এবার সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিশুর উত্তরাঞ্চলে বড় ধরণের সামরিক অভিযান চালিয়েছেন আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট ইসলামি প্রতিরোধ যোদ্ধারা। হামলটি সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তাদের অবস্থান লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে, যাতে কমপক্ষে ৭৯ সেনা নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রমতে, গত ২১ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুর ২টার দিকে রাজধানী মোগাদিশুর আল-আজিজ জেলার গ্রিন-জোন এলাকায় একটি ভবন টার্গেট করে হামলার ঘটনাটি ঘটে। হামলার লক্ষবস্তু হওয়া ভবনটি সোমালি স্পেশাল ফোর্সের একটি গোপন আস্তানা বলে জানা গেছে।
প্রতিরোধ বাহিনী হারাকাতুশ শাবাবের সামরিক মুখপাত্রের এক বিবৃতি থেকে জানা যায়, মুজাহিদদের হামলার লক্ষবস্তু বাসভবনটি সোমালি সিনিয়র সামরিক কমান্ডার জেনারেল গারাবেয়ের ছিলো। এই ভবনটি সোমালি সামরিক বাহিনীর গোপন সদর দফতর এবং চিকিৎসা কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল।
সম্প্রতিক মাসগুলোতে কেন্দ্রীয় হিরান রাজ্যে শাবাব মুজাহিদিন ও সেক্যুলার সোমালি বাহিনীর মধ্যে তীব্র লড়াই চলছে। আর এই যুদ্ধে শাবাব মুজাহিদিনের হামলায় আহত হওয়া গুরত্বপূর্ণ কমান্ডার ও সেনা সদস্যদের রাজধানীর উপরোক্ত বাসভনটিতে গোপনে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। হারাকাতুশ শাবাব প্রশাসন এই তথ্য নিশ্চিত হওয়ার পরই এটিতে হামলার পরিকল্পনা করেন এবং মঙ্গলবার হামলাটি পরিচালনা করেন।
সূত্রমতে, শাবাবের কয়েকজন ইনগিমাসী মুজাহিদ খুবই বুদ্ধিমত্তার সাথে উক্ত ভবনটিতে ঢুকে পড়েন এবং অল্প সময়ের মধ্যে ভবনটি নিজেদের নিয়ন্ত্রিণে নেন। এরপর মুজাহিদগণ ভবনটিতে অবস্থান নেওয়া সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তা, কমান্ডার ও সেনা সদস্যদের হত্যা করতে থাকেন। অভিযানে অংশগ্রহণকারী শাবাবের একজন ইনগিমাসী মুজাহিদ জানান, তিনি একটি রুমেই সোমালিয়ান বাহিনীর ২২ সেনার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেছেন, বাকি রুমগুলোতেও শাবাবের হামলায় অনুরূপ সেনা সদস্যের লাশ পড়েছে।
এদিন যুদ্ধের ৮ম ঘন্টায় হারাকাতুশ শাবাব সংশ্লিষ্ট মিডিয়া সূত্র জানায়, অভিযানে মুজাহিদগণ এখন পর্যন্ত সোমালি বাহিনীর অফিসার, সেনা সদস্য, মিলিশিয়া নেতাসহ অন্তত ৭০ শত্রুকে হত্যা করেছেন। যাদের মাঝে তুর্কি বাহিনী দ্বারা প্রশিক্ষিত সোমালি বিশেষ বাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ “হার্মাদ” এর নামও রয়েছে। (হামলা তখনও চলমান ছিলো, পরবর্তীতে নিহত শত্রুসেনার সংখ্যা ৭৯ ছাড়িয়েছে আলহামদুলিল্লাহ্।)
শাবাব মুখপাত্রের বিবৃতিতে আরও যোগ করা হয়েছে যে, আমার আল্লাহর শত্রুদের বলছি, “স্বপ্নেও এটা ভাববেন না যে আপনি যেটাকে নিজের জন্য নিরাপদ গর্ত মনে করছেন, সেখানে আপনি নিরাপদ আশ্রয়ে লুকিয়ে থাকতে পারবেন, যার চতুর্পাশ কঠিন নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখা হয়েছে। শত্রুরা যতই শক্তিশালী ঘাঁটি আর নিরাপদ গর্তে আশ্রয় নিকনা কেন, এই উম্মাহর বীর মুজাহিদরা তাদেরকে সেখানেই তাড়া করবেন এবং হত্যা করবেন।”
উল্লেখ্য যে, রাজধানী মোগাদিশুতে উচ্চ-স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও, লক্ষণীয়ভাবে হারাকাতুশ শাবাব মুজাহিদিন সম্প্রতি গুরুত্বপূর্ণ সরকরি ও সামরিক পয়েন্টগুলোতে আক্রমণ করেছেন। আঞ্চলিক সূত্রগুলির মতে, আশ-শাবাব বর্তমানে আলহামদুলিল্লাহ্ এতটাই শক্তিশালী হয়েছে যে, রাজধানী মোগাদিশুর মতো গুরত্বপূর্ণ শহরে একের পর এক সফল সামরিক অভিযান পরিচালনা করছে। সেই সাথে সোমালি প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ তথ্যও তাঁরা সংগ্রহ করার মতো সক্ষমতা দেখিয়ে যাচ্ছেন, আলহামদুলিল্লাহ্।