
রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে গ্রেফতার করানোর চেষ্টার জেরে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। শুক্রবার (০৭ মার্চ) সন্ধ্যায় শুরু হওয়া এ সংঘর্ষ গভীর রাত পর্যন্ত চলে। সংঘর্ষ চলাকালে কয়েকটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। তিনটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
এই ঘটনায় পুলিশের নগর বিশেষ শাখার (সিটিএসবি) একজন সদস্যসহ চারজন আহত হয়েছে।
সংঘর্ষের সময় দড়িখড়বোনা এলাকায় তিনটি মোটরসাইকেলও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি মোটরসাইকেল আজকের পত্রিকার রাজশাহীর মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার জাহিদ হাসান সাব্বিরের। সংঘর্ষের সময় তিনি ঘটনাস্থলে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন। তার মোটরসাইকেলটি সড়কের পাশে রাখা ছিল। একটিপক্ষ তাতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।
স্থানীয় সূত্র গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মহিলা দল নেত্রী লাভলীসহ তার অনুসারীরা কাদিরগঞ্জ এলাকায় একটি বহুতল ভবন ঘেরাও করে। এই ভবনের একটি ফ্ল্যাটে পরিবারসহ থাকেন নগরীর বোয়ালিয়া (পশ্চিম) থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ বাবু ওরফে ব্যাটারি বাবু। আওয়ামী সরকারের পতনের পর ব্যাটারি বাবু ও তার ভাই সাব্বির বাবুর বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে মামলা হয়েছে।
ওই ভবনের সামনে লাভলী দাবি করেন, তারা ভবনের ভেতরে আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তাক আহমেদ বাবুকে ঢুকতে দেখেছে। তারা ভবনটি ঘিরে রাখলে যৌথ বাহিনী অভিযানে আসে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে অভিযান চালিয়ে ওই ভবনে মোস্তাককে পাওয়া যায়নি। যদিও ভবনের নিরাপত্তা প্রহরীর খাতায় প্রবেশকারী হিসেবে মোস্তাকের নাম দেখা যায়। এছাড়া সিসি ক্যামেরার ফুটেজেও মোস্তাককে তার স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে ভবনে ঢুকতে দেখা যায়।
মোস্তাক আহমেদকে না পেলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভবনটি ঘিরে রাখে। পরে সেখান থেকে মোস্তাক আহমেদের ভাই সাব্বির বাবুকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু মোস্তাকের নাগাল পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় সূত্র বলছে, মোস্তাক আহমেদ বাবুকে না পাওয়ার জন্য মহিলা দল নেত্রী লাভলী সাবেক যুবদল নেতা মারুফ হোসেন জীবনকে দায়ী করে। মারুফের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে সে বিপুল পরিমাণ টাকার বিনিময়ে ব্যাটারি বাবুকে শেল্টার দিয়ে আসছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মারুফের লোকজন সন্ধ্যায় দড়িখরবোনা এলাকায় লাভলীর বাড়িতে হামলা করে। তারা বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে চলে গেলে লাভলীর অনুসারীরা দড়িখড়বোনা রেল লাইনের পাশে মারুফের ব্যক্তিগত কার্যালয় ভাঙচুর করে। এরপর দুপক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বেঁধে যায়। ধাওয়া-পালটা ধাওয়া চলে দড়িখরবোনা, উপশহর মোড়, রেলগেট, সপুরা ও শালবাগান এলাকায়। এ সময় হাতে হাতে ধারাল অস্ত্র দেখা গেছে। কয়েকটি হাতবোমারও বিস্ফোরণ হয়।
তথ্যসূত্র:
১. আ.লীগ নেতার গ্রেফতার নিয়ে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষ, বোমা বিস্ফোরণ
– https://tinyurl.com/2n3tx5ra