ভারতের হিন্দপিরির মক্কা মসজিদ এলাকার বাসিন্দা ও মাদ্রাসায় পড়ুয়া ছাত্র হুজাইফা ইমতিয়াজ (১২) ও তার সহপাঠিদের ‘সন্ত্রাসী’আখ্যা দিয়ে হিন্দু পুলিশ মারধর করেছে। গত ৩ জানুয়ারী এ ঘটনা ঘটে। ইমতিয়াজকে জোরপূর্বক ধরে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দুই পুলিশ কর্মকর্তা তাকে শারীরিকভাবে মারধর করে।
ঘটনাটি সম্পর্কে কথা বলার সময় হুজাইফা ইমতিয়াজ বলেছে, “আমি এবং প্রায় ৮-৯ জন ছাত্র লেক এলাকার দিকে যাচ্ছিলাম। কারণ আমাদেরকে সে এলাকার মসজিদে কোরআন খতম অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য দাওয়াত করা হয়েছিল।
এই পথের মধ্যেই রয়েছে হিন্দপিরি থানা। আমরা থানা অতিক্রম করার সময় কথা বলছিলাম এবং আমি স্বাভাবিকভাবেই আমার বন্ধুদেরকে মামু (যা পুলিশ আধিকারিকদের জন্য ব্যবহার করা হয়) বলে ডাকছিলাম। হঠাৎ, একজন লোক আমাদের মুখোমুখি হয়ে গালিগালাজ করতে শুরু করে এবং চিৎকার করে বলে, ‘কাকে মামু বলে ডাকলে?’ তারপর সে আমার ঘাড় ধরে থানায় নিয়ে যায়।”
ইমতিয়াজ অভিযোগ করেছে যে কুমার (এসআই) তাকে জোর করে তার ঘাড়ে ধরে নিয়ে যায় এবং তাকে মারধর করে। অন্যদিকে দ্বিতীয় কর্মকর্তা অজয় তাকে গালিগালাজ করে। ইমতিয়াজ বলে, “আমাদের সাথে একজন সিনিয়র ছাত্র আমাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য অফিসারদের কাছে অনুরোধ করেছিল। তিনি তাদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছিলেন এবং বলছিলেন যে আমি কেবল একটি শিশু, এবং অকারণে আমাকে গালি দেওয়া এবং মারধর করা অন্যায় ছিল। তিনি আরও বলেছিলেন যে এজন্য আমি একাধিকবার ক্ষমাও চেয়েছি।”
ইমতিয়াজ বলেছে যে পুলিশ অফিসাররা তাকে এবং তার বন্ধুদের বারবার সন্ত্রাসী বলেছে। “তারা বলতে থাকে টুপি পরিধানকারীরা সন্ত্রাসী” এবং মৌখিকভাবে আমাদের গালিগালাজ করে। তারপরে পাশের এলাকা থেকে এক হিন্দু লোক এসে আমাদের আরও মারধর করার জন্য অফিসারদের প্ররোচিত করে। সে আমাদেরকে মৌখিকভাবে গালিগালাজও করে।
আল কোরআনুল কারীম খতম অনুষ্ঠানে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ জানানো ব্যক্তির সাথেও পুলিশ কর্মকর্তারা দুর্ব্যবহার করেছে।
শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ জানানো ব্যক্তি বলেন আমি থানায় পৌঁছে পুলিশদের বলেছি, আমি আমার বাবার রুহের মাগফিরাতের জন্য একটি কোরআন খতমের অনুষ্ঠানে তাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি। আমি পুলিশকে প্রশ্ন করেছি কেন তারা মারধর করছে। হঠাৎ, এক অফিসার আমার কলার চেপে ধরে, ধাক্কা দেয় এবং উপস্থিত অন্যদের সাথে আমাকেও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত অন্য একজন জানিয়েছেন- হিন্দু পুলিশ অজয় কুমার বলেছে, “মাদ্রাসার সব সদস্যই সন্ত্রাসী। অনিল নামে আরেক কর্মকর্তা বলেছে, মাথায় টুপি পরা সবাই সন্ত্রাসী।”
তথ্যসূত্র:
1. ‘All Skull Cap Wearers Are Terrorists’: 12-year-old Madrassa Student Allegedly Assaulted by Police in Jharkhand
– http://tinyurl.com/rx88byh3