ভারতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের সহায়তা করার জন্য আইনজীবী মুহাম্মাদ ফয়সাল উত্তর প্রদেশ পুলিশের বিরুদ্ধে ভুয়ো মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করে লকআপে ফেলে, তাঁকে মারধরসহ নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন। গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আইনজীবী ফয়সাল জানিয়েছেন, তিনি এব্যাপারে উত্তর প্রদেশ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবেন। গতকাল (মঙ্গলবার) গণমাধ্যমে এসংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে।
রাজস্থানের কোটার বাসিন্দা আইনজীবী মুহাম্মাদ ফয়সাল অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি ন্যাশনাল কনফেডারেশন অব হিউম্যান রাইটস অর্গানাইজেশন (এনসিএইচআরও)-এর পক্ষ থেকে জনগণের আইনী সাহায্যের জন্য উত্তর প্রদেশে গিয়েছিলাম। আমরা জানতে পারি শামলিতে কিছু লোককে অবৈধভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই ঘটনায় তিনি সেখানে তথ্যগুলো জানতে এবং লোকদের সহায়তা করতে গিয়েছিলেন। এই সময়ে আমার সঙ্গে ওই ঘটনা ঘটে।’
মুহাম্মাদ ফয়সাল বলেন, যখন কৈরানা আদালতে লোকেদের আইনী সহায়তা দিচ্ছিলাম সেই সময় পুলিশের এসওজি টিম সন্ধ্যা ৫ টা নাগাদ এসে আমাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। যখন আমি তাদের বিরোধিতা করি এবং বলি যে আমি একজন আইনজীবী কিন্তু তারা (পুলিশ) বলে যে তারা গ্রেফতার করে ছেড়ে দেবে। এরপরে আমাকে যখন তাকে কৈরানা থানায় নিয়ে যায়, আমি তাঁদেরকে রাজস্থান বার কাউন্সিলের পরিচয়পত্র দেখাই। কিন্তু পুলিশ জানায় যে ওই আইডি ভুয়ো, আপনি আইনজীবী নন, আপনি পশ্চিমবঙ্গ থেকে এখানে সহিংসতা ছড়াতে এসেছেন।
আইনজীবী মুহাম্মাদ ফয়সাল বলেন, ‘এরপরে পুলিশ আমাকে মারধর করে, মানসিক নির্যাতন চালায়, নোংরা গালি দেয়। এসময় আমাকে কমপক্ষে চার বার বিদ্যুৎস্পৃষ্ট করা হয়। রাত ১১ টা নাগাদ আমাকে লকআপে পাঠানো এবং এক ভুয়ো এফআইআর দায়ের করা হয়। ওই এফআইআরে দাবি করা হয় যে আমি ২০ ডিসেম্বরে প্রতিবাদ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলাম, যা একটি মিথ্যা। ২২ ডিসেম্বরের এফআইআর-এর ভিত্তিতে আমাকে গ্রেফতার করে ২৪ তারিখে আদালতে পেশ করা হয়। এবং সেখান থেকে আমাকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।’
আইনজীবী ফয়সালের অভিযোগ, সহিংসতা ছড়ানোর পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার (পিএফআই) লিফলেট বিতরণের অভিযোগ করা হয়েছে। তিনি বলেন, পিএফআই-এর সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই। তিনি তাঁদের সদস্যও নন। তিনি ন্যাশনাল কনফেডারেশন অব হিউম্যান রাইটস অর্গানাইজেশন (এনসিএইচআরও)-এর সদস্য। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁর বিরুদ্ধে পিএফআইয়ের লিফলেট বিলির অভিযোগ করা হয়েছে। এব্যাপারে উত্তর প্রদেশ পুলিশের বিরুদ্ধে মানহানি অথবা নির্যাতনের মামলা করবেন বলেও আইনজীবী মুহাম্মাদ ফয়সাল জানিয়েছেন।