প্রস্তুত হচ্ছে ইমারাতে ইসলামিয়ার বিশাল সশস্ত্র বাহিনী!

ত্বহা আলী আদনান

5
2706

সর্বশক্তিমান মহান রবের প্রতি একজন মুমিনের ভালোবাসার শুরু হয় তাঁর জন্য সিজদায় অশ্রু ঝরানোর মাধ্যমে। আর তা পূর্ণতা পায় তাঁরই জন্য দেহের তাজা রক্ত ঝরানোর মধ্য দিয়ে।

রবের দরবারে নত শিরে ইমারাতে ইসলামিয়ার মুজাহিদগণ

গত ২০ বছর ধরে অশ্রু আর দেহের তাজা রক্ত ঢেলেই মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তা’আলার প্রতি নিজেদের ভালোবাসার প্রমাণ দিয়েছেন আফগান বীর মুজাহিদগণ। এর বিনিময়ও তারা পেয়েছেন। আল্লাহ তাআ’লা তাঁর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মুমিন বান্দাদেরকে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী কুফ্ফার জোট বাহিনীর উপর বিজয়ী করেছেন। উপহার দিয়েছেন দ্বিতীয় বারের মতো ইসলামি ইমারাত।

ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের তালিবান প্রশাসনও আল্লাহ তাআ’লার পক্ষে থেকে আসা এই বিজয় ও ইমারাহ্’কে তাঁর দ্বীনের বিজয় ও মুসলিম উম্মাহর জন্য প্রস্তুত করতে শুরু করেছেন। সেই লক্ষ্যে তাঁরা পুরো আফগানিস্তান জুড়ে শরিয়াহ্ কায়েম করছেন এবং প্রস্তুত করছেন অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত বিশাল এক শক্তিশালী সামরিক বাহিনী।

ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের সামরিক বাহিনী

এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইমারাতে ইসলামিয়া প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মাত্র দেড় বছরের মাথায়, নতুন প্রশাসন আফগানিস্তানের বিভিন্ন সশস্ত্র বাহিনীর সাথে যুক্ত প্রায় ৬ লক্ষাধিক সদস্যকে বেতন দিয়েছেন। ফলে এটা স্পষ্ট যে, বর্তমানে ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর মোট সদস্য সংখ্যা ৬ লক্ষ ছাড়িয়েছে।

এ বিষয়ে আরও কিছু ইঙ্গিত পাওয়া যায় ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের সেনাপ্রধান ক্বারি ফসিহউদ্দিন (হাফিযাহুল্লাহ) ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২টি বক্তব্য থেকে।

ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের সেনাপ্রধান

সম্প্রতি নতুন সেনা সদস্যদের একটি গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সেনা প্রধান বলেছিলেন যে, ইমারাতে ইসলামিয়ার সেনাবাহিনীতে বর্তমানে সেনা সদস্য সংখ্যা দেড় লাখ ছাড়িয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়বে ইনশাআল্লাহ।

এমনিভাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ঘোষণায় বলা হয়েছে যে, ইমারাতে ইসলামিয়ার পুলিশ বাহিনীতে সদস্য সংখ্যা সাড়ে তিন লাখ ছাড়িয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্য এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, এই মন্ত্রণালয়ের অধীনে পুলিশের স্পেশাল ফোর্সে ৪০ হাজার সদস্য রয়েছেন, যারা রাজধানী কাবুলসহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও জায়গাগুলোর নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন।

নতুন স্নাতক ইমারাতে ইসলামিয়ার সীমান্তরক্ষী বাহিনী

ইমারাতে ইসলামিয়ার উপরোক্ত ২টি বিশাল সামরিক বাহিনী ছাড়াও দেশ ও সীমান্ত রক্ষায় আরও কয়েকটি বাহিনী কাজ করে যাচ্ছেন। এগুলোর মাঝে রয়েছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থার অধীনস্থ ‘জিডিআই’, বিমান বাহিনীসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীনে কয়েকটি স্পেশাল কমান্ডো ফোর্স।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী মৌলভি ইয়াকুব মুজাহিদ (হাফি)

সম্প্রতি ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মৌলভি ইয়াকুব মুজাহিদ (হাফিযাহুল্লাহ) তিন মাসের সামরিক ও আদর্শিক প্রশিক্ষণ শেষে স্নাতক মুজাহিদদের লক্ষ্য করে একটি গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে বলেন, ‘এই পথে আপনাদের ক্লান্তি এবং দুর্ভোগ একটি মহান উদ্দেশ্যের জন্য। আর তা হচ্ছে আমাদের প্রিয় এই ভূমিতে বিশুদ্ধ শরিয়াহ্ ব্যবস্থা কার্যকর করা এবং যারা এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করবে, তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা। পাশাপাশি যতদিন বেঁচে থাকবো, ততদিন এই ভূমি ও জাতিকে রক্ষা করা।

নতুন স্নাতক একদল কমান্ডো মুজাহিদ

অপরদিকে ইমারাতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব আমিরুল মুমিনিন শায়খুল হাদীস মৌলভি হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা (হাফিযাহুল্লাহ) এক বক্তৃতায় আফগানিস্তান এবং দেশের বাইরে শরীয়া বাস্তবায়নের গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আফগান জিহাদের সাফল্য মানে শুধু আফগানদের জন্য সম্মান ও গৌরব নয়। বরং, এটি সমস্ত মুসলমানদের জন্য গৌরব। এটা বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের কাম্য।

আমিরুল মুমিনিনের অডিও বক্তব্য থেকে

অতএব, আপনার দায়িত্ব শুধু আফগানিস্তানে শরিয়াহ প্রতিষ্ঠা করা নয়, বরং আফগানিস্তানের আলেমদের দায়িত্ব হচ্ছে সারা বিশ্বকে শরীয়তের নির্দেশনায় নেতৃত্ব দেওয়া।’

5 মন্তব্যসমূহ

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধইউপিতে চোর আখ্যা দিয়ে মুসলিম ব্যক্তিকে পিটিয়ে খুন
পরবর্তী নিবন্ধনির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার মুসলিমকে খালাস দিয়েছে রাজস্থান হাইকোর্ট