সারের দাম বস্তায় গত বছরের তুলনায় ২০০ থেকে ৫০০ টাকা বেশি। অতিরিক্ত দামে বিক্রি করলেও কৃষকদের রশিদ দেওয়া হচ্ছে না।
ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীর মাঝে জেগে ওঠা সত্তরের অধিক চরে এক লাখের বেশি একর জমিতে আগাম রবিশস্য আবাদ শুরু হয়েছে। কিন্তু কৃষকেরা খেতে চাষ দিয়ে বাজারে সার কিনতে গিয়ে দেখছেন, সারের দাম বস্তায় গত বছরের তুলনায় ২০০ থেকে ৫০০ টাকা বেশি।
কৃষকদের কাছ থেকে টিএপি, ডিএপি, ইউরিয়াসহ বিভিন্ন সারের দাম বেশি নেওয়া হলেও ডিলাররা কোনো পাকা রসিদ (ভাউচার) দিচ্ছেন না। এতে বেশি দামে সার বিক্রির বিষয়ে প্রমাণসহ কারও কাছে অভিযোগও দিতে পারছেন না কৃষকেরা।
অস্বাভাবিক জোয়ার (বন্যা) ও অতিবৃষ্টির কারণে ফসল আবাদ করে চলতি বছরজুড়ে লোকসান দিতে হয়েছে কৃষকদের। তার ওপর সারের দাম বাড়া লোকসানের পাল্লা আরও ভারী করবে বলে মনে করছেন তাঁরা। সারের দাম বাড়ার পেছনে সংকটকেও দায়ী করা যাচ্ছে না। কারণ, কৃষি বিভাগ বলছে, গুদামে পর্যাপ্ত মজুত আছে। ভোলা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ভোলায় সারের কোনো সংকট নেই। তিন মাস ধরে বিএডিসির ডিএপি সারের বরাদ্দ নেই। সরকার অস্ট্রেলিয়া ও মরোক্কোর ডিএপি দিয়ে কৃষকের চাহিদা পূরণ করছে।
ভোলার অন্তত ৫০ জন কৃষকের ভাষ্য, গত রবি মৌসুম থেকে অতিবৃষ্টি ও অস্বাভাবিক জোয়ারে কৃষকেরা ক্ষতি গুনতে গুনতে দিশেহারা। তার ওপরে করোনাকাল। সবকিছুর দাম বেশি। কিন্তু আয় নেই। এখন চরাঞ্চলে আগাম সবজি চাষাবাদ শুরু করেছেন। ট্রাক্টরে চাষ দিয়ে সার কিনতে এসে দেখেন, বীজ ও সারের দাম আকাশচুম্বী। বেশি দামে সার, ওষুধ, বীজ কিনলেও কোনো পাকা রসিদ দিচ্ছেন না দোকানদার; কিন্তু দোকানের সামনে অস্পষ্ট মূল্যতালিকা ঝুলিয়ে রেখেছেন, যা তাঁরা নিজেরাই মানছেন না।
ভোলার সদর উপজেলায় ১৪ জন ডিলার। জেলায় ৭২ জন। ভোলা সদর ও ইউনিয়ন পর্যায়ের বাজার ঘুরে দেখা যায়, ডিলারের দোকানে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) ইউরিয়া সার বিক্রি হচ্ছে ৮১০ থেকে ৯৫০ টাকা, ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি) ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ৩৫০, ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) ১ হাজার ১৫০ ও মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) ৭৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকায়।
উপজেলার জংশন বাজারের সার ব্যবসায়ী দুলাল মিজি বলেন, তিনি সম্প্রতি ইউরিয়া (মোটা দানা) ৮০০ টাকা, চিকন দানা ৯৫০ টাকা, ডিএপি ১ হাজার ৫০ টাকা, টিএসপি ১ হাজার ১৫০ টাকা এবং এমওপি ৭৩০ টাকা বস্তা দরে কিনেছেন।
প্রথম আলো