সম্প্রতি পূর্ব তুর্কিস্তানে নাস্তিক চীনা যুবক কর্তৃক এক উইঘুর মুসলিম নারীকে অসম্মান করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। হান সম্প্রদায়ের নিষ্ঠুর ঐ যুবক নিজেই ভিডিওটি ধারণ করে; ইতিপূর্বে ঐ নারীকে জোর করে বিয়েও করে সে।
ভিডিওটিতে দেখা যায়, ঐ নাস্তিক হান যুবক অশালীন ভঙ্গিতে ভিডিওর দর্শকদের উদ্যেশ্যে বলছে ‘উইঘুর মেয়েরা ভাল রান্না করে, তারা সুন্দরী এবং পরিশ্রমী।’ এ সময় হান পুরুষটি উইঘুর নারীকে দেখিয়ে অন্য হান পুরুষদেরকেও উৎসাহিত করতে থাকে উইঘুর নারীদের বিয়ে করার জন্য। ঐ মুসলিম নারী তখন নীরবে তাকিয়েছিল, তাঁর চাহনিতে হতাশার গ্লানি স্পষ্ট ছিল।
চীন অধিকৃত পূর্ব তুর্কিস্তানে এরকম ঘটনা এখন হরহামেশাই ঘটছে। বহু বছর ধরে দখলদার চীনা সরকার হান পুরুষদেরকে উইঘুর মহিলাদের জোর পূর্বক বিয়ে করতে উৎসাহিত করে আসছে। যেসকল উইঘুর নারী নাস্তিক হান পুরুষদের বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়, তাদের ও তাদের পরিবারের উপর নেমে আসে নির্যাতনের স্টিমরোলার। জঙ্গি-সন্ত্রাসী তকমা দিয়ে তাদেরকে কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে পাঠানো হয়, অথবা চিরদিনের জন্য নিখোঁজ করে দেয়া হয় তাদের।
গত বছর বার্তা সংস্থা ডোম (ডকুমেন্টস অপরেশন এগেইন্সট মুসলিম) এর প্রকাশিত একটি ভিডিওতে চীনা হান পুরুষদেরকে উইঘুর নারীদের সঙ্গে জোরপূর্বক রাত্রিযাপন করতে দেখা যায়। হান পুরুষদের সঙ্গে যেসব নারীদের রাত কাটাতে বাধ্য করা হচ্ছে, তাদের অধিকাংশের স্বামীই চীনের বন্দিশিবিরে আটক। ভিডিওতে দেখানো পরিস্থিতি ছিল বর্ণনা করার পক্ষে খুবই লজ্জাজনক। ঐ অসহায় উইঘুর নারীর নিষ্পাপ শিশু সন্তানকে ঐ সময় মায়ের দিকে নীরবে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকতে দেখা যায়।
রেডিও ফ্রি এশিয়ার এক প্রতিবেদনে এক নির্লজ্জ চীনা কর্মকর্তা জানায়, ‘সাধারণত একটি বিছানায় সাধারণত একজন কিংবা দুজন ঘুমালেও, তাপমাত্রা যদি খুব শীতল হয়, তিন জনও ঘুমায়। আর হান পুরুষদের সাথে অসহায় উইঘুর মুসলিম নারীদের একই বিছানায় ঘুমানো এখন স্বাভাবিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়’।
ডোম-এর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এই চীনা পুরুষরা উইঘুরদের বাড়িতে একটানা ছয় দিন অবস্থান করে। তারা ওই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কাজ করে এবং খাওয়া-দাওয়াও করে একসঙ্গে। এই সময় তারা কমিউনিস্ট পার্টির (নাস্তিক্যবাদী) আদর্শ নিয়ে আলোচনা করে, উইঘুরদের নাস্তিকতা লালন করতে বাধ্য করে।
আরেক চীনা কর্মকর্তা বলে, ‘তারা ওই পরিবারটিকে চীনা মতাদর্শ (কমিউনিস্ট মতাদর্শ) শিখিয়ে সাহায্য করে, তাদেরকে নতুন চিন্তাচেতনায় নিয়ে আসা হয়। তারা জীবন নিয়ে কথা বলে, আর এই সময়ে তারা একে অন্যের প্রতি অনুভূতি জাগ্রত করার চেষ্টা করে’।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত উইঘুর মুসলিম রুশান আব্বাস একটি অস্ট্রেলিয়ান সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এটি উইঘুর নারীদের গণধর্ষণ’। উইঘুর নারীদের বিয়ের জন্য সরকার হান পুরুষদের অর্থ, বাড়ি ও চাকরি দিচ্ছে’। রুশান জানান, এই ধরনের পুরুষদের প্রত্যাখ্যান করা অনেক সময় দুঃসাধ্য হয়ে ওঠে উইঘুর নারীদের জন্য। কারণ প্রত্যাখ্যান করা হলে তাদেরকে সন্ত্রাসবাদী হিসেবে আখ্যা দেওয়া হবে।
তিনি বলেন,‘মেয়ে অথবা তার পরিবারের সদস্যরা এ ধরনের বিয়ে প্রত্যাখ্যান করতে পারে না। কারণ নাস্তিক হান চীনাদের প্রত্যাখ্যান করা হলে তাদেরকে ইসলামি চরমপন্থি হিসেবে বিবেচনা করা হবে। বছরের পর বছর ধরে বিয়ের নামে উইঘুর নারীদের ধর্ষণ করে যাচ্ছে চীনা নাস্তিকরা’।
বার্তা সংস্থা ডোম (ডকুমেন্টস অপরেশন এগেইন্সট মুসলিম) এর অন্য একটি ভিডিওতে হান পুরুষদের সাথে উইঘুর মুসলিম যুবতীদের জোর পূর্বক বিয়ে দেয়ার করুণ দৃশ্য দেখানো হয়। বিয়ের সময় মেয়েদের হাসতে বলা হয়; অসহায় ঐ নারীদের করুণ চাহনি ছাড়া প্রতিবাদের আর কোন ভাষা থাকে না।
মাজলুম উইঘুর মুসলিম নারীরা তাদের দোয়ায় রবের কাছে চীনাদের শাস্তি কামনা করে, নাকি উম্মাহর নির্বিকার পুরুষদের জন্য বদ দোয়া করে – সেটা কারোই জানা নেই। তবে তাদের করুণ পরিণতির এই দায় নামধারী মুসলিম দেশগুলোর দুনিয়ালোভী শাসকদের উপর অনেকটাই বর্তায় বলে মনে করেন হক্কপন্থী উলামাগণ।
লেখক: ইউসুফ আল-হাসান
তথ্যসূত্র :
১। নাস্তিক চীনা যুবকের উইঘুর নারীকে অপদস্থ করার ভিডিও লিংক – https://twitter.com/i/status/1440946551354953729
২। ডোম- এ ২০২০ সালে প্রকাশিত ভিডিও লিংক – https://youtu.be/czH40x_aZnU
৩। চীনা হান যুবকের সাথে উইঘুর নারীর জোরপূর্বক বিয়ে – https://youtu.be/LJOOiIEG5is
আল্লাহ তাআলা মুসলিমদে হেফাজত করুন। আমীন।
হায়, হায় আফসোস আমি কেমন ভাই হলাম, নিয়ে বোন কে এই বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারছি না
আহ!! এই দিন দেখার জন্য কেন বেঁচে থাকলাম…!
নারীবাদীরা কই? যারা দিনে রাতে নারী অধিকার নিয়ে লাফলাফি করে। নারী অধিকার কি শুধু পতিতাদের জন্য? হায়, আমাদের যদি এই নাস্তিক কুকুরদের নিশ্চিহ্ন করার শক্তি থাকতো….