হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসীদের নিয়োগকৃত রঞ্জন গগৈসহ অন্যান্য বিচারকরা অন্যায়ভাবে মুসলিমদের বাবরি মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির নির্মাণের রায় দিয়েছে। যেখানে এক আল্লাহর তাওহিদের ঘোষণা দেওয়া হত, এক আল্লাহকে সেজদা করা হত, সেখানে শিরকি রাম মন্দির নির্মাণ মুসলিম উম্মাহর অন্তরের রক্তক্ষরণকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে।
অতি সম্প্রতি সামনে এসেছে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের সেই সাবেক বিচারপতি তথা রাজ্যসভার সদস্য রঞ্জন গগৈয়ের আত্মজীবনী। এই আত্মজীবনী সামনে আসার সাথে সাথেই সোশ্যাল সাইটে শুরু হয়েছে সমালোচনা। ঐ আত্মজীবনী থেকে যে ছবি সামনে এসেছে তাতে দেখা গেছে, অযোধ্যার বাবরি মসজিদ রায় দেওয়ার পর ওই সময়কার প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ ও অন্য চার বিচারপতির উদযাপনের ছবি।
গগৈ আত্মজীবনীতে জানিয়েছে, ৯ সেপ্টেম্বর গুরুত্বপূর্ণ ওই মামলার রায় ঘোষণার পর সুপ্রিম কোর্টের সচিব তাঁদের এক নম্বর কোর্টের বাইরে অশোক চক্রের নিচে ফটোসেশনের আয়োজন করেছিল। সন্ধ্যায় তার ডিভিশন বেঞ্চে থাকা অপর চার বিচারপতিকে নিয়ে গিয়েছিলে তাজ মানসিং হোটেলে। সেখানেই তাঁরা প্রথমে চাইনিজ খাবার খেয়েছিল। এরপর সেখানে থাকা সবথেকে দামি মদ বেছে নিয়েছিল পান করার জন্য। গগৈ নিজে সবচেয়ে পুরনো বোতলটি বেছে নেয়।
নিজে পান করার সঙ্গে সঙ্গে বেঞ্চের অপর বিচারপতিদেরও মদ্যপান করিয়েছিল ঐ হিন্দুত্ববাদী বিচারক। গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন ওই সাংবিধানিক বেঞ্চের অপর বিচারপতিরা ছিল বিচারপতি এস এ বোবদে, বিচারপতি অশোক ভূষণ, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি আবদুল নাজির।
উল্লেখ্য, রাম মন্দির মামলার রায় ঘোষণার পরই প্রধান বিচারপতির পদ থেকে অবসর নিয়েছিল গগৈ। তারপর শুরু হয় তাঁর নতুন পথ চলা। হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ তাঁকে রাজ্যসভায় মনোনীত সদস্য হিসেবে নির্বাচিত করে। যদিও গগৈয়ের এই মনোনয়ন নিয়ে দেশজুড়ে প্রবল সমালোচনা শুরু হয়। কারণ রাম মন্দির মামলার অন্যায়ভাবে হিন্দুদের পক্ষে রায় ঘোষণার পুরস্কার হিসেবে গগৈকে রাজ্যসভায় সদস্য করেছে মোদি সরকার।
রাজনৈতিক ভাষ্যকার অধ্যাপক অপূর্বানন্দ বলেছে যে উদযাপন করার পরিবর্তে, রায়টি দেয়ার আগে ব্যক্তিগতভাবে তাদের চিন্তা করা উচিত ছিল। কিভাবে এবং কেন এই রায় দেয়া হয়েছিল এবং কেন তারা এটি এড়াতে পারেনি। তারা কি সত্যিই এটা নিয়ে গর্বিত?
উল্লেখ্য, অনেক গবেষণার তথ্যেে উঠে এসেছিল যে, বাবরি মসজিদের নিচে কোন রাম মন্দির ছিল না, বরং ের নীচে পুরনো মসজিদের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গিয়েছিল, যেটিকে সরকারি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ বলে কাল্পনিক দাবি উত্থাপন করে, আর গগৈ’এর নেতৃত্বাধীন বিচারকদের বেঞ্চ সেই অলিক দাবির পক্ষে রায় দেয়।
অথচ বাব্রি মসজিদের পক্ষে শত শত সাক্ষ্য প্রমাণ থাকা স্বত্বেও এই বিচারপ্রতিরা বৈষম্যমূলক রায় দিয়েছে, যার তীব্র সমালোচনা করেছে সাবেক হিন্দু বিচারপ্রতিরাও।
তারা বলেছে, এ রায় সাক্ষ্য প্রমাণের উপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়নি। হিন্দুত্ববাদী শাসকদের খুশি করতে দেওয়া হয়েছে।
উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা অন্যায়ভাবে বাবরি মসজিদ শহীদ করে দিয়েছিল, এর কোন বিচারও করা হয়নি।
তথ্য সূত্র :
——-
১। Ranjan Gogai: রামমন্দির মামলার রায় দেওয়ার পর মদ পান করেছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি
https://tinyurl.com/4bra6btz
২। বাবরি মসজিদ রায় দেয়ার পর ৫-স্টার খানা ও মদ্যপান করেছিলেন গগৈসহ বিচারপতিরা!
https://tinyurl.com/2p8nzjzx
৩। https://tinyurl.com/4bra6btz