বন্যায় দক্ষিণবঙ্গের কোন জেলায় কী পরিস্থিতি

0
169
বন্যায় দক্ষিণবঙ্গের কোন জেলায় কী পরিস্থিতি

ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিতে মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের কয়েকটি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। জেলাগুলো ভারতের ত্রিপুরা সংলগ্ন। আজ বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সকালে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এসব জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বৃষ্টিও অব্যাহত আছে। আবহাওয়া অফিস আরও ৪৮ ঘণ্টার বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের ওয়েবসাইটের সকাল ১০টার তথ্য অনুযায়ী, কুশিয়ারা, মনু, ধলাই, খোয়াই, মুহুরী, ফেনী ও হালদা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। এর মধ্যে ফেনীর মুহুরী নদীর পানি গত ৪০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে।

হবিগঞ্জে খোয়াই নদের পানি বিপৎসীমার ১৯৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী হাবিব রেজা। জেলায় এখনো বৃষ্টি হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এ জেলায় ১৭৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় বাঁধ ভেঙে গেছে। এই জেলায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ৩৪টি গ্রামের ৫ শতাধিক পরিবার বন্যাকবলিত অবস্থায় আছে।

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার কামারখাড়া অংশে গোমতী নদীর আলে ফাটল ধরেছে। ফাটল অংশ দিয়ে পানি আসছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে বেড়িবাঁধে আশ্রয় নিয়েছে পাঁচ শতাধিক পরিবারের সদস্য।

স্থানীয় বাসিন্দা এনামুল হক বলেন, দুই দিন ধরে বেড়িবাঁধের অবস্থা খারাপ। সকালে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। এ সময় কামারখাড়া অংশে ফাটল দেখা দেয়। আনিসুর রহমান নামের এক বাসিন্দা বলেন, তার মাছের ঘের আছে। টানা তিন রাত নির্ঘুম কাটছে তার।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান বলেন, আজ সকাল ৭টায় পানি বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি আরও বাড়তে পারে। আর আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা সৈয়দ আরিফুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় কুমিল্লায় ২২০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আরও ৪৮ ঘণ্টা বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে।

নোয়াখালীর আট উপজেলাতেই পানি বেড়েছে। এখানে চার দিন ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির পানি আটকে থেকে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। জেলার সেনবাগ, বেগমগঞ্জ, কোম্পানীগঞ্জ, সোনাইমুড়ী, চাটখিল ও নোয়াখালী সদরের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।

খাগড়াছড়িতে ২৪ ঘন্টা পর আবার ডুবল ঘরবাড়ি। জেলার ৯টি উপজেলায় বর্তমানে পানিবন্দী হাজারো পরিবার। পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে খাগড়াছড়ির নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছিল গত মঙ্গলবার বিকেলে। পানি কমে গেলে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বুধবার সকালে লোকজন নিজের বাড়িতে চলে যান। তবে আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা থেকে হঠাৎ ঢলের পানি নেমে আসে। শহরের অধিকাংশ নিম্নাঞ্চলে পানি বাড়তে থাকে।

জেলা শহরের ন্যান্সি বাজার, শালবন, কলাবাগান ও কুমিল্লা টিলাসহ কয়েকটি এলাকায় বসতঘরের পাশে পাহাড়ধস হয়েছে। খাগড়াছড়ি নারানখাইয়া এলাকার মোহিনী দেবী চাকমা (৬৭) বলেন, এত বছর বয়সে তিনি এমন বন্যা কখনো দেখেননি।


তথ্যসূত্র:
১. ঢল-বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
– https://tinyurl.com/2dmawnun

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধপালানোর সময় আটক একাত্তর টিভির ফারজানা রুপা ও শাকিল
পরবর্তী নিবন্ধফেনী শহরও তলিয়ে গেছে