ভারতে বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার অপরাধে গত বছর বুয়েটের মেধাবী মুসলিম ছাত্র আবরার ফাহাদকে হত্যা করেছিল হিন্দু অমিত শাহের নেতৃত্বাধীন আরএসএসের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া একদল ছাত্রলীগ সন্ত্রাসী। এবার, ভারতের হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পোস্ট দেওয়ার একদিন পরেই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে নির্মমভাবে আক্রমণ করলো কিছু সন্ত্রাসী।
গত রোববার (১লা মার্চ) বিকেল সোয়া ৪ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের চতুর্থ ও পঞ্চম তলার মাঝামাঝি সিড়িতে তার ওপর হামলা চালানো হয়। এর আগের দিন তথা গত ২৯ শে ফেব্রুয়ারীতে, ফেসবুকে নিজের টাইমলাইনে ভারতের কবি আমির আজিজের একটি কবিতার কিছু অংশ শেয়ার করেন নওরীন। শেয়ারকৃত কবিতাংশটুকু মূলত দিল্লিতে হিন্দু সন্ত্রাসীদের মুসলিমদের উপর চালানো গণহত্যার বিরুদ্ধে ছিল। সেখানে লেখা ছিল-
“তোমরা কালো পদ্ম লেখো, আমরা লিখব লাল গোলাপ
তোমরা জমিনে অন্যায় লিখে দাও
আসমানে বিপ্লব লেখা হবে
সব মনে রাখা হবে, সব”
তাছাড়া, ভারতীয় হিন্দুত্ববাদীরা ইসলাম ধ্বংসের যে প্রকাশ্য হুমকি দিচ্ছে এবং সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে মুসলিমদের উপর গণহত্যা চালাচ্ছে সে বিষয়ক কিছু পোস্টও নওরিন তাঁর ফেসবুক টাইমলাইনে শেয়ার করেছেন। ধারণা করা হয়, এই কারণেই নওরিনের উপর হামলা চালায় অজ্ঞাত পরিচয়ের সন্ত্রাসীরা। কেননা, এভাবে একই ধরণের অপরাধের অভিযোগ তুলে হত্যা করা হয়েছিল বুয়েটের মেধাবী মুসলিম ছাত্র আবরার ফাহাদকে।
বার্তাসংস্থা ‘মানবজমিন’ –এর সূত্রে জানা যায়, আহত শিক্ষার্থীর মা আফরোজা বেগমসহ পরিবারের সদস্যরা জানান, ১লা মার্চ বিকেল সোয়া ৪ টার দিকে পরীক্ষা শেষে একাডেমিক ভবনের পাঁচতলা থেকে নীচে নামার সময় মুখোশধারী কতিপয় সন্ত্রাসী নওরিনের পথরোধ করে। পরবর্তীতে নওরিনের মুখে কাপড় গুজে দেয় এবং মারধর করে। এসময় তারা জ্যামিতিক কম্পাস দিয়ে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত করে এবং রশি দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। পরবর্তীতে সে সেখান থেকে কোনভাবে বাসায় চলে আসে এবং অসুস্থ হয়ে পড়ে। বাসায় প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হলেও শারিরীক অবস্থার আরো অবনতি হলে বুধবার ৪ঠা মার্চ সকালে নওরিনকে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অন্যদিকে, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মুশরিক হিন্দু প্রক্টর সুব্রত কুমার দাস বলে, বিষয়টি মৌখিক কিংবা লিখিত কোন ভাবেই নাকি তাকে শিক্ষার্থীর পক্ষ থেকে জানানো হয়নি!
অথচ, নওরীন সন্দেহভাজন ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। তাহলে, নওরীন কীভাবে ঐ মুশরিক প্রক্টরের কাছে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাবে? যদিও অন্যান্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিন্দু প্রক্টরের কাছে ঘটনাটি সম্পর্কে জানিয়েও ছিলেন। তারপরও, বিশ্ববিদ্যালয় হিন্দু প্রক্টরের পক্ষ থেকে এরূপ বক্তব্য দেওয়া সন্দেহজনক বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।