
বৈশ্বিক ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী সংশ্লিষ্ট আল-কায়েদা উপমহাদেশ (AQS), গত ৩১ মে রাতে দুই পৃষ্ঠার একটি লিখিত নিবন্ধন প্রকাশ করেছে। নিবন্ধটিতে ভারত-শাসিত কাশ্মীর জিহাদ নিয়ে দলটির নীতি ও অবস্থান পরিষ্কার করা হয়েছে।
নিবন্ধের শুরুতেই দলটির সমর্থকদের সতর্ক করে বলা হয়েছে যে, দ্বীনের শত্রুরা তাদের ইন্টেলিজেন্স ও গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে জিহাদী আন্দোলনের ক্ষতি করার চেষ্টা করে। আর এই লক্ষ্যে শত্রুরা জিহাদী আন্দোলনের নাম ব্যবহার করে শরীয়ত বহির্ভূত অনেক কাজ করে, পরে যার দায় জিহাদী আন্দোলনের উপর চাপিয়ে এই আন্দোলনের দুর্নাম করে। এমনিভাবে এসকল শত্রুরা নিজেদেরকে মুজাহিদ পরিচয় দিয়ে সাথীদের গ্রেফতার ও শহিদ করার চেষ্টা করে থাকে।
শত্রুর এমন ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে আন্দোলনের কর্মপন্থা এবং লক্ষ্য উদ্দেশ্য জনগণের সামনে স্পষ্টভাবে তুলে ধরার পরামর্শ দেওয়া হয়। যাতে শত্রু বাহিনী নিজেদের দ্বারা সংঘটিত শরিয়ত বহির্ভূত কার্যকলাপের দায় মুজাহিদদের উপর চাপাতে না পারে। আর জনসাধারণও যেনো শত্রুর এমন ষড়যন্ত্র সম্পর্ক অবগত থাকেন।
নিবন্ধটিতে দলটির সমর্থক ও সাথীদের পরামর্শ দিয়ে বলা হয়, তারা যেনো জিহাদী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন এবং তাদের দেওয়া নির্দেশনা মেনে চলেন। সেই সাথে জিহাদি আন্দোলনের সুপরিচিত, নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বস্ত মিডিয়া ছাড়া অন্য কোনো মাধ্যম থেকে দলীয় অবস্থান এবং কর্মপন্থা গ্রহণ না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এমনিভাবে কাশ্মীর জিহাদে আল-কায়েদার কাতারে দাড়িয়ে যারা জিহাদ করতে চান, তাদের উদ্দেশ্যে বলা হয়, তারা যেনো এমন সব ব্যক্তি ও গ্রুপ থেকে সতর্ক থাকেন, যারা নিজেদেরকে আল-কায়েদার সাথে সম্পৃক্ত বলে প্রচারণা চালায়। বরং এক্ষেত্রে সমর্থকদের উচিত জামাআতের অফিসিয়াল গণমাধ্যমগুলোর মাধ্যমে প্রকৃত অর্থে জামাত সম্পৃক্ত ব্যক্তি বা গ্রুপ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা এবং কর্ম ক্ষেত্রে জামাতের পলিসি ও নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করা।
দলটি নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে গিয়ে উল্লেখ করে যে, “আল-কায়েদা কাশ্মীরে শরিয়াহ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এমন জিহাদের প্রতি আহ্বান করে, যা তাগুতের অধীনতা থেকে মুক্ত। বরং ঘরে ও বাইরে এবং নিজেদের অভ্যন্তরে একমাত্র মুহাম্মদ ﷺ এর আদর্শ অনুসরনকে নিজেদের জন্য অনিবার্য বলে মনে করে।”
এসময় কাশ্মীরের অন্যান্য জিহাদি দলগুলোকেও শরীয়াহ নীতি মেনে চলার আহ্বান জানায় আল-কায়েদা। সেই সাথে এই অঞ্চলের সকল সশস্ত্র দলগুলোর মধ্যে সমর্থন ও সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয় আল-কায়েদা।
আল-কায়েদা আরও স্পষ্ট করে যে, “আমরা জিহাদের ময়দানে সর্বপ্রকার দলাদলি এবং বিভক্তির প্রতি নিরুৎসাহিত করি। আমরা ‘হয়তো শরিয়ত নয়তো শাহাদাত’ স্লোগানে বিশ্বাসী মুজাহিদদের জোর দিয়ে বলি, তারা যেনো কাশ্মীরের অন্যান্য সকল মুজাহিদ ও জনসাধারণকে নিজেদের ভাই মনে করে। আমরা কুরআন থেকে সবক নিই কাফেরদের প্রতি কঠোরতার এবং নিজেদের প্রতি নমনীয়তার। ফলে আমরা কাশ্মীরে থাকা কোনো জিহাদি গ্রুপকে নাকচ করিনি। আর আমাদের ঘৃণা এবং শত্রুতা কোনো জিহাদি দলের সঙ্গে নয়। বরং আমাদের শত্রুতা ঐসমস্ত তাগুতি এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে, যারা কাশ্মীর আন্দোলনের সমর্থক ও অনুরাগী সেজে কাশ্মীরি সংগঠনকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে, মজলুম কাশ্মীরিদের ত্যাগ তিতিক্ষা নিয়ে বানিজ্য করছে।
সবশেষ কাশ্মীর সহ পুরো হিন্দুস্তান জুড়ে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ভারতীয় বাহিনী ও হিন্দুদের নৃশংসতা কথা উল্লেখ করে বলা হয়, কাশ্মীর জিহাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, মুসলমানদের দ্বীন, ইজ্জত, প্রান ও সম্পদ হেফাজত করা। সেই সাথে মুশরিকদের হাত থেকে কাশ্মীরকে স্বাধীন করা। আর এটি অর্জন তখনই সম্ভব হবে, যখন কাশ্মীরে থাকা সকল মুজাহিদ ঐক্যবদ্ধ হবেন, জিহাদি আন্দোলনকে ডাকাতদের হাত থেকে রক্ষা করবেন এবং কোনো তাগুতি শাসনের পরিবর্তে পূর্ণাঙ্গ শরিয়াহ্ শাসনকে আন্দোলনের লক্ষ্য হিসেবে স্থির করবেন।