সম্প্রতি তাজিকিস্তান সীমান্তে নতুন করে সেনা সদস্য বাড়িয়েছে আফগানিস্তানের ইসলামি ইমারাত প্রশাসন। এবার সীমান্তটির নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তালিবানের অন্তর্গত তাজিক যোদ্ধাদের। তবে এই পদক্ষেপে ‘নাখোশ’ হয়েছে তাজিকিস্তান।
তাজিকিস্তানের সরকারি কর্মকর্তারা বলেছে যে, তারা আফগানিস্তান ও তাজিকিস্তান সীমান্তে স্থাপিত পর্যবেক্ষণ পয়েন্ট নিয়ে উদ্বিগ্ন। ঐ কর্মকর্তারা দাবি করেছে যে, ইসলামি ইমারাত প্রশাসন দরওয়াজের সীমান্ত অঞ্চলের নদী ঘিরে উঁচু উঁচু ওয়াচ টাওয়ার (পর্যবেক্ষণ পোস্ট) নির্মাণ করেছে।
তাজিকিস্তানের পাহাড়ী বাদাখশান স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের এক সীমান্তরক্ষী কর্মকর্তা ওই এলাকায় পর্যবেক্ষণ পোস্টের অস্তিত্ব নিশ্চিত করেছে।
তাজিকিস্তান প্রশাসন আরও দাবি করেছে যে, ইসলামি ইমারাত প্রশাসনের অন্তর্গত তাজিক সামরিক ইউনিটকে এই অঞ্চলে মোতায়েন করা হয়েছে। যারা তাজিকিস্তানের নাগরিক এবং তারা ইসলামি ইমারাত প্রশাসনের সাথে যুক্ত।
এদিকে আফগান সরকার দেশে তাজিক যোদ্ধাদের উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত বা অস্বীকার কোনটিই করেননি। তবে তালিবান সংশ্লিষ্ট কিছু অ্যাকাউন্টের বরাতে জানা গেছে যে, কয়েকবার তাজিক প্রশাসনের সাথে বৈঠক ও চুক্তি করার পরেও সীমান্ত সমস্যা দূর না হওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে আফগান সরকার। ফলে তাজিক সীমান্ত অঞ্চলটি নিরাপদ রাখতে সেখানে প্রাক্তন “জুন্দুল্লাহ” এর যোদ্ধাদের নিয়োগ দিয়েছে তালিবান সরকার। যার নেতৃত্ব রয়েছেন মাহদি আরসালান। তিনি সহ এই ইউনিটের ২০০ যোদ্ধাই তাজিক নাগরিক। যারা ইমারাতে ইসলামিয়ার হয়ে এখানে বছরের পর বছর কুফ্ফার জোট-বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে গেছেন।
অন্যদিকে ইমারাতে ইসলামিয়া প্রশাসনের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ এক বিবৃতিতে বলেছেন যে, নিরাপত্তা উদ্বেগের ক্ষেত্রে তাজিকিস্তানের উচিত ঝামেলা না করে সরাসরি কাবুলের সাথে যোগাযোগ করা।
উল্লেখ্য যে, দীর্ঘদিন ধরেই তাজিক ও আফগান প্রশাসনের মাঝে বিভিন্ন বিষয় নিয়েই উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, আফগান সরকারি অস্ত্র, ট্যাংক ও বিমান আটকে রাখা। যা পূর্বেকার গোলাম সরকারি বাহিনী পালানোর সময় তাজিকিস্তান নিয়ে গিয়েছিল।
সাম্প্রতিক ঘটনায় আবারও বিষয়টি তুলছেন তালিবান সদস্যরা। তাদের মতে, আফগানিস্তানের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে তাজিক সরকারের নাক গলানোর কোনই অধিকার নেই। “আমরা আমাদের সীমান্ত নিরাপদ রাখতে কাকে নিয়োগ দিবে সেটা আমাদের ব্যপার। অথচ তাজিকিস্তান বার বার আমাদের অভ্যন্তরিণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে, কিন্তু আমরা বিষয়গুলো আলোচনা মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করেছি। এখনো তাজিক সরকার আমাদের বিমান, ট্যাংক এবং অসংখ্য অস্ত্র আটকে রেখেছে। তাজিকিস্তানের উচিত আমাদের কোন বিষয়ে মন্তব্য করার আগে আমাদের সম্পাদ ফিরিয়ে দেওয়া।”