মন্দির বানাতে মুসলিম উচ্ছেদ : বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে নিহত দুই

0
616
মন্দির বানাতে মুসলিম উচ্ছেদ : বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে নিহত দুই

পূর্বভারতের রাজ্য আসাম, যেটি ইন্দো-ব্রিটিশ চক্রান্তে এবং পশ্চিম পাকিস্তানী শিয়াদের নির্লিপ্ততায় মুসলিমদের হাতছাড়া হয়েছিল বলে মনে করেন মুসলিম ইতিহাসবিদরা। সেই আসামেই এবার হিন্দুদের মন্দির বানাতে মুসলিমদেরকে তাদের বাপ-দাদার বসত-ভিটা থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করা হল, প্রতিবাদে রাস্তায় নামলে করা হল গুলি।

ঘটনাটি ঘটেছে আসাম রাজ্যের দরং জেলায়; ধলপুর গ্রামে একটি প্রাচীন শিবমন্দিরকে অনেক বড় আকারে গড়ে তোলার জন্য গত কয়েক মাস ধরেই আসাম সরকার সেখানে দফায় দফায় উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে। আর বৃহস্পতিবার সেই আশ্রয়চ্যুতরা তাদের উচ্ছেদের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করলে হিন্দুত্ববাদী পুলিশ তাতে গুলি চালায়। স্থানীয় সাংবাদিকরা পুলিশের গুলিতে অন্তত দু’জনের মৃত্যু ও আরো বেশ কয়েকজনের আহত হওয়ার খবর জানিয়েছেন।

মূলত আসামের দরং জেলার ধলপুর হিলস ও সিপাহঝাড় এলাকায় প্রায় ৭৭ হাজার বিঘা জমি দখল করে বিশাল একটি শিবমন্দির কমপ্লেক্স বানানোর জন্য রাজ্য সরকার সেখানে উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে বেশ কয়েক মাস ধরেই। সেই অভিযানের সবশেষ ধাপে গত সোমবার ওই অঞ্চলের বাসিন্দা প্রায় আট শ’ পরিবারের বেশ কয়েক হাজার মানুষকে তাদের ভিটে থেকে উচ্ছেদ করে সেই জমি খালি করিয়ে দেয়া হয়।
কিন্তু সেই ভিটেমাটি-হারানোরা দাবি করছেন যে, তাদের কাছে সব ধরনের সরকারি নথি ও পরিচয়পত্রই থাকার পরেও কেবল মুসলিম হওয়ার কারণেই তাদেরকে জোড় করে উচ্ছেদ করেছে হিন্দুত্ববাদী সরকার।
স্থানীয় সাংবাদিক দেবব্রত দত্ত জানিয়েছে, উচ্ছেদের বিরুদ্ধে গড়ে উঠা সেলগুলোর ডাকে ধলপুর ১, ২ ও ৩ নম্বর গ্রামের বেশ কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিলেন; সেখানে পুলিশের হামলায় অন্তত ১০ জন ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে আমরা জানতে পারছি। তাদের মধ্যে অন্তত দু’জন নিহত হয়েছেন, একজনের লাশের ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতেও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।

মুসলিম চিন্তাবিদরা বলছেন, আসামে হিন্দুত্ববাদী ভারত ও বিজেপি ইসলাম ও মুসলিম নিশ্চিহ্ন করার যে নীলনকশা ধাপে বাস্তবায়ন করে চলেছে, এই শিবমন্দির নির্মাণের নামে মুসলিম উচ্ছেদ ও হত্যা তারই ধারাবাহিকতা। এনআরসি করার পর যখন ১৯ লাখ লোকের নাম বাদ যায়, তখন সিএএ বিলের অধিনে বাদপড়া হিন্দুদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে সরকার। তাঁর মানে স্পষ্টতই মুসলিমদের নাগরিক অধিকার কেরে নিতেই এই কাজ করেছে তারা। আর নাগরিকত্ব প্রমানে ব্যর্থ হওয়া মুসলিমদের জন্য রাজ্যজুড়ে নির্মাণ করা হচ্ছে চীনের আদলে বিশাল আকারের কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প।
আসামের মুসলিমদের ভাগ্যে যে আসলে কি ঘটতে চলেছে, এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে তা সহজেই অনুমেয়।

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধইব্রাহিমি মসজিদে মুসলিমদের প্রবেশ বন্ধ করে দিল ইসরায়েল
পরবর্তী নিবন্ধমুজাহিদদের প্রতি ইমারতে ইসলামিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সতর্কবার্তা