নিপিড়িত রোহিঙ্গা মুসলিমদের নারী-পুরুষ ও শিশুদের একটি দল নৌকাযুগে ইন্দোনেশিয়ার উপকূলে পৌঁছেতে সক্ষম হয়েছে। গত এক মাসের দীর্ঘ বিপদসংকুল সাগরপথ পাড়ি দিয়ে সেখানে পৌঁছান তারা। তাদের মধ্যে ৬৯ জন পুরুষ, ৭৫ জন নারী এবং ৪০ জন শিশু রয়েছে।
গত ১০ জানুয়ারি ইন্দোনেশিয়ার উপকূলে পৌঁছান তারা। এর আগে গত ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ থেকে রওয়ানা দিয়েছিল রোহিঙ্গাবঝাই নৌকাটি। স্থানীয় গণমাধ্যমকে রোহিঙ্গারা জানিয়েছে, সেখানে পৌঁছতে পেড়ে তারা খুব খুঁশি অনুভব করছে। কেননা দীর্ঘ যাত্রার ফলে তাদের খাবার, পানীয় ও নৌকার ইঞ্জিন বিকল হয়ে গিয়েছিল।
গত ২০১৭ সালে মিয়ানমারের বর্বর বৌদ্ধগোষ্ঠীর নিপিড়নের শিকার হয়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এরপর দীর্ঘ পাঁচ বছর অতিবাহিত হলেও তাদের নিজ দেশের ফিরে যাবার সুযোগ সৃষ্টি হয়নি। দীর্ঘ দিন ধরে দেশে ফিরিয়ে নেবার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বছরের পর বছর পার করছে দালাল জাতিসংঘ।
এদিকে, গত পাঁচ বছর ধরে বিশাল এ মাজলুম জনগোষ্ঠীর কোন প্রকার আয়-রোজগারের সুযোগ ছাড়াই বাংলাদেশের ক্যাম্পে বসবাস করছে। তাদেরকে ক্যাম্প থেকে বের হওয়া ও কোন রকম কাজের সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। এর ফলে ক্যাম্পে চরম মানবেতর জীবন-যাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। আর এ কারণে কর্মহীন কঠিন এ জীবন থেকে বাঁচতে সাগরের দূর্ঘম পথ পাড়ি দিতেও কার্পণ্য করছে না অসহায় এই রোহিঙ্গা মুসলিমরা।
এভাবে প্রতি বছরই বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের আরাকান থেকে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়শিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করছেন রোহিঙ্গা মুসলিমরা। আর এসব যাত্রা পথে নিহতের সংখ্যাও কম না। গত এক বছরে ৬০০-৭০০ জন মাজলুম রোহিঙ্গা সাগরে ডুবে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বিভিন্ন সংস্থা।
ইসলামি চিন্তাবিদরা আক্ষেপ করে বলছেন, যে জাতি মাত্র একজন মুসলিমকে উদ্বারের জন্য নিজেদের সর্বস্ব উজার করে দিতো, সে জাতির নারীরা আজ পদে পদে লাঞ্চিত-বঞ্চিত হয়ে দেশে দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে একটু আশ্রয়ের জন্য। তাদের একমাত্র অপরাধ তার মুসলিম। আর তাদের এমন বিপদ সত্বেও মুসলিম জাতি আজ তাদের ভুলতে বসেছে। এ জাতি ভুলে গেছে মাজলুমদের প্রতি তাদের কী দায়িত্ব ও কর্তব্য।
তথ্যসূত্র:
——-
১। Nearly 200 Rohingya refugees land in Indonesia in latest boat arrival
– https://tinyurl.com/y3nsb9pc