জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে আরও একজন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাঁর নাম কাজী ইয়াদ। তিনি কর অঞ্চল ১৪–এর প্রধান সহকারী হিসেবে কর্মরত। ২৬ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ঠিক করেছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬–এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান এই দিন ঠিক করেন। এই সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে মামলার ৩৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে।
এ মামলায় জব্দ তালিকার সাক্ষী কাজী ইয়াদ আদালতকে বলেন, ২০১৯ সালের ৯ জুলাই দুদকের কর্মকর্তা মঞ্জুর মোর্শেদের চাহিদা অনুযায়ী তিনি কাগজপত্র উপস্থাপন করেন। সেই কাগজপত্র তিনি (মঞ্জুর) জব্দ করেন। ওই সব কাগজপত্র ছিল মিজানুর রহমানের আয়কর বিবরণীর দলিল।
অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায় যে ডিআইজি মিজান তাঁর অপরাধলব্ধ অর্থ দিয়ে নিকটাত্মীয়দের নামে সম্পদ কিনে তা কৌশলে নিজে ভোগদখল করেন।
এর আগে এই মামলার বাদী দুদক পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদ আদালতকে বলেন, দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ডিআইজি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়। প্রাথমিক অনুসন্ধানে দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়ার পর তাঁকে সম্পদের হিসাব দেওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়। তিনি ২০১৮ সালের ১ আগস্ট দুদকে সম্পদের হিসাব জমা দেন। সেখানে তিনি মোট ১ কোটি ১০ লাখ ৪২ হাজার ২৬০ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ৪৬ লাখ ২৬ হাজার ৭৫২ টাকার অস্থাবর সম্পদের হিসাব দেখান। জমা দেওয়া সম্পদের হিসাব যাচাই করার জন্য ২০১৮ সালের ১৩ জুন তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।
অনুসন্ধানে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায় যে ডিআইজি মিজান তাঁর অপরাধলব্ধ অর্থ দিয়ে নিকটাত্মীয়দের নামে সম্পদ কিনে তা কৌশলে নিজে ভোগদখল করেন।
পরে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১৯ সালের ২৪ জুন মিজানসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদ।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন মিজানের স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না, তাঁর ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান এবং ভাগনে মাহমুদুল হাসান। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ২৮ লাখ ৬৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ৩ কোটি ৭ লাখ ৫ হাজার টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়। মামলাটি তদন্ত করে গত বছরের ৩০ জানুয়ারি ডিআইজি মিজানসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
৪০ লাখ টাকা ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে মিজানের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলার বিচার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪–এ চলমান। মামলার অন্য আসামি হলে দুদকের বরখাস্ত হওয়া পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির। ওই মামলার বাদী দুদক পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা আদালতে বলেছিলেন, আসামি খন্দকার এনামুল বাছির দুদকের কর্মকর্তা হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ডিআইজি মিজানুর রহমানকে অবৈধ সুবিধা দেওয়ার জন্য ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেন। প্রথম আলো