গত ৩০ জুলাই রবিবারে পাকিস্তানের বাজুর জেলায় মাওলানা ফজলুর রহমানের জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের একটি র্যালিতে ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলা হয়। এতে নিহত হয়েছে অন্তত ৬৩ জন, আহত হয়েছে প্রায় ১২০ জন। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস তথা দায়েশের খোরাসান শাখা।
তবে ঘটনার পর থেকে পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী ও কর্মকর্তারা এই হামলার জন্য আফগানিস্তানের সরকার ও মানুষকে দায়ী করছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিনা রব্বানি সঠিক কোনো তথ্য ব্যতীতই দাবি করেছে যে, উক্ত হামলায় আফগানিস্তানের লোকেরা জড়িত আছে। পাকিস্তানে হামলার ঘটনায় আফগানিস্তানকে জড়িয়ে কথা বলা কতিপয় ব্যক্তি আবার বসবাস করেন যুক্তরাষ্ট্রে!
এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো, পাকিস্তানে একটি ভয়াবহ হামলা হয়েছে। অথচ পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা এই হামলার পেছনে কারা জড়িত, কেন হামলা হলো এসব কিছুই উৎঘাটন করতে পারেনি। এই ধরনের ঘটনাগুলো তাদের দেশে বার বার ঘটে যাচ্ছে। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী এগুলো মোকাবেলায় কিছুই করতে পারেনি। নিজেদের এই ব্যর্থতা ঢাকতে সাম্প্রতিক হামলার ঘটনায় বার বার ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানকে দোষারোপ করতে চেষ্টা করছে তারা।
কয়েক মাস আগে আফগানিস্তানের ভেতরে ঢুকে কথিত জঙ্গী আস্তানায় হামলার হুমকি দিয়েছিল পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তারা। তাদের উপস্থাপনা এমন ছিল যে, আফগানিস্তানের কোনো স্বকীয়তা নেই, পাকিস্তানের সেনারা চাইলেই আফগানিস্তানে হামলার বৈধতা রাখে! কিন্তু ইসলামি ইমারত আফগানিস্তান নিজেদের ভূমিতে যেকোনো অবৈধ হস্তক্ষেপকে দমন করতে বদ্ধ পরিকর, তারাও কড়া ভাষায় পাকিস্তানের জবাব দিয়েছেন। এখন আবারও পাকিস্তানের অভ্যন্তরে দায়েশের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় পাকিস্তানের কর্মকর্তারা আফগানিস্তানকে দোষারোপ করে আফগানিস্তানে হস্তক্ষেপের নতুন পথ খুঁজছে।
পাকিস্তানী কর্মকর্তাদের এমন দাবিকে ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন ইসলামি ইমারত কর্তৃপক্ষ। তাঁরা বলেন, এই ধরনের ভিত্তিহীন দাবি দুই দেশের কারোর জন্যই কল্যাণকর হবে না। দুই দেশের সম্পর্ককে ফাটল থেকে বাঁচাতে হলে এই ধরনের ভিত্তিহীন দাবি পরিত্যাগ করতে হবে।
ইসলামি ইমারত পাকিস্তানে রাজনৈতিক র্যালিতে হামলার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতিও দিয়েছে। সেই সাথে পাকিস্তানে অবস্থানরত ইসলামি ইমারত আফগানিস্তানের রাষ্ট্রদূত হামলার শিকার দল জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের প্রধান নেতা মাওলানা ফজলুর রহমানের সাথে সাক্ষাত করে সমবেদনা জানিয়েছেন।
এক বিবৃতিতে ইসলামি ইমারতের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের প্রধান একটি নীতি হলো, আফগানিস্তানের মাটিকে অন্য দেশের নিরাপত্তার বিরুদ্ধে ব্যবহার হতে না দেওয়া।
বিবৃতিতে তিনি পাকিস্তানকে লক্ষ্য করে বলেন, পাকিস্তানের উচিত নিজ দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা, নিজ দেশের সমস্যার সমাধান নিজেরা খুঁজে বের করা।
এরপর তিনি ১৪৪৪ হিজরিতে পাকিস্তানের ১৮ আইএস সদস্য যে আফগানিস্তানে হামলা চালিয়েছে, সেই বিষয়টি উল্লেখ করে বলেন, তখন ইমারতে ইসলামিয়া সরকার পাকিস্তানকে দোষারোপ না করে বরং নিজ দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। ইসলামি ইমারতের গোয়েন্দারা সন্ত্রাসবাদী হামলার পূর্বেই সঠিক তথ্য বের করতে সক্ষম হন এবং এর উপর ভিত্তি করে ইসলামি ইমারত সফলভাবে সন্ত্রাসবাদী হামলা মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছে। পাকিস্তান সরকারেরও উচিত একে অপরকে দোষারোপ না করে সন্ত্রাসবাদ সমাধানের উপায় খোঁজা।
জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ আরও বলেন, আফগানিস্তানের মাটিকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। তবে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে হামলা প্রতিরোধ করা ইসলামি ইমারতের দায়িত্ব নয়; বরং এই দায়িত্ব পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার। তারা নিজ দেশের বাজেটের বড় একটা অংশ ব্যয় করে পাকিস্তানকে যথাযথভাবে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য, আফগানিস্তানকে দোষারোপ করার জন্য নয়। ইমারতে ইসলামি সরকার আফগানিস্তানে ক্ষমতায় আসার দুই বছরের মধ্যে আফগানিস্তানে উল্লেখযোগ্যভাবে নিরাপত্তা ও শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তানে ক্রমাগত বেড়ে চলেছে সহিংসতা। তাই পাকিস্তান সরকারের দায়িত্ব নিজ দেশের জন্য সমাধান খুঁজে বের করা।
তথ্যসূত্র:
1. IEA Spokesperson Statement on Repeated Allegations by Pakistani Officials – https://tinyurl.com/2uc9f6vs
2. Involvement of Afghans in Pakistan’s deadly incidents baseless claim – https://tinyurl.com/47e46rpw
3. Afghanistan’s Ambassador to Pakistan condoles victims of the latest attack- https://tinyurl.com/3hacwnc6
খাওয়ারিজ আইএস আর বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা সংস্থা গুলো যেনো একই বৃন্তের ফুল!
কিছুদিন আগে প্রকাশিত হয়েছিল যে কানাডিয়ান সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস (𝗖𝗦𝗜𝗦) এর এজেন্ট মুহাম্মদ আল রাশিদ ছিল একজন 𝗜𝗦𝗜𝗦 হিউম্যান ট্র্যাফিকিং রিং লিডার এবং কানাডিয়ান এজেন্সি অ্যাসেট। এই মুহাম্মাদ আল রশিদ শামীমা বেগম, খাদিজা সুলতানা এবং আমিরা আব্বাসি নামের তিন স্কুলছাত্রীকে তার হ্যান্ডলারের পরামর্শে ফুসলিয়ে বৃটেন হতে সিরিয়াতে পাচার করে দেন।
আবার আফগান যুদ্ধের সময় আমেরিকা আইএস সদস্যদের হেলিকপ্টার এর সাহায্যে বিভিন্ন জায়গায় ট্রান্সপোর্ট করতে সাহায্য করারও প্রমান পাওয়া যায়, এরপর ২১ সালে তালেবানের বিজয়ের পর দেখা যায় আমেরিকা আর আফগানিস্তানের তৎকালীন প্রশাসন পালিয়ে যাওয়ার পূর্বে বিভিন্ন জেলখানায় আটক আই এস সদস্যদের মুক্ত করে দিয়ে যায়।
এছাড়া কয়েকদিন পূর্বে দেখেছিলাম যে আই এসের আফগান শাখার এক নেতা সি আই এ এর কন্ট্রাক্টর ছিল।
আরো অনেক অনেক এইধরনের ঘটনা আছে……
আই এস আর বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা সংস্থা সমূহের মধ্যকার এতো রসালো সম্পর্কের প্রেমরহস্য উদঘাটন অত্যন্ত জরুরি।
আশাকরি তালেবানদের গোয়েন্দা সংস্থা এবং আল কায়েদার মুজাহিদরা আইএস আর এসব গোয়েন্দা সংস্থার মাঝের পারস্পরিক সাহায্যের এই রহস্য উদঘাটন করে মুসলিম জাতিকে খাওয়ারেজ এবং নিকৃষ্ট অপরাধী ও মিথ্যুক আই এসের প্রতারণা সম্পর্কে জাতিকে সচেতন করবেন।
মাওলানা ফজলুর রহমান সাহেব সোফায় কিভাবে বসেছেন !? আর অপরদিকে ৩ পরাশক্তির কবর রচনা কারী ‘তালিবান’ এর একজন অন্যতম রাষ্ট্রদূত মোল্লা ভাই কিভাবে নতজানু হয়ে বসেছেন ! সুবহানাল্লাহ !!
এখান থেকেই বাস্তবতা (….) অনেক টা স্পষ্ট হয়ে যায় ।
বাংলাদেশী মিডিয়াগুলো আবার চরমভাবে মিথ্যা বলতে শুরু করেছে। এর একটা সমাধান অবশ্যই করা দরকার। হতে পারে সময় টিভি, যমুনা টিভি আর একাত্তর টিভিতে দেখানো কয়েকটা ভিডিও আগে একটু দিয়ে তারপর আফগানিস্তানের বাস্তব অবস্থা তথ্যের আলোকে প্রমান করে একটা ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করে উম্মাহ নেটওয়ার্ক বা জনপ্রিয় কোন চ্যানেলে আপলোড করা অথবা এসব মিডিয়াগুলোকে চরমভাবে একটা হুমকি দেওয়া যে বেশি উল্টোপাল্টা করলে কিন্তু কার্যালয় থাকবে না উড়ে যাবে। যাইহোক কোনভাবে এটা থামানো দরকার। যদি কর্তৃপক্ষ বিষয়টা একটু গুরুত্ব সহকারে নিতেন…!!!