মিয়ানমারে ফেসবুকসহ অন্যান্য মেসেজিং সার্ভিস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার মিয়ানমারের সব মোবাইল অপারেটর ও ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ফেসবুক বন্ধের নির্দেশ দেয় পরিবহন ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়। আজ বৃহস্পতিবার তা কার্যকর হয়।
মিয়ানমারের যোগাযোগ ও তথ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশটিতে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ফেসবুক বন্ধ থাকবে।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, অনলাইনে অ্যাক্টিভিস্টদের কার্যক্রম বন্ধ করতেই এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অনেকেই মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের বিরোধিতা করে ফেসবুকে সরব হয়েছেন। দেশটির বেশিরভাগ মানুষই ফেসবুক ব্যবহার করেন। ব্যবসা-বাণিজ্য ও সরকারি পর্যায়ের কর্মকর্তারাও ফেসবুকে সক্রিয় আছেন।
গতকাল বুধবার রাতেও ইয়াঙ্গুন ও অন্যান্য শহরের বাসিন্দারা সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বাড়ির বারান্দায় দাঁড়িয়ে হাঁড়ি ও কলসি বাজিয়ে প্রতিবাদ জানান। অনেকেই রাস্তায় নেমে গাড়ির হর্ন বাজিয়ে প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো ব্যতিক্রমধর্মী এই প্রতিবাদ হয়। মিয়ানমারের মূলধারার গণমাধ্যমগুলোতে এ প্রতিবাদের খবর না আসলেও বিভিন্ন শহরে প্রতিবাদের ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর নজরে আসে।
এছাড়াও সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে মিয়ানমারের ৩০টি শহরের ৭০টি হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এটিও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
রয়টার্স জানায়, ফেসবুক বন্ধ ঘোষণার পরেও কিছু মানুষ এখনো ফেসবুকে ঢুকতে পারছেন। তবে প্ল্যাটফর্মটির গতি কমে গেছে। তরুণদের মধ্যে অনেকেই ভিপিএন ব্যবহার করে ফেসবুকে ঢুকছেন।
ফেসবুকের মুখপাত্র অ্যান্ডি স্টোন বলেন, মিয়ানমারকে ফেসবুক বন্ধ না করার জন্য অনুরোধ করেছি। এটি বন্ধ হলে দেশটির নাগরিকরা তাদের পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদান প্রদানে সমস্যায় পড়বেন।
মিয়ানমারের বেশিরভাগ মানুষই ফেসবুক ব্যবহার করেন। ব্যবসা-বাণিজ্য ও সরকারি পর্যায়ের কর্মকর্তারাও ফেসবুকে সক্রিয়। যোগাযোগের প্রাথমিক মাধ্যম হিসেবে দেশটিতে ব্যবহৃত হয়।
উল্লেখ্য, গত সোমবার মিয়ানমারের নবনির্বাচিত পার্লামেন্টের প্রথম অধিবেশন বসার কথা ছিল। তার কয়েক ঘণ্টা আগে দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে। মিয়ানমারের ক্ষমতা এখন সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের হাতে। বাণিজ্য, স্বাস্থ্য, স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্রসহ ১১ জন মন্ত্রী ও উপমন্ত্রীকে বদলানো হয়েছে।মিয়ানমারে নতুন নির্বাচন কমিশন ও পুলিশ প্রধান নিয়োগ করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। আমাদের সময়