
কট্টর ইসলাম বিদ্বেষী মোদি সরকারের সময় ভারতে মুসলিম নির্যাতনের ঘটনা যেনো এখন নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। লাউড স্পিকারে আজান দেয়ায় ঈমামের বিরুদ্ধে মামলাসহ শুক্রবারে হোলির জন্য মুসলিমদের নামাজ আদায় করতে না দেয়ার ঘোষণার পর এবার বার্ষিক শিমগা মিছিলের সময় রত্নগিরির রাজাপুর গ্রামের একটি মসজিদের দরজা ভেঙে মুসল্লিদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে ভারতীয় কট্টর হিন্দুত্ববাদিরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা দ্য হিন্দুকে জানিয়েছেন, ১২ মার্চ, বুধবার সন্ধ্যা ৭:৩০ মিনিটে গ্রামের জওহর চকে শিমগা মিছিলের সময় এই ঘটনা ঘটে। মাদাচি মিরাবনুক নামে পরিচিত একটি লম্বা কাঠের গাছের গুঁড়ি বহনকারী এই মিছিলটি রাজাপুর গ্রামের সাখালকরওয়াড়ি থেকে শুরু হয়ে দুই কিলোমিটার দূরে ধোপেশ্বর মন্দিরে শেষ হয়।
মসজিদের গেটের ভিতরে দাঁড়িয়ে থাকা একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “প্রতি বছর তারা [মসজিদের] দরজা পর্যন্ত ট্রাঙ্কটি নিয়ে আসে; আমরাও মিছিল দেখতে যাই। এবারও তারা সিঁড়ি পর্যন্ত এসেছিল। আমি জানি না কেন তারা ট্রাঙ্কটি গেটে ধাক্কা দিয়ে ঢুকিয়েছিল। প্রথম প্রচেষ্টায়, তারা গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে। আমরা তাদের বাইরে ঠেলে দিয়ে গেটটি বন্ধ করে দিয়েছিলাম, এর পর তারা আবার আক্রমণাত্মকভাবে ট্রাঙ্কটি গেটে ঢুকিয়ে দেয়। এই ঘটনায় কমপক্ষে দুইজন আহত হয়েছেন”।
রাজাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সদস্যও ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরও বলেন, “প্রতি পাঁচ বছর অন্তর হোলি উৎসবের সময় মসজিদের সিঁড়িতে কয়েক মিনিট বিরতি নিয়ে একটি শোভাযাত্রা বের করা হয়। কিন্তু এবার বিষয়টি আরও তীব্র হয়ে ওঠে। আমরা ভিড়ের মধ্যে ছিলাম, সবাই নাচছিল, গান করছিল, হঠাৎ আমরা দেখতে পেলাম কয়েকজন লোক মসজিদের গেটে ট্রাঙ্কটি আক্রমনাত্মকভাবে ধাক্কা দিচ্ছে”।
এআইএমআইএম সাংসদ আসাদুদ্দিন ওয়াইসি বলেন, “পুলিশের উপস্থিতিতে মসজিদে হামলা চালানো লজ্জাজনক।”
তিনি দাবি করেন যে গেটে আক্রমণকারী ২৫ থেকে ৩৫ জনকে বিএনএসের ধারা ১৯১ (দাঙ্গা), ১৯২ (দাঙ্গা সৃষ্টির জন্য উস্কানি), ১৯৬ (শত্রুতা প্রচার, ২৯৮ (উপাসনাস্থল অপবিত্র করা), ২৯৯ (ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা), ৩০০, ৩০১ (উপাসনাস্থলে অনুপ্রবেশ) এবং ৩০২ (ব্যক্তির ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা) এর অধীনে মামলা করা হোক। তিনি তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারেরও দাবি জানান।
তিনি আরও বলেন, যদি তার অভিযোগ গুরুত্বের সাথে না নেওয়া হয়, তাহলে তিনি বোম্বে হাইকোর্টে একটি ফৌজদারি রিট পিটিশন দায়ের করবেন।
তথ্যসূত্র:
1. After Ratnagiri mosque gates rammed during religious procession, police say there was no forcible entry
– https://tinyurl.com/49rda6jt