ব্রেকিং || ২ দিনে মালির ৩টি শহর ও ৫টি এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে আল-কায়েদা

ত্বহা আলী আদনান

0
981
ফাইল ছবি: জামা'আত নুসরাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন (জেএনআইএম)।

সম্প্রতি পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালির মোপ্তি ও মেনাকা রাজ্যে হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট ইসলামি প্রতিরোধ যোদ্ধারা। আল-কায়েদার এসব হামলার প্রধান শিকার বেসামরিক লোকদের গণহত্যাকারী আইএস সন্ত্রাসী ও গাদ্দার মালিয়ান সেনাবাহিনী। এতে শত শত আইএস সন্ত্রাসী ও মালিয়ান সেনা নিহত এবং আহত হচ্ছে।

বিবরণ অনুযায়ী, গত ২৯ অক্টোবর থেকে দুটি রাজ্যে সন্ত্রাস নির্মূল অভিযান শুরু করেছে আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট জামা’আত নুসরাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন (জেএনআইএম)। এই অভিযান শুরুর পর গত ৩০ অক্টোবর মোপ্তি রাজ্যের টেনিনকো শহর গোলিডজী জেলা পর্যন্ত হামলা প্রশারিত করে। যা ঐদিন সকাল ১০ টায় শুরু হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলতে থাকে। এসময়ের মধ্যে মুজাহিদগণ টেনিনকো শহর থেকে গোলিডজী শহর পর্যন্ত ৪০ কিলিমিটার বিস্তীর্ণ ভূমির নিয়ন্ত্রণ নেন। সেই সাথে গোলিডজী শহরের একটি এলাকা ছাড়া এর ৯৫ শতাংশ ভূমির উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছেন মুজাহিদগণ।

বর্তমানে মুজাহিদগণ টেনিনকো শহর বিজয়ের লক্ষ্যে ভারী হামলা চালাচ্ছেন। বিপরীতে গাদ্দার মালিয়ান সেনাবাহিনী শহরের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে ব্যাপক বিমান হামলা চালাতে শুরু করেছে। তা সত্বেও শহরটি বিজয়ের লক্ষ্যে হামলা জারি রেখেছেন মুজাহিদগণ। (আল্লাহ্ তাআলা মুজাহিদদের বিজয় দান করুন। আমীন।)

অপরদিকে গত ২৯ অক্টোবর থেকে মেনাকা রাজ্যে নিরপরাধ লোকদের গণহত্যাকারী সন্ত্রাসী “আইএস” সদস্যদের নির্মূল করতে ভারী অভিযান চালাতে শুরু করেছেন মুজাহিদগণ। আমাদের হাতে ৩১ অক্টোবর দুপুর পর্যন্ত আসা তথ্য অনুযায়ী, আল-কায়েদার বীর মুজাহিদদের এই অভিযানে এখন পর্যন্ত শতাধিক আইএস সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও অসংখ্য সন্ত্রাসী।

রিপোর্ট অনুযায়ী, মুজাহিদগণ দীর্ঘ এই লড়াইয়ে সন্ত্রাসী আইএসদের হটিয়ে ২টি শহর সহ অর্ধডজন এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে তামালেট এবং আন্দেরামবুকান শহর সহ ইঞ্চিনান ও এমএস এলাকা। যা দীর্ঘদিন ধরে আইএসের শক্ত ঘাঁটি হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এই শহরগুলো চলতি বছরের মার্চ মাসে “আজওয়াদ” বিদ্রোহিদের থেকে দখল নেয় আইএস। এরপর নাইজার থেকে এসে এখানে শত শত আইএস সন্ত্রাসী অবস্থান নেয় এবং শহরগুলোতে গণহত্যা চালাতে শুরু করে। একই সময়ে ঘাও রাজ্যেরও কিছু এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয় সন্ত্রাসী এই দলটি।

গত ১ মার্চ থেকে শহরগুলোতে শক্তি বৃদ্ধি করে আইএস। এরপর থেকে এসব এলাকায় আইএস বিরোধী ও তাদের সমর্থন করতে অস্বীকৃতি জানানো লোকদের গণহত্যা শুরু করে আইএস। রিপোর্ট অনুযায়ী মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সন্ত্রাসী এই দলটির এই গণহত্যার শিকার হন ৯২৫ জন বেসামরিক নাগরিক। শুধু এক তামালেট শহরেই ১৪৫ জন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করে আইএস। আর হাজার হাজার মানুষকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা হয়।

আইএস সন্ত্রাসীদের কয়েক মাসের এই গণহত্যার পর, বর্তমানে জনগণকে উদ্ধার করতে শহরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিতে শুরু করেছেন ‘জেএনআইএম’ মুজাহিদিন। এখন পর্যন্ত যেসব শহর ও এলাকাগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন মুজাহিদগণ, সেসব এলাকাই বেসামরিক জনগণ রাস্তায় নেমে মুজাহিদদের এই বিজয়ে মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেন এবং তাদেরকে নিজেদের শহরে স্বাগত জানান।

তামালেট শহরে ‘জেএনআইএম’ মুজাহিদিনরা

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, জেএনআইএমের বীর মুজাহিদগণ ৩১ অক্টোবর সকাল থেকে গাও রাজ্যের বিভিন্ন এলাকাও অভিযান চালাতে শুরু করেছেন। এই রাজ্যেও মুজাহিদদের হামলার মুখে আইএস সন্ত্রাসীরা নিহত এবং দলে দলে এলাকা ছেড়ে পালাতে শুরু করেছে। কিছু তথ্য অনুযায়ী, আল-কায়েদার বীর যোদ্ধারা বর্তমানে কয়েক শত আইএস যোদ্ধাকে “তাজলাত” শহরে অবরোধ করে রেখেছেন। এবং ধাপে ধাপে শহরের ভিতরে ঢুকে সন্ত্রাসীদের হত্যা করছেন।

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধকাশ্মীরে দখলদার হিন্দুত্ববাদীদের অপরাধনামা || পর্ব-৭ || আশিক হুসাইন মাসুদি হত্যা
পরবর্তী নিবন্ধহিন্দুত্ববাদীদের কথিত লাভ জিহাদ: পুলিশ-প্রশাসনের নিয়মতান্ত্রিক দ্বিমুখী আচরণ