২ আগস্ট শুক্রবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সারাদেশে গণমিছিল করেন ছাত্র-জনতা। এসময় দেশজুড়ে পুলিশ এবং আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের সশস্ত্র সদস্যরা আন্দোলনকারীদের উপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে। এসব হামলায় এখন পর্যন্ত ২ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন অগণিত ছাত্র-জনতা।
প্রথম আলোর সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর উত্তরায় গণমিছিল কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের কারও কারও হাতে ধারালো অস্ত্র দেখা গেছে। পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে সিলেট ও খুলনায়। লক্ষ্মীপুরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় এক যুবককে অস্ত্র হাতে বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া দিতে দেখা গেছে। নরসিংদীতে আওয়ামী লীগ–ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালিয়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৩৭০ জন।
হবিগঞ্জে আন্দোলনকারীদের উপর পুলিশ হামলা চালালে মোস্তাক মিয়া নামে এক শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষের ঘটনায় জেলা হাসপাতালে অন্তত ৫০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, খুলনায় আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে এক পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রথম আলো।
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলনকারীদের উপর হামলা চালায় সরকারি বাহিনী। এতে অন্তত আড়াই শ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
জুমার নামাজ শেষে লক্ষ্মীপুর জেলা শহরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র এবং আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। সংঘর্ষের পর একটি ভিডিওতে দেখা যায়, অস্ত্র হাতে সুমন নামের এক যুবক শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করছে। সে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি এ কে এম সালাউদ্দিন ওরফে টিপুর গাড়িচালক।
নরসিংদীতে দুপুর থেকে শহরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ব্রাহ্মণদী এলাকায় জড়ো হন। বেলা আড়াইটার দিকে গণমিছিল নিয়ে তারা উপজেলা মোড়ের প্রেসক্লাব অভিমুখে রওনা হন। মিছিলটি উপজেলা মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ বাধা দেয়। তখন বিক্ষোভকারীরা সেখানে দাঁড়িয়ে ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ বলে স্লোগান দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক এস এম কাইয়ুম দলীয় নেতা–কর্মীদের নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরপর ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা হাতে বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালায়। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে প্রথম আলো।
তথ্যসূত্র:
১. দেশের বিভিন্ন স্থানে গণমিছিল, সংঘর্ষ, নিহত ২
– https://tinyurl.com/mcmkwhd3