সব হারিয়ে ফিলিস্তিনি শিশুর প্রশ্ন ‘আমি এখন কী করব?

4
1652
সব হারিয়ে ফিলিস্তিনি শিশুর প্রশ্ন ‘আমি এখন কী করব?

টানা সাত দিন ধরে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় বিমান ও কামান হামলা চালাচ্ছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা বলছে, বর্বরোচিত এসব হামলায় এখন পর্যন্ত ১৮৮ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে ৫৫ শিশু ও ৩৩ জন নারী।

এতো গেল নিহতের সংখ্যা। আহত শিশুর সংখ্যাও কম নয়। আবার আহত না হলেও সাত দিনের হামলায় অনেক শিশু এতিম হয়েছে। বা-মা ও স্বজন হারিয়েছে তারা। ইসরাইলি বর্বরতায় ফিলিস্তিনি শিশুদের করুণ অবস্থা বর্ণনাতীত।

সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে স্বজন হারানো এমনই এক শিশুর করুণ আর্তনাত।

ভিডিওতে ওই শিশুর কান্না আর অসহায়ত্ব একদিনেই দেখেছে ৪০ লাখের বেশি মানুষ। পাষাণ হৃদয়ও গলে যাবে সেই শিশুর আকুতি শুনে।

মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই তাদের টুইটার অ্যাকাউন্টে ভিডিওটি পোস্ট করেছে। ক্যাপশনে লিখেছে শিশুটির আর্তনাত – আমি জানি না এখন আমি কি করব।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, দশ বছরের ওই শিশুর নাম নাদাইন আবদেল তাইফ। ইসরায়েলি হামলায় বিধ্বস্ত প্রতিবেশী বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে শিশুটি জানে না জীবনের বাকিটা সময় কীভাবে কাটাবে!ওই হামলায় প্রতিবেশী ৮ শিশু ও ২ নারী নিহত হয়েছে। শিশুটি এখন স্বজন হারিয়ে একেবারেই একা।

ভিডিওতে দেখা গেছে, ১০ বছরের মেয়েটির দুচোখ কান্নার পানিতে ভরে আছে।

ইসরাইলি বাহিনীর গোলায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া প্রতিবেশীর বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে তাইফ নামের মেয়েটি বলছে, ‘আমি এখন কী করব? কী করে সামলাব? আমার তো মোটে ১০ বছর বয়স। এসব আর সহ্য করতে পারছি না!আমি সবসময়ই অসুস্থ থাকি, কিছুই করতে পারি না। আমি আমার দেশবাসীকে সাহায্য করতে ডাক্তার হতে বা কিছু একটা করতে চাই। কিন্তু কী করব, আমি তো একজন শিশু! আমার ভয় করছে। আমার নিজের লোকজনের জন্য আমি যে কোনো কিছু করব! কিন্তু কী করতে হবে, সেটা জানি না।’

ভিডিওতে ইসরায়েলি হামলার কারণ জানতে চেয়ে চোখের জলে ভাসিয়েছে তাইফ বলেছে, আমরা কী করেছি? এটাই কি প্রাপ্য আমাদের?

উল্লেখ্য, ইসরাইলি বাহিনীর এবারের হামলায় ফিলিস্তিনের নিষ্পাপ শিশুরাই বেশি মারা পড়ছে। গতকাল (রোববার) সপ্তম দিনের হামলায় ১৩ শিশুসহ অন্তত ৩৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। চলমান সংঘাতে একদিনের হামলায় এত বেশি সংখ্যক মৃত্যু এই প্রথম।

ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র আভিচায় আদ্রায়ির টুইটারে গত শুক্রবার দেওয়া এক তথ্য মতে, এদিন রাতে ৪০ মিনিটে গাজার ১৫০টি লক্ষ্যবস্তুতে ৪৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ইসরাইল।

ওই হামলায় নিজেদের ঘরেই অবস্থান কালে মারা যান তিন শিশুসহ এক মা। পরে ধ্বংসস্তূপ থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। সব মিলিয়ে ১৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হন ৪০ মিনিটের ওই হামলায়।

এসব হামলার ভয়ে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছেন হাজার হাজার পরিবার। তবুও প্রাণে রক্ষা পাচ্ছে না। ধ্বংসস্তুপের নিচে পাওয়া যাচ্ছে শিশুদের লাশ।

4 মন্তব্যসমূহ

  1. প্রিয় ভাই আল্লাহ আমাদের জিহাদ করার কথা কেন বলেছেন ? যদি দোয়ার মধ্যে আল্লাহর রহমত আসত তাহলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে জিহাদ করতে হত না। ধন্যবাদ।

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধইসরায়েলি আগ্রাসনে বাতাস ভারী হয়ে উঠছে ফিলিস্তিনি মায়েদের আর্তনাদে
পরবর্তী নিবন্ধহেফাজত ইসলামের কথা বলে গ্রেপ্তার আরও ৩