সেই কুখ্যাত গাদ্দার পারভেজ মোশাররফের করুণ পরিণতি!

0
1548
সেই কুখ্যাত গাদ্দার পারভেজ মোশাররফের করুণ পরিণতি!

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় পাকিস্তানের সাবেক সামরিক শাসক মুরতাদ পারভেজ মোশাররফের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছে দেশটির আদালত। গত মঙ্গলবার দেশটির বিশেষ আদালতের তিন সদস্যের বেঞ্চ এই রায় দেয়।
১৯৯৯ সালের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অপসারণ করে ২০০৮ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান শাসন করে মোশাররফ। শাসনকালীন সময় ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে নানা ধরণের অপকর্মে লিপ্ত হয় এই মুরতাদ মোশাররফ। গত ২০১৩ সালে দেশটির সাবেক এই স্বৈরশাসককে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় অভিযুক্ত করা হয়। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা এ মামলাটি ২০১৩ সাল থেকে ঝুলে ছিলো। এরপরই এই রায় এলো।
এপিএমএলের আফজাল সিদ্দিকী জানান, পারভেজ মোশাররফ অ্যামিলয়ডোসিসে ভুগছে। এই বিরল রোগের জন্যই মোশাররফ এখন দুবাইতে চিকিৎসার জন্য ভর্তি রয়েছে। এই রোগ তার স্নায়ুতন্ত্রকে দুর্বল করে দিচ্ছে।
এই রোগের কারণে শরীরে কোনো কোনো অঙ্গে অ্যামিলয়িড তৈরি হয়। অ্যামিলয়িড হলো অনিয়ন্ত্রিত প্রোটিন যেটা অস্থিমজ্জায় তৈরি হয়।
রায়ে বলা হয়েছে, মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার আগে যদি মোশাররফ মারা যায়, তাহলে তার মৃতদেহ ডি–চক ইসলামাবাদে নিয়ে এসে তিনদিন ঝুলিয়ে রাখা হবে।
এদিকে, মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর পাকিস্তানের ঐতিহাসিক লাল মসজিদের সম্মানিত খতিব মাওলানা গাজী আব্দুল আজীজ দাঃবাঃ সাংবাদিকদের এক সাক্ষাতকার দেন। সাক্ষাতকারটি জামিয়া হাফসার ফেসবুক পেজে প্রকাশিত হয়েছে। সাক্ষাতকারে পারভেজ মোশাররফের মৃত্যুদণ্ডের রায়ে হযরতের প্রতিক্রিয়া কেমন জানতে চাইলে, তিনি প্রথমে আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করে বলেন, আমেরিকার কাছে ঈমান বিক্রেতা এই গাদ্দার পারভেজ মোশাররফ ২০০৭ সালে ঐতিহাসিক লাল মসজিদ এবং এর সাথে সংযুক্ত জামিয়া হাফসা মাদরাসায় সামরিক সন্ত্রাসীদের দিয়ে বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে লাল মসজিদের সম্মানিত খতিব আল্লামা গাজি আব্দুর রশিদ রহিমাহুল্লাহ সহ শত শত শিক্ষার্থীকে শহীদ করে যে অপরাধ করেছে, তাকে যদি লাখ বারও ফাঁসি দেওয়া হয়, তাহলেও তার অপরাধের যথার্থ শাস্তি হবে না। সাক্ষাতকারটিতে তিনি অন্যান্য জালেম শাসকদেরকে মোশাররফের করুণ পরিণতি থেকে শিক্ষাগ্রহণ করার কথাও বলেছেন।

বিশ্বসন্ত্রাসী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তথাকথিত “সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ”-এর নামে আফগানিস্তানে যে হামলা শুরু করে তাতে আমেরিকার পক্ষ নিয়ে মুসলিমদের বিরুদ্ধে আগ্রাসী ছিল সন্ত্রাসী পারভেজ মোশাররফও।

মোশাররফ বলেছিল, তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কলিন পাওয়েল ফোনে তাকে আলটিমেটাম দিয়েছে যে: “আপনি আমাদের সাথে আছেন অথবা আমাদের বিপক্ষে।” মোশাররফ তখন আফগান তালেবানদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে আমেরিকা ও ন্যাটোকে পাকিস্তানের ভূমি ব্যবহার করে আফগানিস্তানে হামলার অনুমতি দেয় ও পাকিস্তানের কয়েকটি অঞ্চলে মার্কিন ড্রোন হামলার অনুমোদন দিয়ে মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে সাহায্য করে।

২০০৭ সালে গাদ্দার মোশাররফ পাকিস্তানের মুরতাদ সামরিক বাহিনীকে রাজধানী ইসলামাবাদের লাল মসজিদে হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল। জামিয়া হাফসা মহিলা মাদ্রাসা এবং লাল মসজিদে পাকিস্তানী সেনাদের বর্বরোচিত হামলায় সেদিন বহু নিরীহ মুসলিম-মুসলিমা শাহাদাতবরণ করেছেন।

এছাড়াও, আমেরিকার গোলাম গাদ্দার পারভেজ মোশাররফ ক্ষমতায় থাকাকালীন বোন আফিয়া সিদ্দিকাসহ বহু নিরীহ নিরপরাধ মুসলিমদেরকে আমেরিকার কাছে বিক্রি করে দিয়েছিল। তাই আজও কারাগারের অন্ধকার থেকে মুরতাদ পারভেজ মোশাররফের বিরুদ্ধে আল্লাহর কাছে অশ্রু ফেলে দোয়া করেন শত শত নিপীড়িত মুসলিম নরনারী। আর ইতিহাসও এভাবেই গাদ্দারদের ঘৃণাভরে স্মরণ করবে।

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধঠাকুরগাঁওয়ে বাংলাদেশী নাগরিককে হত্যা করল সন্ত্রাসী বিএসএফ
পরবর্তী নিবন্ধআফগানিস্তানে ব্রিজ ও ঈদগাহ সংস্কার করলো তালেবান সরকার; বিতরণ করা হলো ম্যাগাজিন