সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন যুদ্ধবিমান ও তাদের মিত্ররা সোমালিয়ার দক্ষিণাঞ্চল ও কেন্দ্রীয় অংশে বেসামরিক বসতি লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালাচ্ছে। এতে প্রাণ হারাচ্ছেন দেশটির নিরপরাধ বেসরকারি জনগণ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ আগস্ট রবিবার সোমালিয়ার কেন্দ্রীয় হিরান রাজ্যের বুক আকাবেল বসতিতে আমেরিকান যুদ্ধবিমান থেকে বোমা হামলা চালানো হয়েছে। হামলাটি মোগাদিশু প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে চালানো হয়।
আঞ্চলিক সূত্র জানায় যে, ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী হারাকাতুশ শাবাবের নিয়ন্ত্রণে থাকায় ঐ বসতিতে বিমান হামলাটি চালানো হয়। এতে নারী ও শিশুসহ ৩ জন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত এবং আরও ৭ জন বেসামরিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।
এর আগে গত ১০ আগস্ট মধ্য সোমালিয়ার জালাজদুদ রাজ্যের গ্যালিক হারেরি বসতিতেও বিমান হামলা চালিয়েছে মার্কিন যুদ্ধবিমান। এতে অন্তত ৮ জন বেসামরিক মুসলিম হতাহত হন। সূত্রমতে, নিহতদের মধ্যে এক শিশুও ছিলো।
অপরদিকে গত ১৬ আগস্ট দক্ষিণাঞ্চলিয় জুবা রাজ্যের জিলিব শহরে কেনিয়ান যুদ্ধবিমানগুলি থেকে ৩টি হামলা চালানো হয়। এতে ৪ শিশু সহ একজন মহিলা নিহত হন এবং আরও ৪ জন আহত হয়। এছাড়াও এই অঞ্চলে বেসামরিক লোকদের বাড়িঘর এবং টেলিযোগাযোগ সংস্থার অফিস ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, আশ-শাবাব নিয়ন্ত্রিত রাজ্যগুলোতে নির্বিচারে বিমান হামলার মাধ্যমে জনগণকে আতংকিত করে তুলতে চায় পশ্চিমা ও তাদের মিত্র দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত, কেনিয়া ও তুরস্ক। এই দেশগুলোর ইচ্ছাকৃত এসব বিমান হামলার লক্ষ্য হচ্ছে সাধারণ মুসলিমরা, যাতে তারা ইসলামি শরিয়াহ্ দ্বারা শাসিত এসব অঞ্চল ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়।
অন্যদিকে সোমালিয়ায় বেসামরিক নাগরিকদের উপর বোমা হামলায় কোন জবাবদিহিতা নেই বা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এর কোন নিন্দাও নেই। সেই সাথে মিডিয়াগুলোও বিমান হামলার অপরাধ ধামাচাপা দেওয়ার তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে।
পশ্চিমা ও তাদের প্রভাবসম্পন্ন বাহিনীগুলোর এমন বর্বরোচিত হামলা এবং আন্তর্জাতিক মহল ও মিডিয়ার নীরবতা সত্ত্বেও হারাকাতুশ শাবাব প্রশাসন তার জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁরা চিকিৎসা, পূনর্বাসন ও আর্থিক সহায়তা মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থ জনগণের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছেন।
এক রিপোর্ট অনুযায়ী, পশ্চিমা ও তাদের মিত্রদের বিমান হামলায় নিহত, আহত এবং ক্ষতিগ্রস্থদের সর্বাত্মক সহায়তা দিচ্ছে আশ-শাবাব প্রশাসন। সম্প্রতি জিজু রাজ্যে এধরণের হামলায় বস্তুগত ক্ষতির শিকার প্রতিটি বেসামরিক পরিবারকে ৩১ হাজার ডলার করে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে আশ-শাবাব।
উল্লেখ্য যে, সোমালিয়ার এসব অঞ্চলে জনগণের মাথাপিছু দৈনিক আয় ১ ডলারেরও কম। সেখানে হারাকাতুশ শাবাব ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোকে ৩১ হাজার ডলার করে নগদ আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে, যা পরিবারগুলোকে শোক কাটিয়ে আর্থিক ও সামাজিকভাবে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করছে।