সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় দারা এবং সুওয়াইদা সিটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন প্রতিরোধ যোদ্ধারা

2
853

উত্তর সিরিয়ায় গত ২৭ নভেম্বর মুজাহিদিনরা আসাদ বাহিনীর বিরুদ্ধে “রদ্দুল উদওয়ান” নামে সামরিক অপারেশন শুরু করেন। এই অপারেশনের মাধ্যমে মুজাহিদিনরা ৯ দিনে উত্তরাঞ্চলের আলেপ্পো, ইদলিব এবং হামা সিটির নিয়ন্ত্রণ নেন, আর হোমস সিটির কেন্দ্রীয় শহরের উপকণ্ঠে অবস্থান নেন।

স্থানীয় সূত্রমতে, গত ৬ ডিসেম্বর দুপুর ৩টা নাগাদ মুজাহিদিনরা হোমসের কেন্দ্রীয় শহরের উপকণ্ঠে পৌঁছান এবং দুইদিক থেকে শহরের দিকে অগ্রসর হতে থাকেন। তবে এসময় মুজাহিদিনরা কেন্দ্রীয় শহরে প্রবেশ না করে শহরের উপকণ্ঠে শক্তিবৃদ্ধি করতে থাকেন এবং M4 মহাসড়কের আশপাশের এলাকাগুলোতে অগ্রগতি জারি রাখেন।

হোমসে যখন মুজাহিদিনরা শক্তিবৃদ্ধি করছেন, ঠিক সেই মুহুর্তে মুজাহিদদের সাথে সংহতি প্রকাশ করে দক্ষিণাঞ্চলীয় দারা ও সুওয়াইদা সিটির জনগণ এবং স্থানীয় সশস্ত্র যোদ্ধারা আসাদ বাহিনীর সামরিক অবস্থানগুলোতে হামলা চালানো শুরু করেন।

রদ্দুল উদওয়ান অপারেশন রুমের তথ্য অনুযায়ী, গত ৬ ডিসেম্বর দুপুরের পর থেকে দারা ও সুওয়াইদা সিটিতে আসাদ বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াইয়ে অবতীর্ণ হন প্রতিরোধ যোদ্ধারা। স্থানীয় সময় রাত ৯টা নাগাদ, প্রতিরোধ যোদ্ধারা দারা সিটির ৭০ শতাংশ এবং সুওয়াইদা সিটির কেন্দ্রীয় শহর সহ অন্তত ৫০ শতাংশ এলাকার উপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন, একই সাথে প্রতিরোধ যোদ্ধারা দারার প্রাদেশিক রাজধানী সম্পূর্ণভাবে ঘেরাও করেন। প্রতিরোধ যোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রিত এই অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে ৬৪টি গ্রাম ও শহর। মুক্ত শহরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল: সুওয়াইদা সিটির কেন্দ্রীয় শহর সুওয়াইদা, দারা সিটির বাসর আল-হারির, নাওয়া, ইনখিল এবং মাহজা শহর।

এসময় প্রতিরোধ যোদ্ধারা পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলীয় দারা সিটির গুরুত্বপূর্ণ তাবলিন চেকপয়েন্ট এবং কেন্দ্রীয় কারাগার সহ আসাদ বাহিনী থেকে ৪৭টিরও বেশি সামরিক চেকপয়েন্ট নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন। সেই সাথে মুজাহিদিনরা আসাদ বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ৫২ তম ট্যাংক ব্রিগেড, পুলিশ স্টেশন, সুওয়াইদা গভর্নর ভবন এবং আবদিন ব্রিগেডের ক্যাম্প সহ ১৭টি সামরিক ঘাঁটি শত্রু মুক্ত করতে সক্ষম হন। এসময় প্রতিরোধ যোদ্ধারা রাজধানী দামেস্কের সাথে সংযোগকারী M5 হাইওয়ে এবং জর্ডান সীমান্ত ক্রসিংয়ের উপরও নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন।

এমন পরিস্থিতিতে আসাদ সরকারের নিরাপত্তা কমিশন নির্দেশ জারি করে যে, আগামী কয়েক ঘন্টার মধ্যে দারা ছেড়ে সেনাবাহিনী যেনো রাজধানী দামেস্কে এসে পৌঁছায়। নিরাপত্তা কমিশনের নির্দেশের পর রাজধানী রক্ষায় আসাদ বাহিনী দক্ষিনাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে পিছু হটতে থাকে, এর ফলে প্রতিরোধ যোদ্ধারা বিনা যুদ্ধে অনেক এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেন। তবে প্রাদেশিক রাজধানী এবং দারার দক্ষিণাঞ্চলের কিছু কিছু এলাকায় তীব্র সংঘর্ষ হয়। অবশেষে প্রতিরোধ যোদ্ধারা মধ্যরাতে দারা এবং সুওয়াইদা সিটির সম্পন্ন নিয়ন্ত্রণ নেন। ফলে এদিন ২৪ ঘন্টারও কম সময়ের মধ্যে মুজাহিদিনরা দক্ষিণাঞ্চলের ২ হাজার ৬০০ বর্গকিলোমিটারেরও বেশি এলাকা জালিম আসাদ বাহিনী থেকে মুক্ত করতে সক্ষম হন।

2 মন্তব্যসমূহ

    • হকপন্থি দলগুলোর বৈশিষ্ট্য জেনে তার সাথে HTS কে মিলাতে পারেন ইনশাআল্লাহ্‌। তাহলে হকপন্থি দলের বৈশিষ্ট্য জানা হলো, যা সামনে নিজের অনেক উপকার করবে ইনশাআল্লাহ্‌। আল কায়েদাকেও একইভাবে যাচাই করে নিবেন। তাহলে বিশ্বাস আরো পোক্ত হবে ইনশাআল্লাহ্‌। কোন দল তো হকের মাপকাঠি নয়, বরং দল হকের উপর চললে সেটাতে অই সময় হকপন্থি বলা হয়।

      আপনার প্রশ্নের উত্তর আমাদের পক্ষ থেকে এমন-
      বাশারের বিরুদ্ধে তাদের যে যুদ্ধ তা সঠিক, এক্ষেত্রে আমাদের পূর্ণ সমর্থন আছে আলহামদুলিল্লাহ্‌। তারা শারিয়াহ অনুযায়ী ঠিক কাজ যেগুলো করবে তা ভালো, যা শারীয়াহ বহির্ভুত সেগুলোর ব্যাপারে আমরা তাদের কোন সমর্থন করি না। পূর্বে তাদের অনেক অন্যায়, জুলুমের চিত্র উঠে এসেছে। সামনে দিনে কি হয় তার অপেক্ষায় আছি। দুয়া করি আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে যেন পূর্ণ হিদায়েত দেন এবং শারিয়াহ অনুযায়ী চলার তাওফিক দেন। আমীন

      আল কায়েদা থেকে আলাদা হওয়ার বিষয়টি জটিল আলোচনা। তবে বর্তমানে তাদের কার্যক্রমকে বিচার করার জন্য এই মুহুর্তে এটি এত জরুরী কোন বিষয় নয় ইনশাআল্লাহ্‌

Leave a Reply to Md taher প্রতিউত্তর বাতিল করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধগণহত্যার ৪২৬তম দিনে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের জোরালো আক্রমন
পরবর্তী নিবন্ধগাজায় হাসপাতাল-শরণার্থী শিবিরে বর্বর ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৫০