গত ৭ জানুয়ারি ২০২২ ইংরেজি, আল কায়েদা সংশ্লিষ্ট একটি মিডিয়া ‘জাইশুল মালাহিম আলইলিকত্রুনি’ টেলিগ্রাম ও জিহাদি প্লাটফর্মগুলোতে ‘কাতায়িবুল কুর্দিস্তান ফিল ইরাক ওয়া ইরান’ এর শুরা সদস্য শাইখ আবু রামি আলকুর্দি হাফিযাহুল্লাহ’র একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছে। তাতে এই দলের ইতিহাস, আল কায়েদার সাথে সংশ্লিষ্টতা, কুর্দি মুজাহিদদের জিহাদি কার্যক্রমের ইতিহাস ও বৃহত্তর কুর্দিস্তানজুড়ে আল কায়েদার ইতিহাস তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি আইএস-এর গাদ্দারি ও পদস্খলনের কিছু চিত্রও এতে উঠে এসেছে। আমি সংক্ষেপে তা তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
কুর্দি জিহাদিদের ইতিহাস অনেক পুরোনো। কুর্দি যোদ্ধারা বসনিয়ার জিহাদে প্রখ্যাত আরব মুজাহিদ শাইখ আনওয়ার শাবান এর সাথে বসনিয়ার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। আরব ও আফগান ফেরত যোদ্ধাদের হাত ধরেই বৃহত্তর কুর্দি অঞ্চলে বিভিন্ন জিহাদি গ্রুপ গড়ে উঠেছিল। যাদের মাঝে জামাআত আনসারুল ইসলাম অন্যতম। এই জামাআতের একটি ব্রিগেডের প্রধান ছিলেন শাইখ উমর বাযিয়ানি হাফিযাহুল্লাহ, যিনি বর্তমান কাতায়িবুল কুর্দিস্তান এর আমীর। ইরানীয় কুর্দি অঞ্চলে জামাআত আনসারুল ইসলামের উপর ইরানের দমন পীড়ন এবং আরও কিছু কারণে দলের মধ্যে বিক্ষিপ্ততা সৃষ্টি হয়। শাইখ উমর বাযিয়ানি দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন ও নিজস্বভাবে ইরানীয় কুর্দি অঞ্চলে কাজ শুরু করে দেন। উল্লেখ্য বৃহত্তর কুর্দি অঞ্চলের মাঝে ইরাক, ইরান, সিরিয়া ও তুরস্কের বিশাল অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত।
ইমারাতে ইসলামীর প্রথম আমলে কিছু সঙ্গীসহ শাইখ উমর বাযিয়ানি আফগানিস্তানে হিজরত করেন। এবং আফগানের কুর্দি মুজাহিদদের সহযোগিতায় আল কায়েদার কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে পৌঁছান। সেখানে শাইখ উসামা বিন লাদেন রহিমাহুল্লাহ’র সাথে সাক্ষাত করে বাইয়াত প্রদান করেন। ঐসময় শাইখ আইমান আয যাওয়াহিরিসহ কেন্দ্রীয় আল কায়েদা নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তিনি ও তাঁর সঙ্গীরা আল কায়েদা পরিচালিত ঐতিহাসিক আল ফারুক প্রশিক্ষণ শিবিরে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন, সেখানে তাঁরা শাইখ আবু মুসআব সুরী ফাক্কাল্লাহু আসরাহ’র কাছেও শিক্ষা গ্রহণ করেন।
বরকতময় ৯/১১ অপারেশনের পর শাইখদের নির্দেশে তারা ইরানীয় কুর্দি অঞ্চলে হিজরত করেন। এখানে তিনি কাতিবাতুত তাওহীদ গঠন করেন। এবং বিধ্বস্ত আফগানিস্তানে সাহায্য প্রেরণ, মুজাহিদ সংগ্রহ ও আল কায়েদার সাপোর্টের জন্য কাজ করা শুরু করে দেন।
ইতোমধ্যে ইরাকে শাইখ আবু মুসআব যারকাবি’র কার্যক্রম শুরু হয়ে যায়। তিনি শাইখকে সাপোর্ট করার উদ্দেশ্যে কুর্দি মুজাহিদদের একটি দলকে নিয়ে শাইখ আবু মুসআব যারকাবির সাথে যোগ দেন। তাঁর দল কাতিবাতুত তাওহীদ ও শাইখ যারকাবির কাতিবুল জিহাদ মিলে জামাআতুত তাওহীদ ওয়াল জিহাদ গঠন করা হয়। তিনি শাইখ যারকাবির নায়েব হিসেবে নিযুক্ত হন। এর কিছুদিন পর-ই এই দলটি শাইখ উসামা’র হাতে বাইয়াত গ্রহণ করে ‘আল কায়েদা ইরাক’ নাম গ্রহণ করে। এই সময় বৃহত্তর কুর্দি অঞ্চলজুড়ে কাতিবাতুত তাওহীদের বাকি অংশ আল কায়েদা কুর্দিস্তান শাখা নামে কাজ করে যাচ্ছিলেন। যেটি পরবর্তীতে ইরান সরকারের দমন পীড়নের কারণে কাতায়িবুল কুর্দিস্তান নাম গ্রহণ করে। কেননা সে সময় থেকেই ইরান আল কায়েদার উপর কঠোর মনোভাব রাখছিল।
২০০৬ সালে ইরাকের মজলিসে শুরা গঠন হলে তাতে আল কায়েদা ইরাক ও আল কায়েদার কুর্দি শাখাও যোগদান করেন। ২০১২/২০১৩ সালে ইরাক ও শাম-জুড়ে আদ-দাওলাতুল ইসলামিয়াহ গঠন হলে তারা আল কায়েদার আনুগত্যের শর্তে তাদের অংশ হয়ে যান। উল্লেখ্য দাওলার সদস্যরা দাওলার গঠনের পর থেকেই জানতেন যে গোপনভাবে আল কায়েদার কাছে বাইয়াত রয়েছে, যেটি পরে শাইখ আইমান হাফিযাহুল্লাহ ও দাওলার সাবেক মুখপাত্র আদনানিও স্বীকার করে নিয়েছে। কিন্তু কিছুদিন পরই তাদের কাছে বাগদাদি ও আইএসের অন্যান্য নেতাদের ধোঁকাবাজি ও ভ্রান্তি পরিষ্কার হয়ে উঠে। আল কায়েদার মুজাহিদিন আইএস থেকে বের হয়ে যান, এবং পুনরায় কেন্দ্রীয় আল কায়েদার সাথে মিলিত হন। আবারও বৃহত্তর কুর্দি অঞ্চলজুড়ে ‘কাতায়িবুল কুর্দিস্তান ফিল ইরাক ওয়া ইরান’ নামে কেন্দ্রীয় উমারাহদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে কাজ করছেন।
আল কায়েদার বৃহত্তর কুর্দি অঞ্চলের মুজাহিদিন বরাবরই কেন্দ্রীয় উমারাহদের সহযোগিতা, মেজবানি ও মুজাহিদিন প্রেরণসহ বড় বড় অপারেশনেও অংশ নিয়েছেন। তারা আফগানিস্তান ও ইরাকে শত শত শহীদ যোদ্ধা প্রেরণ করেছেন। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আফগানিস্তান ও পাকিস্তান পর্যন্ত আল কায়েদার জন্য একটি নিরাপদ পথের ব্যবস্থা করেছেন। শাইখ আতিয়াতুল্লাহ, শাইখ সুলাইমান আবুল গাইস-সহ বড় বড় কেন্দ্রীয় নেতাদের মেজবানি করেছেন। আইএস এর বিভ্রান্তি ও পরিশেষে পতনের পর আবারো ইরাকসহ বৃহত্তর কুর্দি অঞ্চলেজুড়ে জিহাদের ঝাণ্ডা উত্তোলন করেছেন আলহামদুলিল্লাহ।
লেখক- আব্দুল হামিদ
আলহামদুলিল্লাহ
আলহামদুলিল্লাহ্ তাই তো বলি আমেরিকা পাইলাইতেছে কেন কাহিনী কি
আসিল রহস্য উম্নোচন হল
alhamdulillah
Alhamdulillah
Alhamdulilla
Alhamdulillah