রাজধানীর পল্লবীতে নিরপরাধ এক নারীকে একটি মাদক মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ। ভুক্তভোগী ওই নারীর নাম রাহিমা বেগম। শুধুমাত্র নামের মিল থাকায় পল্লবীর চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী রহিমার পরিবর্তে রাহিমাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রাহিমা নিজেকে নির্দোষ ও নিরপরাধ দাবি করলেও পুলিশ তার কথা শুনেনি। রাহিমাকে রহিমা ভেবেই কোর্টে চালান দেয় পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে গত ১০ সেপ্টেম্বর মিরপুর ১১ নম্বর বাউনিয়াবাঁধ এলাকায়। ওই দিনই কোর্ট থেকে জামিনে বের হন রাহিমা।
সূত্র জানায় ২০১৭ সালের ২৫ মার্চ পল্লবী থানার একটি মাদক মামলায় মৃত আ. মতিনের স্ত্রী রহিমাসহ ৩ জনকে আসমি করা হয়। সেই সময় ওই মামলায় রহিমা কয়েক দফা জেল খাটেন। এরপর জেল থেকে বের হয়ে বাউনিয়াবাঁধ এলাকা ছাড়েন রহিমা। পাশেই মিরপুর ১২ নম্বর বেগুনটিলা বস্তিতে বসবাস করেন। সম্প্রতি ওই মামলার ওয়ারেন্ট বের হলে ১০ সেপ্টেম্বর পল্লবী থানা পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আবুল কালাম আজাদ বাউনিয়াবাঁধ এলাকা থেকে রাহিমাকে গ্রেফতার করেন।
ওই সময় রাহিমা পুলিশের কাছে অনেক আকুতি-মিনতি করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করলেও পুলিশ শুনেনি। জেল খেটে বের হয়ে লোকলজ্জার ভয়ে কাউকে মুখ দেখাননি নিরপরাধ রাহিমা। তিনি এখন সমাজছাড়া।
এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ১৩ সেপ্টেম্বর পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী রাহিমা।
অভিযোগে রাহিমা উল্লেখ করেন, গত ১০ সেপ্টেম্বর পল্লবী থানা পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আবুল কালাম আজাদ সকাল ১১টায় আমার বাউনিয়াবাঁধ ‘সি’ ব্লকের, ১৯নং লাইনের মাথায় আমার বাসায় এসে বলেন থানায় গিয়ে সাক্ষী দিতে হবে, ওসি স্যার ডেকেছেন। আমি বলি কিসের সাক্ষী দেব, আমি তো কিছু জানি না। এ কথা বলার পর আমাকে বলে কিছু না জানলে সমস্যা নাই থানা থেকে চলে আসবি। এ কথা বলে থানায় নিয়ে গিয়ে আমাকে অ্যারেস্ট (গ্রেফতার) করে। পরের দিন আমাকে কোর্টে চালান দেওয়া হয়। পরবর্তীতে আমি কোর্ট থেকে উকিলের (আইনজীবী) মাধ্যমে অস্থায়ী জামিন নেই।
কোর্ট থেকে এসে আমি জানতে পারি ২০১৭ সালের একটি মাদক মামলায় বাউনিয়াবাঁধ কলাবাগানবস্তির লালমতি নামের এক মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার হয়। ওই সময় লালমতি পুলিশের কাছে তার পরিচয় গোপন রেখে তার নিজের নাম রহিমা ও স্বামীর নাম মতি বলেছে। পুলিশ তাকে ওই মামলায় ২ বার গ্রেফতারও করেছে। ওই মামলার ওয়ারেন্ট বের হওয়ার পর রহিমাকে গ্রেফতার না করে পুলিশ আমাকে গ্রেফতার করেছে। এখন আমি সমাজে মুখ দেখাতে পারছি না। এলাকায় সবাই আমাকে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে জেনেছে। কিন্তু আমার নামে থানায় কোনো প্রকার জিডি বা মামলা নেই।