পূর্ব আফ্রিকার দেশ সোমালিয়া, যার দক্ষিণাঞ্চলের উপর প্রায় পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ এবং কেন্দ্রীয় অঞ্চলের সিংহভাগ অঞ্চলের উপর নিয়ন্ত্রণ করছেন আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট ইসলামি প্রতিরোধ বাহিনী হারাকাতুশ শাবাব। প্রতিরোধ যোদ্ধারা তাদের নিয়ন্ত্রিত বিস্তীর্ণ এই অঞ্চলে গড়ে তুলেছেন একটি নিয়মতান্ত্রিক প্রশাসনিক কাঠামো, যা পরিচালিত হয় ইসলামি শরিয়াহ্ দ্বারা।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে হারাকাতুশ শাবাব মুজাহিদিন কেন্দ্রীয় অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিতে শুরু করলে নড়েচড়ে বসে পশ্চিমা সমর্থিত সরকার। বিশেষ করে হারাকাতুশ শাবাব মুজাহিদিন যখন কেন্দ্রীয় হিরান রাজ্যের রাজধানীকে চতুর্দিক থেকে প্রায় অবরোধ করে নিয়েছিলেন। কেননা শাবাবের হাতে হিরান রাজ্যের পতন ছিলো রাজধানী মোগাদিশু অবরোধের সর্বশেষ পদক্ষেপ।
যার ফলশ্রুতিতে মোগাদিশু কেন্দ্রীক পশ্চিমা সমর্থিত সরকার হিরান রাজ্যে শাবাবের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধের ঘোষণা দেয়। এই লক্ষ্যে সোমালি সরকার বহির্বিশ্বের সাহায্য পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে থাকে, বিশেষ করে মুসলিম নামধারী আরব রাষ্ট্রপ্রধানদের দ্বারে। আর তাতে অনেকটা সফলও হয় পশ্চিমা সমর্থিত ইসলাম বিরোধী মোগাদিশু সরকার।
মোগাদিশু সরকার কুফ্ফার বিশ্বের পাশাপাশি নামধারী মুসলিম দেশগুলোর সাহায্য পেয়ে গত ৩ মাস আগে শাবাবকে রুখতে বড় ধরণের সামরিক অভিযান শুরু করে। যার ফলে কিছু কিছু জায়গা থেকে শাবাবকে কৌশলগতভাবে সরে যেতেও দেখা গেছে। তবে শাবাবের এই সরে যাওয়া যে বড় যুদ্ধের পূর্বেকার একটি ছোট পদক্ষেপ, তা কিছুদিনের মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে যায়।
কেননা শাবাব যোদ্ধাদেরকে এসব এলাকা থেকে সরে যাওয়ার কয়েকদিনের মাথায় ফিরে আসতে দেখা গেছে। আর এরফলে ভারী মূল্যও দিতে হচ্ছে সোমালি সামরিক বাহিনীকে। স্থানীয় সূত্র মতে, সাম্প্রতিক এই যুদ্ধে সোমালি প্রশাসন তাদের উচ্চপদস্থ ১১৫ জন কর্মকতা এবং মিত্র মিলিশিয়া গোষ্ঠীরগুলোর ১৭ জন প্রভাবশালী ব্যাক্তিকে হারিয়েছে। সেই সাথে কয়েক হাজার সৈন্যকে গণকবর দিয়েছে, যার সঠিক হিসাব রাখাও সাংবাদিকদের পক্ষে সম্ভব ছিলো না।
যাইহোক, বিপুল সংখ্যক এই সেনা ও কর্মকর্তাদের হারানোর পাশাপাশি ভারী অর্থনৈতিক ও সামরিক সংকটেও পড়েছে সোমালি প্রশাসন। যার ফলে সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করতে অনেককে আটক, গুম ও ভয়ভীতি দেখিয়ে রাখছে সরকার।
এমন পরিস্থিতিতে ক্রুসেডার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে ঘোষণা করেছে যে, তারা মোগাদিশু সরকারকে প্রতিরোধ বাহিনী শাবাবের বিরুদ্ধে ৯ মিলিয়ন ডলার মূল্যের সামরিক সহায়তা প্রদান করেছে। যদিও এই হামলা শুরুর পর ঘোষণা এসেছে, তবে আগেও কয়েকবার সামরিক সহায়তা দিয়েছে দেশটি।
মোগাদিশুতে মার্কিন দূতাবাসের একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, এই সহায়তা মোগাদিশু প্রশাসনের সামরিক বাহিনীকে আশ-শাবাবের বিরুদ্ধে অভিযানে সহায়তা প্রদান করবে। সামরিক এই সহায়তা মার্কিন প্রশিক্ষিত বিশেষ ইউনিট “দানব” কে দেওয়া হয়েছে। এসব সহায়তা প্যাকেজের মধ্যে রয়েছে ভারী মেশিনগান, সামরিক যান, বিস্ফোরক নিষ্পত্তি যন্ত্র, চিকিৎসা সরবরাহ এবং সরঞ্জাম রক্ষণাবেক্ষণের যন্ত্রপাতি।
এটা জানা যায় যে, ক্রুসেডার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আশ-শাবাবের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক অভিযানে ‘দানব’ বাহিনীকে স্থলের পাশাপাশি আকাশ পথে বিমান সহায়তা প্রদান করছে।
উল্লেখ্য যে, ২৪টি দেশের সম্মিলিত এই সহায়তা সত্বেও আশ-শাবাব মুজাহিদিন এখনও সোমালিয়ায় তাঁদের মজবুত অবস্থান ধরে রেখেছেন। সেই সাথে কুফ্ফার বাহিনীর বিরুদ্ধে দুর্দান্ত সব সফল সামরিক অভিযান পরিচালনা করছেন। যাতে ভারী মূল্য দিচ্ছে ইসলাম বিরোধী কুফ্ফার শক্তি।
লেখক : ত্বহা আলী আদনান
আলহামদুলিল্লাহ। তারা আরো বেশি করে সামরিক সহায়তা দিক। কারণ এই অস্ত্র গুলো তো আমাদের গনিমত হবে।
ইনশাআল্লাহ্…