আজ থেকে বিশ বছর পূর্বে দখলদার বিদেশী শক্তি জুলুম-নির্যাতন, বর্বরতা-হঠকারিতা ও ক্রমাগত প্রোপাগাণ্ডার মাধ্যমে এমন এক ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল যখন না কোনো পিপিলিকা স্বাধীনভাবে চলতে পারত, আর না মুক্ত আকাশে কোনো পাখি নিশ্চিন্তে উড়তে পারতো!
কিন্তু আমেরিকার বাহ্যিক শক্তিমত্তার উপর বিশ্বাস স্থাপনকারী লোকেরা আগ্রাসী শত্রুর চেয়েও কয়েক ধাপ এগিয়ে ছিলো । তাদের শতভাগ বিশ্বাস ছিলো, আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়া পাহাড়ের গায়ে মাথা ঠুকরে আত্মহত্যার নামান্তর!
কিন্তু কাপুরুষদের পথ অবলম্বন না করে আগ্রাসী শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করাকে যারা নিজেদের ধর্মীয় দায়িত্ব হিসেবে গ্রহণ করেছিলো, তারা জানত , প্রকৃত শক্তি আমেরিকার নয়;বরং মহান ক্ষমতাধর আল্লাহ তা’আলার। আল্লাহ তা’আলার এই বাণীর উপর তাদের পূর্ণ বিশ্বাস ছিলো
وَكَانَ حَقًّا عَلَيْنَا نَصْرُ الْمُؤْمِنِين
আর মুমিনদেরকে সাহায্য করা আমার দায়িত্ব (সূরা আর রূম-৪৭)
এই মুষ্টিমেয় জানবায মুজাহিদ যদিও শত্রুর মোকাবেলায় নিরস্ত্র ছিলো, কিন্তু আল্লাহ তা’আলার এই প্রতিশ্রুতির উপর তাদের পূর্ণ আস্থা ছিলো যে, তিনি তাদেরকে অবশ্যই বিজয়ী করবেন।
তাদের অগাধ বিশ্বাস ছিলো, আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে আশানুরূপ সাফল্য দান করবেন।
وما النصر إلا من عند الله
বিজয় দেবার মালিক তো একমাত্র তিনিই!(সূরা আনফাল-১০)
স্বাধীনতাকামী মুজাহিদদের সীমাহীন ত্যাগ-তিতিক্ষার বদৌলতে বর্তমানে আফগান জনগণ যে অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে তা জিহাদের মত মহান ইবাদাত এবং মুজাহিদদের কুরবানির ফসল। বর্তমানে যে অভাবনীয় বিজয়ের ধারাবাহিকতা চলছে এবং ক্রুসেডারদের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দেশীয় সৈনিকদের একের পর এক পুতুল সরকারের পক্ষত্যাগ ও মুজাহিদদের সামনে আত্মসমর্পণের যে ধারা চালু হয়েছে তা এই মহাসত্যকে দ্বিতীয়বার স্মরণ করিয়ে দেয় যে, আল্লাহ তা’আলার সাহায্য আমেরিকা এবং ন্যাটো বাহিনীর বাহ্যিক শক্তির চেয়ে হাজারো গুণ বেশি। যদি কারো সুস্থ বিবেক থাকে তাহলে সে নিশ্চয় বুঝতে পারবে যে, আল্লাহ তা’আলা মুমিন বান্দাদের সাথে কৃত অঙ্গীকার পূরণ করেছেন!
যুদ্ধকবলিত আফগান জাতি অচিরেই পূর্ণ স্বাধীনতার মহা নিয়ামত দ্বারা সৌভাগ্যবান হতে চলেছে এবং সম্পূর্ণ নিরাপদ ও সুখময় ভবিষ্যতের সুসংবাদ লাভের প্রহর গুনছে।
নিঃসন্দেহে এটা আল্লাহ তা’আলার অনেক বড় এক নিয়ামত। এই নিয়ামতের জোড়ালো দাবি হলো, মহান আল্লাহ তা’আলার দেওয়া এই নিয়ামতের শুকরিয়া জ্ঞাপন করা। কারণ তিনি ইরশাদ করেছেন:
لَئِن شَكَرْتُمْ لَأَزِيدَنَّكُمْ ۖ وَلَئِن كَفَرْتُمْ إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيدٌ
যদি তোমরা( আমার নেয়ামতের) কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো, তাহলে অবশ্যই আমি তা বাড়িয়ে দিবো(সূরা ইবরাহীম-০৭)
কৃতজ্ঞতা আদায়ের প্রায়োগিক পদ্ধতি এটাই যে, আফগান জনগণ ও মুজাহিদগণ এক সাথে মিলে আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ উন্নতি ও নিরাপত্তার স্বার্থে কাজ করবে। যেন সকলে মিলে একটি শক্তিশালী ইসলামি ইমারাত প্রতিষ্ঠার ভিত্তিস্থাপনের কাজ আঞ্জাম দিতে পারে।
পক্ষান্তরে ক্ষমতার লালসায় বা স্বার্থসিদ্ধির লক্ষ্যে এই মহা নেয়ামতের অবমূল্যায়ন করে এই যুদ্ধবিধ্বস্ত জাতিকে পুনরায় বহিরাগত বা আভ্যন্তরীণ কোন শত্রুর শিকার বানানো নিঃসন্দেহে এই মহা নেয়ামতের না-শুকরি হবে।
অনুবাদক: আব্দুল্লাহ মুনতাসির
الحمدلله حمداكثيرا