গত ২৪শে ডিসেম্বর চীনের সুদূর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত জিনজিয়াংয়ে তথা পূর্ব-তুর্কিস্তানের একটি সোনার খনি ধসে পড়ায় ফাঁদে আটকা পড়েন ১৮ জন খনিশ্রমিক। আটকে পড়া শ্রমিকদের অধিকাংশই উইঘুর মুসলিম। দুই সপ্তাহের অধিক সময় হয়ে গেলেও এই উইঘুর শ্রমিকদের কাউকেই এখনও উদ্ধার করা যায়নি, জানা যায়নি তাদের অবস্থাও।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মী বলেছে, “উদ্ধার কার্যক্রম চলছে বলে আমি জানি, তবে এই উদ্ধার কাজের ফলাফল কী তা আমার জানা নেই।”
আরেকজন বলেছে, “খনিতে আটকে পড়া শ্রমিকদের ভাগ্য এবং এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী কে, এগুলো গোপনীয় তথ্য। এই ধরনের প্রশ্নের উত্তর আমাদের কাছে নেই।” খনিতে কাজ করা শ্রমিকদের সংখ্যা সম্পর্কে জানতে চাইলে ঐ লোক বলে যে, এ তথ্যগুলো জনসম্মুখে প্রচার করার অনুমতি তার নেই।
তবে রেডিও ফ্রি এশিয়ার তথ্য মতে, দুর্ঘটনার সময় খনিতে ৪০জন শ্রমিক কাজ করছিলেন, যাদের মধ্যে ২২জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। আর এখনও অবধি বাকি ১৮ জনের কোনো সন্ধান নেই।
এই দুর্ঘটনা নিয়ে নতুন কোনো তথ্য জানায়নি দখলদার চীনা কর্তৃপক্ষ। এখন পর্যন্ত তারা কেবল একটি প্রেস কনফারেন্স করেছে। এটিতেও কেবল কতগুলো সংগঠন উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছে, সেই তথ্যকে গুরুত্ব দিয়েছে। কেন দুর্ঘটনা ঘটলো, যারা ফাঁদে আটকা পড়েছে তাদের কী অবস্থা, কী তাদের পরিচয়, এমন কোনো তথ্য জানায়নি কমিউনিস্ট চীন কর্তৃপক্ষ।
রেডিও ফ্রি এশিয়ার অনুসন্ধানে উঠে এসেছে যে, আটকে পড়া শ্রমিকদের অধিকাংশই উইঘুর মুসলিম।
আজ প্রায় ১৭ দিন যাবৎ তাদের কোনো খোঁজ নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতদিন পর্যন্ত তাদের খোঁজ না পাওয়ায় ধরে নেওয়া যায় যে, তারা মারা গেছেন। কারণ, খনিতে আটকে পড়া শ্রমিক সর্বোচ্চ ৩ থেকে ৫ দিন আন্ডারগ্রাউন্ডে বেঁচে থাকতে পারেন।
এদিকে, চীনা কর্তৃপক্ষ এই দুর্ঘটনার তথ্য গোপনের চেষ্টা করছে। অফিসাররা সরাসরিই বলছে, তারা যদি তথ্য জানেও, তবুও এগুলো প্রকাশ্যে বলার অনুমতি নেই তাদের। তারা কেবল বলছে, উদ্ধার কাজ চলছে। কিন্তু আজ অবধি উদ্ধার কাজের কোনো আপডেট তারা জানায়নি। উইঘুর মুসলিম একটিভিস্টরা চীনা কর্তৃপক্ষের এমন আচরণের নিন্দা জানিয়েছেন।
আটকে পড়া শ্রমিকরা উইঘুর হওয়ায় তাদের প্রতি চীনা সরকারের দায়িত্বহীনতাও কাজ করছে বলে মনে করেন অনেকে।
তথ্যসূত্র:
——–
1. Fate of Uyghur miners trapped in gold mine collapse uncertain after nearly 2 weeks
– https://tinyurl.com/yc33vwtv