গত সপ্তাহে ভারতে কার্যকর হয়েছে চরম বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ)। ধর্মীয় বৈষম্যের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব প্রদানের এই আইনের তীব্র সমালোচনা করেছে ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তান।
কাতারে দোহায় ইমারতে ইসলামিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ের মুখপাত্র সুহাইল শাহীন হাফিযাহুল্লাহ ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের সমালোচনা করে বলেছেন, ভারতে সিএএ আইন জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য প্রযোজ্য হওয়া উচিত।
সম্প্রতি দ্য ওয়্যারকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, আফগানিস্তানে বসবাসরত শিখ বা হিন্দু কোন সংখ্যালঘুই নিপীড়নের শিকার হচ্ছে না। বরং তাদের আচার-অনুষ্ঠান পালনের স্বাধীনতা আছে এবং আইনের দৃষ্টিতে আমার যতটুকু অধিকার রয়েছে তাদেরও সমান অধিকার রয়েছে।
এরপর তিনি বলেন, “সিএএ তাদের দেশে বসবাসকারী নিপীড়িতদের জন্য হওয়া উচিত, তারা হিন্দু, মুসলিম বা শিখ যেই হোন না কেন?”
তিনি আরও বলেন, আফগানিস্তানে হিন্দু ও শিখরা যেমন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে না, আমি আশা করি ভারতে সংখ্যালঘু অর্থাৎ মুসলিমরাও নির্যাতিত হবে না।
উল্লেখ্য যে, গত ১১ মার্চ ভারত সরকার বিতর্কিত নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইনের বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছে। বিতর্কিত এই আইনে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে যেসব হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন ও পার্সি ধর্মীয় সংখ্যালঘু ভারতে গেছে, তাদের সকলকেই নাগরিকত্ব দেবে ভারত। তবে এখানে মুসলিমদের বিষয়ে কোন উল্লেখ না করে শুধু অমুসলিমদের সুরক্ষার কথাই উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, আসামে নাগরিকপঞ্জি করার পর, উপযুক্ত কাগজপত্র দাখিল করতে ব্যর্থ হওয়ায় ১১ লাখ হিন্দুর নাম নাগরিক তালিকা থেকে বাদ পরে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অমুসলিমদের নাগরিকত্ব সুরক্ষিত করতেই মূলত এই সিএএ আইন এনেছিল ভারতের হিন্দুত্ববাদী সরকার। ২০১৯ সালে আইনটি পাস হওয়ার পর ভারতজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় নয়াদিল্লিতে সহিংস সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে, এতে ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়, যাদের বেশিরভাগই মুসলিম। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক মুসলিম।
তথ্যসূত্র:
1. CAA Should Be for All Persecuted People ‘Irrespective of Religion’, Says Taliban
– https://tinyurl.com/2khayykw
2. Why is India’s Citizenship Amendment Act so controversial?
– https://tinyurl.com/bdcts3v8