দেশের ৩২৯টি পৌরসভার মধ্যে (সর্বশেষ ঘোষিত পৌরসভা সিলেটের বিশ্বনাথ বাদে) পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা সেবা চালু আছে মাত্র ১০টিতে, যা মোট পৌরসভার মাত্র ৩ ভাগ। বাকি ৯৭ ভাগ পৌরসভার পয়ঃবর্জ্য ফেলা হচ্ছে খাল, বিল ও নদীতে। এতে দূষিত হচ্ছে মাটি ও পানি। পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকা ৩১৯টি পৌরসভার মধ্যে ১৬৬টিই প্রথম শ্রেণির। ১৮৪টি পৌরসভার পয়ঃবর্জ্য পরিশোধনাগার নির্মাণের জন্য নিজস্ব কোনো জমিই নেই। স্থানীয় সরকার বিভাগের সহায়তায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) আইটিএনের নেতৃত্বে পরিচালিত জরিপে এমন চিত্র উঠে এসেছে। এতে দেখা গেছে, সারা দেশের মধ্যে পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা সেবা চালু আছে শুধু শেরপুর, নীলফামারী, লক্ষ্মীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, চৌমুহনী, ঝিনাইদহ, সখীপুর ও সাতক্ষীরা পৌরসভায়। এ ১০টি পৌরসভা প্রথম শ্রেণির হলেও অপর ১৬৬টি প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা নেই। বাকি ১৫৩টি পৌরসভার মধ্যে অধিকাংশ দ্বিতীয় শ্রেণির, হাতে গোনা কয়েকটি তৃতীয় শ্রেণির। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর (সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, পল্লী অঞ্চল) পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য আলাদা আলাদা কাঠামো রয়েছে। পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন নাগরিক সেবা নিশ্চিত করার দায়িত্ব এসব প্রতিষ্ঠানের। তবে বরাদ্দ ঘাটতি, জনপ্রতিনিধিদের উদাসীনতা, দুর্নীতি, প্রস্তুতি ছাড়াই অপরিকল্পিতভাবে নতুন নতুন পৌরসভা গঠনের কারণে নামেই এগুলো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান হচ্ছে। জনগণ উপকৃত হচ্ছে না। এ ছাড়া অধিকাংশ জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের আগে নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও পরবর্তীতে তারা ব্যক্তিগত উন্নয়নে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় নাগরিক সেবাগুলো অধরা থেকে যাচ্ছে। জবাবদিহিতার ব্যবস্থা নেই। স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, একের পর এক পৌরসভা গঠন করা হলেও অধিকাংশেরই সক্ষমতার ঘাটতি আছে। পর্যাপ্ত বাজেট নেই। পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য গাড়ি নেই। বর্জ্য ডাম্পিং ইয়ার্ড নেই। সুয়ারেজ লাইন নেই। জনপ্রতিনিধিদেরও এসব নিয়ে কোনো চিন্তা নেই। নগর হওয়ার জন্য যেসব উপকরণ প্রয়োজন, সেগুলো হলেই তাকে পৌরসভা ঘোষণা করতে হয়। এখানে নতুন নতুন পৌরসভা করতে প্রচুর টাকা খরচ ব্যয় হচ্ছে, কিন্তু এগুলো বাস্তবে পৌরসভা হচ্ছে না। শুধু শুধু খরচ বাড়ছে। অর্থের অপচয় হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন