চাঁদপুর জেলার পাইকপাড়া গ্রামে, বায়তুল মামুর মসজিদের ইমাম মাওলানা আবুল কালাম আজাদকে ‘জঙ্গি’ তকমা দিয়ে অশ্লীল গালাগাল করে মারধর করেছে হিংস্র পুলিশ মুস্তাফিজুর রহমান দুলাল।
এলাকার সবাই ইমাম সাহেবকে প্রচন্ড ভালবাসেন এবং শ্রদ্ধা করেন। কিন্তু পুলিশে চাকরি করা মুস্তাফিজুর রহমান দুলাল নামে এক অশিক্ষিত, বর্বর তার সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে হুজুরের উপর হামলা চালায়, প্রতিবাদে এলাকার কিছু গণ্যমান্য লোক তার এহেন কর্মকান্ডের কারণ জানতে চাওয়ায় তাদের উপর ও হামলা করা হয়। তাদের আক্রমণে কয়েকজন খুবই গুরুতর আহত হয়েছে আর কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এক ভিডিও বার্তায় ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নির্যাতনের শিকার বায়তুল মামুর মসজিদের ইমাম মাওলানা আবুল কালাম আজাদ।
মুস্তাফিজুর রহমান দুলাল
নির্যাতনকারী উগ্র পুলিশটির নাম মুস্তাফিজুর রহমান দুলাল।
স্বীকারুক্তিমূলক ভিডিওবার্তায় ইমাম সাহেব বলেন, ‘আমি জুমা পড়ানোর পর যার মেয়ের বিয়ে, সে আমাকে বিয়ে পড়াতে যেতে বললো। আমি গেলাম। বাড়িতে ঢুকতে যাব, এমন সময় আমার পথ আটকে দাঁড়ালো দুলাল। সে পুলিশে চাকরি করে। সে আমাকে বললো, ‘তুই নাকি চান্দা করোস? আমি বললাম, কিসের চান্দা। তখন বুঝতে পারলাম, সকালে আমি বেতন তুলতে গিয়েছিলাম। মসজিদের বেতন যিনি তুলেন, সকালে আমাকে বললেন, আজ শুক্রবার, মকতব নেই, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গণশিক্ষা কার্যক্রম নেই, তাই আমার সঙ্গে চলেন। আমি তার সঙ্গে গিয়েছিলাম।’
ইমাম সাহেব আরও বলেন, দুলাল আমাকে বললো, তুই আমাকে চিনিস? আমি পুলিশে চাকরি করি। মাদারচো!, তুই জঙ্গী।’ আমি বললাম, কী বলছেন এসব? প্রমাণ থাকলে থানায় নিয়ে যান। এরপর সে আমাকে এলোপাথাড়ি ঘুষি থাপ্পর দিতে লাগলো। আমার কানে দুটি থাপ্পর দিয়েছে, কানে শুনতে পাচ্ছি না।
ভিডিওতে বয়ান দেয়ার সময় ইমাম সাহেব কান্না করছিলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, প্রতিবাদকারী গ্রামবাসীর নাকে মুখে রক্ত। সাদা দাড়ি ও পাঞ্জাবিতেও রক্ত।
ঘটনার সূত্রপাত আজ থেকে প্রায় ১ বছর আগে।মসজিদের কমিটিতে অনেকটা অঘোষিতভাবে একটা অশিক্ষিত, বর্বর লোক স্থান করে নিয়েছে। ধর্মীয় কোন জ্ঞান না থাকা সত্র্বে ও সে মসজিদের সভাপতি হয়ে গিয়েছে।তারপর থেকে মসজিদের ইমাম সাহেব এবং অন্যন্য কমিটির মেম্বারদের সাথে তার স্বেচ্ছাচারীতা স্পষ্ট হয়ে উঠে।
এমতাবস্থায় কমিটির সকলে তার উপর অনাস্থা জ্ঞাপন করে।স্থানীয় মানুষদের প্রতিবাদের মুখে এলাকার চেয়ারম্যান এসে সকলের সম্মতিতে উনাকে সভাপতি পদ থেকে বাদ দেওয়া হয়। তারপর থেকে মসজিদের কমিটি এবং ইমাম সাহেব তার শত্রু হয়ে যায়।
তারপর আজ তার ভাতিজির বিয়েতে মসজিদের ইমামকে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে দাওয়াত দিয়ে ’জঙ্গী’ তকমা দিয়ে ইমাম সাহেবকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ এবং চড় থাপ্পর দিয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা বাবার কারণে পুলিশে চাকরী পেয়ে সে যেন বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল।গর্ব করে বলতো কেউ নাকি তার বা! ও ছিড়তে পারবে না।যখন তখন কারো গায়ে হাত তুলতে সে দ্বিধা করতো না।
তার বেপরোয়া আচরণের জন্য এলাকায় মানুষও তাকে খুব ভয় পেতো।নিয়মিত এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। তার ভয়ে কেউ কোন দিন মুখ খুলে নাই। কিন্তু ইমাম সাহেবের গায়ে হাত দেওয়ার মানুষ আর চুপ করে থাকতে পারে নাই। প্রতিবাদ করায় তাদের উপরও সে তার সন্ত্রাসী বাহিনী লেলিয়ে দিয়ে তাদের গুরুতর জখম করেছে।।
এমতাবস্থায় এলাকাবাসী তার এহেন কর্মকান্ডের বিচার চেয়েছে। তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে তার সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের লাগাম টেনে ধরার ও দাবি জানিয়েছেন।
জনতার জিজ্ঞাসা পুলিশে চাকরী করে সাধারণ মানুষের গায়ে অন্যায়ভাবে হাত তুলার সাহস সে পেলো কোথায়?