সম্প্রতি সিরিয়া থেকে তুরস্ক সীমান্তে অনুপ্রবেশকারী ৮ জন সিরিয়ানের উপর অত্যন্ত নৃশংস নির্যাতন চালিয়েছে তুর্কি সীমান্তরক্ষী বাহিনী। এতে নিহত হয়েছেন ২ জন।
সিরিয়ান হিউম্যান রাইটস নেটওয়ার্কের তথ্য অনুসারে, গত ১১ মার্চ ৮ জন সিরিয়ান যুবক সীমান্ত অতিক্রম করে হারেম-রেইহানলি অঞ্চল দিয়ে তুরস্কে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এই যুবকদের পরিবার তুরস্কবাসী। সাম্প্রতিক প্রলয়ংকরী ভূমিকম্পের পর তাদের পরিবারের আর খোঁজ না পাওয়ায় তারা তুরষ্কে অনুপ্রবেশের সিদ্ধান্ত নেন।
সীমান্তের প্রায় ২০০ মিটার ভিতরে ঢুকে পড়লে তারা তুর্কি বর্ডার গার্ডের হাতে আটক হন। এরপর সীমান্তরক্ষীরা তাদেরকে লাঠিসোটা দিয়ে বেদম প্রহার করেন। এতে ঘটনাস্থলেই মাথায় আঘাত পেয়ে একজন প্রাণ হারান। বাকিদেরকে বৈদ্যুতিক তার ও লোহার রড দিয়ে পেটানো হয় এবং গলা দিয়ে জোরপূর্বক ডিজেল ঢেলে দেয়া হয়।
এরপর ঘটনাস্থলে নিহত ব্যক্তির দেহ তাদের কাছেই রেখে দেয় তুর্কি সীমান্তরক্ষী বাহিনী। বাকি ৭ জনকে আহত অবস্থায় ১২ মার্চ সিরিয়ায় ফেরত পাঠানো হয়। আহতদের মধ্যে ৫০ বছর বয়সী একজন ব্যক্তি পরবর্তিতে ১৮ মার্চ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
এদিকে, নির্যাতনের সময় ঘটনাস্থলে নিহত ১৮ বছর বয়সী সিরিয়ান যুবকের লাশ ১৬ মার্চ বাবুল-হাওয়া ক্রসিং গেইটে ফেলে রেখে যায় তুর্কি সীমান্তরক্ষীরা। সেখান থেকে সিরিয়রা তার নিথর দেহ উদ্ধার করে।
সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ছবিতে দেখা যায়, নিহত সিরিয়ানের শরীরের বিভিন্ন অংশ চিরে ফেলা হয়েছে এবং কোনোরকম সেলাই করে রাখা হয়েছে। স্থানীয়দের মতে, তুর্কি বাহিনী তার শরীরের ভিতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অপসারণ করেছে।
উল্লেখ্য যে, এর আগেও একাধিকবার সিরিয়ানদের উপর অমানবিক নির্যাতন করার অভিযোগ রয়েছে তুর্কি বর্ডার গার্ডের বিরুদ্ধে।
১২ মার্চের এই ঘটনার আগে সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কতিপয় সিরিয়ানকে তুর্কি সেনারা দল বেঁধে নির্যাতন করছে। এই ঘটনার পরে সিরিয়ান ভূখন্ডে কৃষিজমিতে কর্মরত ষাটোর্ধ্ব এক প্রৌঢ়কে গুলি করে আহত করেছে তুর্কি সীমান্তরক্ষীরা।