উপমহাসগরীয় অঞ্চলে সর্ববৃহৎ গির্জা নির্মাণ করছে বাহরাইন

1
526
উপমহাসগরীয় অঞ্চলে সর্ববৃহৎ গির্জা নির্মাণ করছে বাহরাইন

উপমহাসাগরীয় অঞ্চলের সর্ববৃহৎ গির্জা নির্মাণ করতে যাচ্ছে বাহরাইন। গত ২৩ ডিসেম্বর এ সংক্রান্ত একটি খবর প্রকাশ করে সৌদি পত্রিকা আরব নিউজ।

খবরে বলা হয়, ‘আওয়ার লেডি অফ এরাবিয়া ক্যাথেড্রাল’ নামে একটি গির্জা নির্মাণ হচ্ছে। এটি রাজধানী মানামা থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে একটি দ্বীপে ৯ হাজার বর্গ মিটার এলাকা জুড়ে নির্মিত হচ্ছে।

বাহরাইন চার্চ প্রজেক্টের আওতায় গির্জাটি আগামী বছরের মে মাসে উন্মুক্ত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে প্রকল্পটির প্রধান পর্যবেক্ষণকারী খ্রিস্ট ধর্মযাজক সাজি থমাস। সে ভারতের কেরালার বংশোদ্ভূত।

উত্তর আরবের খ্রিস্টিয় অ্যাপোস্টলিক ভিকারিয়েট অর্থাৎ, যে দেশ বা অঞ্চলগুলোতে মিশনারীরা এখনো খ্রিস্ট ধর্মযাজক কিংবা বিশপ কিংবা ডেকানদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি, সেখানে ক্যাথলিক চার্চের আওতায় আঞ্চলিক এখতিয়ার প্রতিষ্ঠার মিশনের অংশ হিসেবে গত ৭ বছর যাবত কাজ করে যাওয়া ধর্মযাজক ফাদার সাজি থমাস, ইতালিয়ান বিশপ ক্যামিলো বালিনের আকস্মিক মৃত্যুর পর এই হারকিউলিয়ান স্থাপত্য প্রকল্পের দায়িত্ব গ্রহণ করে।

এই ব্যাপারে সে আরব নিউজকে জানায়, বিশপ ক্যামিলো বালিনের আকস্মিক মৃত্যুতে আমি জলের বাইরে থাকা জীবিত মাছের মতো হয়ে পরেছিলাম! তবে বিশপ ক্যামিলো বালিন তার মৃত্যুর আগেই আমাকে শিখিয়ে গিয়েছিল যে, একটি ক্যাথেড্রালের নকশা ও নির্মাণশৈলী কেমন হতে হয়, আর ক্যাথেড্রালই বা কিভাবে পরিচালনা করতে হয়।

তার বক্তব্য মতে, ক্যাথেড্রালটির কাঠামোটি অনন্য নকশায় নির্মিত হয়েছে। কেননা ক্যাথেড্রালটির উপরে যে অষ্টাভূজ আকৃতির গম্বুজ রয়েছে তা বাইবেলের ওল্ড টেস্টামেন্টে বর্ণিত একটি তাঁবুর মতো স্থাপিত। তাছাড়া, খ্রিস্ট ধর্মের লাকি নাম্বার হিসেবেও এই ৮ সংখ্যাটি বিবেচিত হয়ে থাকে বলে সে জানায়।

সাজি থমসন বলেছে, এই ক্যাথেড্রালটির উদ্ভব হয় মূলত বাহরাইনের বাদশাহ হামাদ আল খলিফা আজ থেকে ২০১৪ সালে যখন বাহরাইনের ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের ক্যাথেড্রাল নির্মাণের জন্য বাহরাইনের ভূমি থেকে একটি প্লট বরাদ্দ দিয়েছিল তখন থেকে।

পরবর্তীতে ভ্যাটিকান সফরে পোপ ফ্রান্সিসের সাথে সাক্ষাতকালে সে পোপকে বাহরাইনের ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের পাশে থাকার ও সহযোগিতার ব্যাপারে আশ্বস্ত করে বরাদ্দকৃত প্লটে বর্তমানে নির্মিত ক্যাথেড্রালটির ৩ ফুট উচ্চতার একটি মডেল দেখিয়ে তার কাঠামো, অবস্থা ও আশপাশ কেমন হবে বা তার সার্বিক পরিকল্পনার বিবরণ দিয়েছিল।

অপরদিকে, উপসাগরীয় ছোট মুসলিম রাষ্ট্র বাহরাইন, যেখানে কিনা ১ লক্ষ ৪০ হাজার ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বীর ধারণক্ষমতা সম্পন্ন একটি চার্চ রয়েছে। সেখানে আবার আওয়ার লেডি অফ এরাবিয়া নামে উপমহাসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে সর্ববৃহৎ ক্যাথেড্রাল প্রতিষ্ঠা করা কতটা যুক্তিপূর্ণ তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন।

উল্লেখ্য, তেলের খনি ও তেল শোধনাগারকে কেন্দ্র করে বহিরাগত কর্মীদের আবাসস্থলে পরিণত হয় বাহরাইনের রাজধানীর অদূরে অবস্থিত ছোট আওয়ালী দ্বীপ। উইকিপিডিয়ায় প্রকাশিত ২০১৯ সালের তথ্য অনুযায়ী ছোট আওয়ালী দ্বীপটির জনসংখ্যা মাত্র ১৭৬৯ জন। মুসলিম প্রধান রাষ্ট্রের অত্যন্ত ছোট একটি দ্বীপে ৯ হাজার বর্গ মিটার জায়গায় নির্মিত ক্যাথলিক ক্যাথেড্রালটি কি অতীব জরুরী?

কেনোনা বাহরাইনের সকল খ্রিস্টান যাদের সবাই আবার ক্যাথলিক, তাদের পরিমাণ হল দেশটির মোট জনসংখ্যার মাত্র ১০ শতাংশ। মোট জনসংখ্যার মাত্র ১০ শতাংশ নাগরিকের জন্য যেখানে, ১ লক্ষ ৪০ হাজার জন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন একটি বিশাল ক্যাথেড্রাল আগে থেকেই আছে, সেখানে আবার ক্যাথেড্রাল নির্মাণের জন্য ৯ হাজার স্কয়ার মিটারের জায়গা দান ও ক্যাথেড্রাল নির্মাণ বাহরাইনের পদক্ষেপকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

তাছাড়া, গ্রেট ব্রিটেনের লন্ডনের মতো বিশাল শহরে পর্যন্ত এমন বিশালাকার কোনো গীর্জাই নির্মাণ করা হয়নি!

সূত্র: আরব নিউজ

১টি মন্তব্য

Leave a Reply to গ্লুকোমা গ্লুটামিক প্রতিউত্তর বাতিল করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধচালের বাড়তি দরে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস
পরবর্তী নিবন্ধবাংলাদেশে মুক্তি পাচ্ছে ‘কমান্ডো’ নামক ইসলাম বিদ্বেষী সিনেমা