ইডেন কলেজর কুকীর্তি যেন থামছেই না। কলেজটিতে ছাত্রলীগ ছাত্রীদের নির্যাতন, ছাত্রীদের অনৈতিক কাজে বাধ্য করার ঘটনায় সম্প্রতি সমালোচিত হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। এরই মধ্যে এবার কলেজটির প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে তার নিজের রুমে এক ছাত্রীকে ৬ ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন ও হেনস্তার ঘটনা ঘটেছে।
ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর নাম নুসরাত জাহান কেয়া। তিনি কলেজের মার্কেটিং বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি। তার অভিযোগ, গণমাধ্যমে বক্তব্য দেয়ায় গত সোমবার তাকে ডেকে নিয়ে দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত প্রিন্সিপালের রুমে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। ওইদিন রাতে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন তিনি।
কেয়া সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলেন, ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের নেত্রীদের অপকর্ম নিয়ে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেয়ার কারণেই আমাকে আটকে রেখে মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে সার্টিফিকেট উত্তোলনের জন্য বিভাগে গেলে শিক্ষকরা আমাকে প্রিন্সিপালের রুমে নিয়ে যান। সেখানে দুপুর ১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত আমাকে আটকে রাখে।
তিনি আরও বলেন, অধ্যক্ষের রুমে বিভিন্ন পর্যায়ের প্রায় ৩৫ জন শিক্ষক মিলে আমাকে নানাভাবে হেনস্তা করেন। একপর্যায়ে হুমকি দিয়ে জোর করে লিখিত নেন। পরে আমি অসুস্থ হয়ে পড়লে আমার বাবাকে ফোন দিয়ে জানানো হয়, যেন তিনি কলেজে এসে আমাকে নিয়ে যান। কিন্তু বাবা-মা গ্রামে থাকায় স্থানীয় অভিভাবকে ডেকে নিয়ে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া হয়েছে। শিক্ষকদের এমন জঘন্য কাজের আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এর আগে তাকে সার্টিফিকেট আটকে দেয়া ও ছাত্রত্ব বাতিলের হুমকি দেয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন কেয়া।
এসব ঘটনার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার অপরাধ হচ্ছে- আমি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দুইপক্ষের কোন্দল-সংঘর্ষের প্রতিবাদে ২৬ সেপ্টেম্বর সমাবেশে বক্তব্য দিয়েছিলাম। এবিষয়ে গণমাধ্যমে কথা বলতে রাজি হননি ইডেন মহিলা কলেজের প্রিন্সিপাল প্রফেসর সুপ্রিয়া ভট্ট্যাচার্য।
শুধুমাত্র ইডেন মহিলা কলেজই নয়। দেশের প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখন অনৈতিকতার ছড়াছড়ি। যারাই এসবের প্রতিবাদ করছে তাদেরকেই বাধার মুখে পরতে হচ্ছে। একজন শিক্ষক থেকে শিক্ষার্থীরা নীতি ও আদর্শ শিক্ষা লাভ করবে এটাই বাস্তবতা, অথচ তারাই কিনা আজ ছাত্রীকে আটকে রেখে হেনস্থা করছে; দলকানা আচরণ তাদের কাছ থেকেই শিখছে শিক্ষার্থীরা। ইডেন কলেজের এই গো-মূত্রপায়ী অধ্যক্ষ আর অন্যান্য শিক্ষকদের মতো দেশের বিভিন্ন প্রতিস্থানের শিক্ষকরাই আজ রাজনৈতিক দলগুলোর পেটোয়া বাহিনীর মতো কাজ করছে।
এসব ঘটনা আমাদের এই বার্তাই দিচ্ছে যে, কথিত সেক্যুলার সমাজ-ব্যবস্থা কখনই দেশে সুষ্ঠু ও নিরাপদ শিক্ষার পরিবেশ দিতে পারবে না। কথিত গণতন্ত্র চর্চার নামে মুসলিম সমাজের মধ্যেই তারা বিভেদের দেওয়াল টেনে দেয়। সুতরাং ইসলামি শরিয়া ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা ব্যতীত শিক্ষাঙ্গন সহ অন্য কোন অঙ্গনেই মুসলিমদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
তথ্যসূত্র:
——–
১। ইডেন কলেজ প্রিন্সিপালের রুমে ছাত্রী আটকে নির্যাতনের অভিযোগ-
– https://tinyurl.com/3tv8k6m8