সাহেল এবং আফগান মুজাহিদদের বিজয়ে আল-কায়েদার অভিনন্দন বার্তা- আমীর JNIM

    4
    2501
    সাহেল এবং আফগান মুজাহিদদের বিজয়ে আল-কায়েদার অভিনন্দন বার্তা- আমীর JNIM

    আল-কায়েদা ইসলামিক মাগরিবের সক্রিয় শাখা জামা’য়াত নুসরাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমীনের (JNIM) প্রথম সারির একজন আমীর মুহতারাম শাইখ ইয়াদ আল-ঘালি (হাফিজাহুল্লাহ্) খোরাসান ও সাহেল অঞ্চলের মুজাহিদদের ধারাবাহিক সাফল্যে শুভেচ্ছা জানিয়ে একটি বার্তা প্রকাশ করেছেন। সেই সাথে আমেরিকা, ফ্রান্স, ইসরাইল ও রাশিয়া অর্থাৎ পুরো ক্রুসেডার ও যায়োনিস্ট জোটের বিরুদ্ধে মুসলিমদের একযোগে আক্রমণ চালানোর আহবান জানান তিনি।

    গত ১০ আগস্ট JNIM এর মিডিয়া বিভাগ আয-যাল্লাকা ফাউন্ডেশন থেকে “ألا إن نصر الله قريب” ( নিশ্চই আল্লাহর সাহায্য সর্বদা নিকটবর্তী) শিরোনামে দীর্ঘ ১৪ মিনিটের এই বার্তাটি প্রকাশ করা হয়।

    IMG-20210812-151233-779

    আমীরে মুহতারাম শাইখ ইয়াদ আল-ঘালি (হাঃ) উক্ত বার্তায় প্রথমে যুদ্ধের সম্মুখ কাতারের মুজাহিদ ও জিহাদের সাথে সম্পৃক্ত সকলকে প্রশংসা ও অভিনন্দন জানান। তিনি উল্লেখ করেন, জিহাদের ক্ষেত্র ও ভূমি এখন বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মুজাহিদ, মুহাজির ও সমর্থক ভাইদের সংখ্যাও আগে থেকে অনেক বেড়েছে। তিনি আরো বলেন, দিনের পর দিন ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ইসলামি প্রতিরোধ শক্তি আরো শক্তিশালী হচ্ছে। মানুষ এখন ফ্রান্সের ক্রুসেড আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ক্রমেই সোচ্চার হয়ে উঠছেন এবং ফ্রান্স ও তার দোসরদের মুসলিম ভূমি থেকে সমূলে উচ্ছেদের জন্য তৎপর হয়ে উঠছেন।

    আমীরে মুহতারাম সাহেল অঞ্চলে ক্রুসেডার ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক যুদ্ধাভিযান পরিচালাকারী মুজাহিদদেরও অভিবাদন জানান। তিনি উল্লেখ করেন, ফ্রান্সের অপারেশন বারখান এর উদ্দেশ্যগুলো পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে এবং এই অঞ্চলে তাদের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অপরদিকে তাদের এসব উদ্দেশ্য জিহাদকে থামিয়ে দেবার পরিবর্তে, জিহাদের ভৌগলিক পরিসরকে বিস্তৃত করেছে, যা মু’মিনদের সংকল্পকে আরো দৃঢ় করেছে।

    মুহতারাম শাইখ “JNIM” এর মুজাহিদদের হাতে ফ্রান্সের নাগরিক সোফি পেট্রোনিনের (মারইয়াম) বন্দি হওয়া ও মুজাহিদদের সফল দাওয়াহ এর ফলে তার ইসলাম কবুল করার ঘটনাকে বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, মারইয়ামের ইসলাম কবুল করা ছিল ফ্রান্সের দাম্ভিকতা ও প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রনের গালে চপেটাঘাতের মত। ফ্রান্সের কুলাঙ্গার প্রেসিডেন্ট চেয়েছিল ইসলামকে দূর্বল দ্বীন হিসেবে উপস্থাপন করতে, কিন্তু তারই দেশের নাগরিক ইসলাম কবুল করেছে, তাও আবার মুজাহিদদের হাতে।

    প্রসঙ্গক্রমে অভিশপ্ত প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রনকে দেয়া মারইয়াম প্যাট্রনিন এর বার্তার সারাংশ এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে। তিনি তার বার্তায় বলেন,

    “আমি মুসলিমদের হাতে বন্দি ছিলাম সত্য, কিন্তু তাঁরা কখনোই আমার দিকে হাত বাড়াননি। আমার প্রতি তাঁদের আচরণ ছিল হৃদয়-নিংড়ানো এবং সম্মানজনক। তাঁরা আমাকে নিয়মিত খাবার ও পানি দিতেন, যদিও তাঁদের নিজেদেরই খাবারের তেমন কিছুই ছিল না। তাঁরা আমার গোপনীয়তাকেও রক্ষা করেছেন।

    কেউ আমাকে শারীরিক ও মৌখিক নির্যাতন করেননি, আমার ধর্মকে কটাক্ষ করেননি। যিশু (ঈসা আঃ) ও মরিয়ম (আঃ) কে তারা কটাক্ষ করেননি, অথচ আপনি (ম্যাক্রন) মুহাম্মাদ (সাঃ) কে ব্যাঙ্গ করেন। তারা আমার উপর ইসলামকে চাপিয়ে দেননি, তাঁদের নীতি ও আচরণই আমার কাছে ইসলামের সৌন্দর্য তুলে ধরেছে”।

    ১৪ মিনিটের বার্তায় শায়েখ ইয়াদ আল-ঘালি এরপর বলেন, আমরা এক উম্মাহ এবং বিশ্ব কুফ্ফার শক্তির বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধও এক”। আর এই যুদ্ধ এখন সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। আমাদের একজন আমির বা একজন আলেমকে শহিদ করার দ্বারা এই জিহাদ শেষ হয়ে যাবে না। বরং এই যুদ্ধ সমগ্র বিশ্বে শরিয়াহ্’র শাসন বাস্তবায়ন হওয়ার আগ পর্যন্ত চলতে থাকবে।

    তিনি আরও বলেন- বছরের পর বছর ধরে কার্যকলাপ সত্ত্বেও ফ্রান্স এই অঞ্চলে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। বরং ফ্রান্স যখন এই অঞ্চলে আগ্রাসন চালিয়েছিল, তখন একটি অভ্যুত্থান হয়েছিল। আর এখন যখন ফ্রান্স সেনা প্রত্যাহার করতে শুরু করেছে তখনও এই অঞ্চলে একটি অভ্যুত্থান ঘটেছ। “তাঁর কথায়, তিনি রেখাপাত করেছেন যে, ফ্রান্স মালিতে মুজাহিদদের বিরুদ্ধে যে স্থানীয় কর্তৃত্ব চেয়েছিল তা প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি।

    শেষ পর্যন্ত বিদেশী শক্তি তাদের স্থানীয় অংশীদারদের পরিত্যাগ করছে। ফ্রান্স এখন স্থানীয় সরকারগুলোকে মুজাহিদদের জালানো আগুনে ফেলে সরে যাচ্ছে।

    IMG-20210810-130038-481

    বার্তায় তিনি আফগান তালিবান মুজাহিদদের উদ্দেশ্যে বলেন- অবশ্যই আল্লাহর সাহায্য সর্বদা নিকটবর্তী। আগ্রাসী আমেরিকান বাহিনী ও তাদের দোসরদের আফগান ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায় আমি ইমারতে ইসলাম আফগানিস্তানের প্রতি প্রাণভরে প্রশংসা ও অভিবাদন ব্যক্ত করছি। মুহাজির ও আনসার ভাইদের টানা দুই দশক সবরের ফলস্বরুপ ক্রুসেডারদের ঐতিহাসিক এই সেনা প্রত্যাহার ও তাদের মুরতাদ দোসরদের শোচনীয় পরাজয় আল্লাহর সন্তুষ্টির কারণেই সম্ভব হয়েছে। আল্লাহর কাছে আমার দুআ, তিনি যেন তাঁদের ও আমাদের তাঁর সত্য দ্বীনের উপর অটল থাকার এবং তাঁর রজ্জুকে শক্ত করে ধরে থাকার তৌফিক দান করেন। (আমীন)

    শাইখ তার বক্তৃতায় ফিলিস্তিনের কথাও উল্লেখ করেন। তিনি মে মাসে গাজা উপত্যকায় ইহুদী বিরুধী যুদ্ধে যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের প্রতি আল্লাহর রহম ও শাহাদাত কামনা করেন। তিনি বলেছিলেন যে, ইসলামী বিশ্ব “বিশ্বব্যাপী কুফ্ফার বাহিনীর বিরুদ্ধে এক উম্মাহ হিসাবে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে”।

    ফ্রান্সের উপর দৃষ্টিপাত করে শায়েখ আবারো বলেন- সারা বিশ্বে অবস্থানরত আমরা মুসলিম ভাইয়েরা, ফ্রান্স আল্লাহর আইনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা করেছে, মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে কটাক্ষ করেছে এবং মুসলিমদের ভূমিতে আক্রমণ করেছে, এসবের মাধ্যমে ফ্রান্স তাদের উপর আল্লাহর অভিসম্পাত ও লা’নতের দরজাকে খুলে দিয়েছে এবং নিজেদের ধ্বংস ডেকে এনেছে। ফলে আল্লাহর দৃশ্যমান এবং অদৃশ্য সেনাবাহিনী ফ্রান্সকে লক্ষ্য করছে।

    মুহতারাম শাইখ শাতিমুর রাসূল স্যামুয়েল প্যাটির শিরশ্ছেদ এর ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন এবং এই ঘটনাকে সকল শাতিমদের শাস্তির দৃষ্টান্ত হিসেবে অভিহিত করেন।

    কারাগারে বন্দি মুজাহিদ ভাইদের আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, মুজাহিদ ভাইয়েরা আপনাদের মুক্ত করতে এবং আপনাদেরকে প্রিয়জনের নিকট ফিরিয়ে দিতে চেষ্টার কোনো কমতি রাখবেন না, ইনশাআল্লাহ্।

    সবশেষে শাইখ বক্তব্যের সমাপ্তি টানেন কুফফার জোটের বিরুদ্ধে সরাসরি সংঘর্ষে যাবার আহবান করে। তিনি বলেন, অতএব সকল জাতি, দেশ, গোত্র এবং বর্ণের মু’মিন ভাইয়েরা! আপনারা ক্রুসেডার ফ্রান্স এবং তার সমর্থিত সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করুন। অভিশপ্ত ইহুদি, ক্রুসেডার ও তাদের মুরতাদ আঞ্চলিক দোসরদের বিরুদ্ধে জেগে উঠুন।

    হে আল্লাহ! আমেরিকা, ফ্রান্স, ইসরাইল, রাশিয়া এবং আরব ও অনারবের সকল যালিমের বিরুদ্ধে আপনার আযাবকে শক্তিশালী করুন। (আমীন)

    4 মন্তব্যসমূহ

    1. আমিন, ছুম্মা আমিন।
      আল্লাহ, আপনি আমাদের অন্তরে জিহাদের মুহাব্বত পয়দা করে দিন। আমাকে ও সকল মুসলিমকে জিহাদে অংশ গ্রহণের তাউফিক দান করুন। এবং আমাদের ঐক্যবদ্ধ করে দিন। আমিন।

    Leave a Reply to আবদুল্লাহ প্রতিউত্তর বাতিল করুন

    দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
    দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

    পূর্ববর্তী নিবন্ধ‘আপত্তিকর অবস্থায় পেলে ১০০ টাকা জরিমানা ছাড়া পুলিশের কিছু করার নেই’
    পরবর্তী নিবন্ধফটো রিপোর্ট | কুন্দুজ বিজয়ের পর মুজাহিদদের প্রাপ্ত শত শত ট্যাংক ও যানবাহন…