ভারতের বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোই নয়, পশ্চিমবঙ্গেও ছড়িয়েছে মুসলিম বিদ্বেষ। কিছুদিন আগে স্কুলে হিজাব পরে আসা যাবে না বলে ঘোষণা দিয়েছিল হিন্দুত্ববাদী প্রধান শিক্ষক। এবার বাংলার মালদায় হিজাব পরে ডিউটিতে আসায় স্বাস্থ্যকর্মীকে হেনস্থা করার ঘটনা ঘটেছে।
হিজাব পরে ডিউটিতে গিয়েছিলেন এক মুসলিম স্বাস্থ্যকর্মী।
তাঁর অভিযোগ যে তিনি স্বাস্থ্য দফতর নির্ধারিত পোশাক পরেই নিয়মিত ডিউটি করেন। নির্ধারিত সেই পোশাকের রংয়ের হিজাব বহুদিন থেকেই পরেন তিনি। গত বুধবার হিজাব পরে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাওয়ায় দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্স তাঁকে অপমান করে তাঁর রুমে ঢুকতে পর্যন্ত দেয়নি। সংশ্লিষ্ট নার্স তাঁকে জানিয়ে দেয় হিজাব খুলে না আসলে তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
আনোয়ারার বয়ান অনুযায়ী ‘আমি প্রায় ১৫ বছর ধরে স্বাস্থ্য দফতরে কাজ করছি। গ্রামীণ স্বাস্থ্যকর্মী হিসাবে গোরক্ষা গ্রামে কাজ করি। সরকার নির্ধারিত পোশাক পরেই সবসময় ডিউটি করি। তবে সেই পোশাকের রংয়ের হিজাবও পরি। এনিয়ে আগে কখনও কোনও সমস্যা হয়নি। তবে হিজাব পরে কাজ করায় সিনিয়র হিন্দু নার্স তা নিয়ে আগেও প্রশ্ন করেছে।
সমস্যা দেখা দেয় মাস তিনেক আগে। ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রতি মাসে বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে হিজাব পরে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে সবার সামনে তাকে বলা হয়, যেন হিজাব পরে বৈঠকে না আসেন তিনি। শুধু তাই নয় হিজাব পরে তিনি যেন ডিউটি কিংবা তাঁর রুমেও না যান। কারণ জানতে চাইলে হিন্দু নারী তাকে বৈঠক থেকে বেরিয়ে যেতে বলে। মুসলিম নার্স বলেন, যাইহোক তারপরেও এতদিন কেটে গিয়েছে। আমি হিজাব ছাড়িনি। কিন্তু ফের সমস্যা দেখা দেয় বুধবার। ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট দফতরে মাসিক রিপোর্ট জমা দিতে এসে হিজাব পরে থাকায় সিনিয়র নার্স বলে দেয় যে সে আমার রিপোর্ট জমা নিবে না। হিজাব পরে আমাকে তাঁর রুমেও ঢুকতে দেয়নি।
আমি প্রতিবাদ করলে আমার কথা না শুনে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দেয়। চিৎকার চেঁচামেচির জেরে বিএমওএইচ আমাকে ডেকে পাঠান। আমার কাছে গোটা ঘটনা শোনেন। তিনিও বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু আমার কোনও কথায় সে কান দিতে চায়নি। বিএমওএইচের সঙ্গেও তিনি ঝামেলা শুরু করে দেয়। অগত্যা রিপোর্ট জমা না দিয়েই আমাকে সেখান থেকে ফিরে আসতে হয়।
তথ্যসূত্র:
—–
১। মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীকে হিজাব পরে ঢুকতে বাধা মালদার রতুয়ায়
https://tinyurl.com/5axe7u8s