সমগ্র বিশ্ব জুড়ে করোনা ভাইরাসের দোহাই দিয়ে বন্ধ রাখা হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন ও ব্যক্তিজীবনে নানান সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু হলুদ মিডিয়াগুলো বরাবরের মতই এবিষয়টিকে ভাল হিসেবে তুলে ধরছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার জন্য বাহবা দিচ্ছে কারো কোন খতির তোয়াক্কা না করেই।
তবে আফগানিস্তানের বেলায় পশ্চিমা দালাল হলুদ মিডিয়াগুলোর সুর ভিন্ন রকমের। নানা রকম ভুলভাল রিপোর্ট করে বিশ্বের সামনে তালেবানদের প্রশ্রবিদ্ধ করছে। তালিবান নারী শিক্ষা বন্ধ করে দিচ্ছে, স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দিচ্ছে – এমন নানান মিথ্যা সংবাদ বার বার প্রচার করে যাচ্ছে তারা।
যদিও গত বছরের আগস্টে তালেবান ক্ষমতায় আসার সাথে সাথেই আফগানিস্তানে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে তালেবানরা ঘোষণা দিয়েছিলেন, নিরাপত্তার ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করে সবকিছু আগের মতই আবার চালু করে দেওয়া হবে। তবুও এই মিথ্যা প্রচারকারিদের মিথ্যা প্রচারণা থেমে থাকেনি।
তবে তালিবান প্রশাসন ঠিকই ধারাবাহিকভাবে তাদের কথা রেখে যাচ্ছে, একে একে খুলে দিচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। গত বুধবার (০২-০২-২২) থেকে খুলে যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যথাযথ পর্দার ব্যবস্থার সাথে ছাত্রদের সঙ্গে ক্লাসে ফিরেছেন ছাত্রীরাও।
দেশটির শিক্ষা কর্মকর্তারা রয়টার্সকে বলেছেন, ছেলে শিক্ষার্থীদের থেকে শারীরিকভাবে দূরত্ব পালনের শর্তে মেয়েদের ক্লাসে ফেরার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যা তেমন অসম্ভব কোন শর্ত নয়। বরং আল্লাহ তায়ালার শরয়ী বিধান।
দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শহর জালালাবাদের একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, চলতি সপ্তাহে খুলে যাওয়া আফগানিস্তানের অন্যতম বৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয় নানগরহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পৃথক দরজা দিয়ে মেয়ে শিক্ষার্থীদের প্রবেশ করতে দেখেছেন তিনি।
দেশটির সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্তির প্রশংসা করেছে জাতিসংঘ। দেশটিতে নারী শিক্ষার্থীরা যে ফিরতে যাচ্ছেন তার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার এক টুইট বার্তায় আফগানিস্তানে নিযুক্ত জাতিসংঘ মিশন বলছে, ছেলে এবং মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পুনরায় খুলে দেওয়ার ঘোষণাকে স্বাগত জানায় জাতিসংঘ। এটি এত গুরুত্বপূর্ণ যে, প্রত্যেক তরুণ মানুষেরই শিক্ষার সমান অধিকার রয়েছে।
আফগানিস্তানের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, নারী শিক্ষার্থীদের আলাদা রাখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বিভিন্ন ধরনের বিকল্প ব্যবস্থার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, শ্রেণিকক্ষে আলাদা বসা অথবা ছেলে এবং মেয়ে শিক্ষার্থীদের ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ক্লাসের ব্যবস্থা করা।
নানগরহার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান খলিল আহমাদ বিহসুদওয়াল বলেন, প্রতিষ্ঠানের ছেলে এবং মেয়ে শিক্ষার্থীরা আলাদা ক্লাসে অংশ নেবে; এই চর্চা ইতোমধ্যে অনেক প্রদেশে চালু রয়েছে।
বুধবার কেবলমাত্র দেশটির উষ্ণতম প্রদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজধানী কাবুলসহ শীতপ্রবণ অঞ্চলের সব বিশ্ববিদ্যালয় পুনরায় চালুর কথা রয়েছে।
কথিত প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবিরা আফগানিস্তানের ব্যাপারে নাক গলালেও, অন্যান্য দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধের ব্যাপারে উল্টো প্রশংসা করে। কথিত নারীবাদীরা আফগানিস্তানের মুসলিম নারীদের জন্য মায়াকান্না করলেও সহশিক্ষার কুফলে অগণিত নারী ধর্ষিত হচ্ছে, ইফটিজিংয়ের শিকার হচ্ছে, অনেক নারী বিবাহ ব্যতিত ঝুকিপূর্ণ গর্ভধারণ করছে, নবজাতকের লাশ ডাস্টবিনে নিক্ষেপ হচ্ছে – এই বিষয়গুলো তারা সম্পূর্ণ এড়িয়ে যায়।
এদের প্রতিটা অভিযোগের জবাব তাই একে একে দিয়ে যাচ্ছেন ইসলামি ইমারত আফগানিস্তানের তালিবান প্রশাসন।
তথ্যসূত্র :
১. আফগানিস্তানে খুলে গেল বিশ্ববিদ্যালয়, ক্লাসে ফিরল মেয়েরাও
https://tinyurl.com/2p8bwx96
২. নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে স্কুল খোলা রাখায় সিলেটে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা
https://tinyurl.com/ywhux7ad
hmm
আলহামদুল্লিাহ