
ভারতের উত্তর প্রদেশের ফাতেহপুর জেলায় ১৭ বছর বয়সী এক মুসলিম ছাত্রকে নির্মমভাবে পিটিয়ে শহীদ করেছে তিন হিন্দুত্ববাদী যুবক। নিহত যুবকের নাম আরিশ খান, তিনি স্থানীয় মহার্শি বিদ্যা মন্দির সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। জানা গেছে, অভিযুক্তদের একজন উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বজরং দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
ভারতীয় গণমাধ্যম মাকতুব মিডিয়া জানায়, গত ২৩ জুলাই স্কুল থেকে বের হওয়ার কিছুক্ষণ পর তিন প্রাক্তন ছাত্র তাকে রড ও লাঠি দিয়ে নির্মমভাবে আক্রমণ করে গুরুতর আহত করে। পরবর্তীতে আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৬ জুলাই মৃত্যু হয়।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর অভিযুক্তদের সমর্থকেরা রাস্তায় মোটরসাইকেল র্যালি করে এ হত্যাকাণ্ড প্রকাশ্যে উদযাপন করেছে। এ সময় তারা মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক স্লোগান এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় হত্যাকাণ্ডকে মহিমান্বিত করে আপত্তিকর পোস্ট ছড়িয়েছে। এতে স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে আরও তীব্র উদ্বেগ ও নিরাপত্তাহীনতার সৃষ্টি হয়েছে।
অভয় দ্বিবেদী নামে খুনির এক সমর্থক ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও পোস্ট করে লিখেছে, ‘জলদি ওয়াপসি হোগি মেরে শের কি’ অর্থাৎ ‘আমার সিংহ খুব শিগগিরই ফিরে আসবে’। পোস্টটিতে সে অভিযুক্তদের সঙ্গে নিজের ছবি আপলোড করেছে। আরেকটি পোস্টে সে লেখে, ‘ফুল সাপোর্ট, মেরি জান’ অর্থাৎ ‘তোমারকে পূর্ণ সমর্থন করছি, প্রিয়’।
খুনিদের অন্য এক সমর্থক ইনস্টাগ্রামে আরিশ খান ও মুসলিম সম্প্রদায়কে উদ্দেশ্য করে স্পষ্ট ভাষায় কুরুচিপূর্ণ ও বিদ্বেষমূলক গালাগালি পোস্ট করেছে।
তার পোস্টের গালিগুলো ছিল খুবই ঘৃণাজনক এবং মুসলিমদের প্রতি বিদ্বেষপ্রসূত। পরবর্তীতে এই দুটি অ্যাকাউন্টই বন্ধ হয়ে যায়। তবে আরিশের দাদা এই পোস্টগুলোর স্ক্রিনশট পুলিশকে প্রমাণ হিসেবে জমা দিয়েছেন।
স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায় এবং এলাকাবাসী এই হত্যাকাণ্ডটিকে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের জেরে সংঘটিত একটি লিঞ্চিং হিসেবে উল্লেখ করছেন। অভিযুক্ত তিনজন হলো হর্ষবর্ধন পাণ্ডে, দীপক সাভিতা এবং ভারত সরকার, যাদের বিরুদ্ধে পরিবারের পক্ষ থেকে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তথ্যসূত্র:
1. Outrage in UP’s Fatehpur after Muslim student beaten to death; supporters of accused celebrate killing online
– https://tinyurl.com/3xyzwmjf


