গাজা উপত্যকার আল-শিফা হাসপাতালে ইসরায়েলের নির্মম হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা দিয়েছেন অবরোধ থেকে পালিয়ে আসা ফিলিস্তিনিরা। তারা জানায়, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ইসরায়েলি ট্যাংক এবং সাঁজোয়া বুলডোজারগুলি হাসপাতালটিকে ঘিরে রেখে হামলা চালিয়েছে।
প্রত্যাক্ষদর্শীদের একজন জামিল আল-আয়ুবি বলেন তিনি হাসপাতালের আঙিনায় অন্তত চারটি লাশের উপর দিয়ে ইসরায়েলি ট্যাংক এবং সামরিক বুলডোজার চালাতে দেখেছেন। জামিল আল-আয়ুবি হাসপাতালে আশ্রয় নেওয়া হাজার হাজার ফিলিস্তিনিদের মধ্যে একজন ছিলেন। তিনি বলেন অ্যাম্বুলেন্সগুলিও বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হয়।
হাসপাতাল থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূরে একটি পাঁচ তলা ভবনে বসবাসকারী করিম আয়মান হাতাত বলেছেন যে, বাড়িগিুলি বিস্ফোরণে কেঁপে উঠলে তিনি কয়েকদিন ধরে তার রান্নাঘরে লুকিয়ে ছিলেন। তিনি বলেন “না জানি কখন ট্যাংকগুলি আমাদের উপর গোলাবর্ষণ করে, সবসময় এই ভয়ে থাকতাম।”
প্রত্যাক্ষদর্শীদের আরেকজন বালক ফারুক মোহাম্মদ হামদ তার বাবাসহ একদল লোককে যেভাবে ইসরাইলিরা হত্যা করেছে, তার করুণ বর্ণনা দিয়েছেন। সে কোনোমতে সেখান থেকে বের হয়ে আসতে পেরেছে।
ফারুক মোহাম্মদ হামদ আল জাজিরাকে বলে, তারা ছিলেন আটজন। তাদেরকে গাজার মধ্যস্থলে অবস্থিত আল-শিফা হাসপাতালে পোশাক খুলে ফেলা হয়। তারপর তাদেরকে হাসপাতালের বিভিন্ন স্থানে ঘোরানো হয়। সবশেষে তাদেরকে হাসপাতালের টপ ফ্লোরে নিয়ে যাওয়া হয়।
বালকটি জানায়, ”সেখানে তাদেরকে প্রায় তিন ঘণ্টা ফেলে রাখা হয়। তারপর তারা বলে, ’তোমরা নিরাপদ, দক্ষিণে যেতে পারো।”
সে বলে, ‘আমরা দাঁড়ালাম। সাথে সাথে তারা গুলিবর্ষণ করল। আমরা আবার ফ্লোরে শুয়ে পড়লাম। তারপর স্নাইপাররা আমাদের লক্ষ্য করে গুলি করে মজা করতে থাকল।’
সে আরও বলে, মারা যাওয়ার আগে আমার বাবা আমাকে যতটা সম্ভব দৌড়াতে বললেন, তিনিও তখন দৌড়াচ্ছিলেন।… আমি দৌড় শুরু করেছিলাম। কিন্তু তার আগে চেয়ে দেখলাম, বাবার নিথর লাশ পড়ে আছে।
তথ্যসূত্র:
1.Tanks crushed bodies, ambulances at al-Shifa Hospital
– https://tinyurl.com/3pmn8se8
2. Palestinians Describe Bodies and Ambulances Crushed in Israel’s Ongoing Raid at Gaza’s Main Hospital
– https://tinyurl.com/vu6877r8