কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে এদেশে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতেই এ ধরনের উগ্র শ্লোগান দিয়েছে। বাংলাদেশ সরকারও এমন একটা সন্ত্রাসবাদী অনুষ্ঠান আয়োজনের সুযোগ করে দিয়েছে। কোনো প্রকার বাধাহীন এসব হিন্দু সন্ত্রাসীদেরকে দেশের মুসলিমদেরকে উস্কানি দেওয়ার সুযোগ দিয়েছে। এখন পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাও নেয়া হয়নি। এমন উসকানিমূলক বক্তব্যের কারণে দেশে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, এ কথা হিন্দু সন্ত্রাসীরা যেভাবে জানে, তেমনি তা সরকারেরও অজানা থাকার কথা নয়। তবুও কেন তারা এসব অনুষ্ঠানে বাধা দেয়নি? নাকি হিন্দুদের বাধা দেওয়ার ক্ষমতাই তাদের নেই। সরকার কি চায় এদেশের অভ্যন্তরে দাঙ্গা শুরু হয়ে যাক?
ওদিকে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি দলের এক প্রভাবশালী নেতা সুব্রামানিয়াম স্বামী সম্প্রতি বাংলাদেশে কথিত হিন্দু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে মালাউন ভারতীয় সেনা পাঠানোর হুমকি দিয়েছে। সে বলেছে, মুসলিমদের উপর যদি বাংলাদেশ সরকার ক্র্যাকডাউন না চালায়, তবে তারা ভারতীয় সেনা পাঠিয়ে ক্র্যাকডাউন চালাবে।
https://bit.ly/38uFGSt
এখন বাংলাদেশে যদি সংঘাতপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করা যায়, তাহলে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা আরো সহজ হবে। আর এজন্যই বাংলাদেশে হিন্দু সন্ত্রাসীরা মুসলিমবিরোধী স্লোগান দিচ্ছে, মুসলিমদেরকে জবাই করার প্রকাশ্য হুমকি দিচ্ছে। আর দেশের সরকার এসব হিন্দুদের ব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করছে।
তাহলে কী বাংলাদেশে ভারতীয় সেনা পাঠানোর জন্য হিন্দুদের কর্তৃক একটি সংঘাতপূর্ণ পরিবেশ বানানোর পায়তারা চলছে? হাসিনা সরকার কি এসব কিছু জেনে-বুঝেও হিন্দুত্ববাদীদের পক্ষাবলম্বন করছে?
হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদসহ অন্যান্য সংগঠনগুলো বাংলাদেশের জন্য চরম হুমকিরূপে আবির্ভূত হয়েছে। এর আগে এই সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহা বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে উদ্দেশ্যপূর্ণ বানোয়াট ও ডাহা মিথ্যাচার করেছিলো। এই উগ্র সংগঠন এবার আরও সংঘবদ্ধভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। দেশে অরাজকতা সৃষ্টির পায়তারা করছে। তাই দেশবাসীকে সময় থাকতেই সজাগ ও সতর্ক হতে হবে। অন্যথায় মুশরিক মালাউনদের হাতে নিজেদের ভাগ্য সপে দেয়া ছাড়া কোন উপায় থাকবে না।
হায়দ্রাবাদ এর মত হয়ত পরিকল্পনা করেছে হিন্দু মালাউন সরকার বিজিপি। কয়দিন আগে হিন্দু মালাউন বিজিপি এমপি হিন্দু মালাউন সেনা পাঠানোর হুমকি দিয়েছিল। সব একটা পরিকল্পনা মারাত্মকভাবে প্লান করে মুসলিমদের টার্গেট করেছে।প্রতিটা মুসলিমদের এখনই সতর্ক হওয়া উচিত। এইত ক্ষত যায় নি কাশ্মীরের দিল্লির ঘটনা। গুজরাটের দাংগা। ইন্ডিয়ান ইউটিউব একটা চ্যনেলএ দেখলাম তারা ভিডিওর টাইটেল এইরকম করেছে….. হিন্দু নির্যাতন বন্ধ করতে ভারতের পদক্ষেপ। আসলে হিন্দু মালাউনগুলাকে এতবড় সাহস দিচ্ছে কারা? বুযাই যায়। যাই হউক আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। সময় থাকতে যেন আমরা সতর্ক হয়ে যাই।
তাগুতের দোসররা আমাদের কোনভাবেই এক হতে দিচ্ছে না।
দু,চারজন মিলে কোন ছোটখাটো মিটিং করেও পার পাওয়া যাচ্ছে না।
অথচ পরিস্থিতি যা বলে,তাতে এই মূহুর্তে আমাদের এক হয়ে এদের রুখে দেওয়াটা অতীব জরুরী।
দুঃখের বিষয় অনলাইনে যে পরিমাণ জযবা ওয়ালা ভাই দেখতে পাওয়া যায়, অফলাইনে তাদের কার্যক্রম অনেকটাই আলাদা।
আল্লাহ জানেন আমরা কোন পরিণতির দিকে এগিয়ে চলছি।
আলহামদুলিল্লাহ যথাযথ বলেেছেন