উত্তর প্রদেশের রাতাউল গ্রামের ২৬ বছর বয়সী মুসলিম যুবক সাজিদ পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় অতিরিক্ত আঘাতের কারণে প্রাণ হারিয়েছেন। ভিকটিমের স্বজনদের দেওয়া বিবরণ অনুযায়ী, সাজিদকে একটি আম বাগানে বেআইনি জুয়া খেলায় জড়িত থাকার অভিযোগে রাতাউল পুলিশ গ্রেপ্তার করে। হেফাজতে নেওয়ার পর রাতাউল পুলিশ পোস্টে পুলিশ কর্মকর্তাদের দ্বারা নির্মম মারধরের শিকার হয় বলে জানা গেছে।
আঘাতের তীব্রতার কারণে তার স্বাস্থ্যের চরম অবনতি হয়। গুরুতর আহত হয়ে যাওয়ার পর অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশ সদস্যরা সাজিদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে। পরে পুলিশ আহত সাজিদকে তার পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করে, যারা তাকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য খেকরার নিকটবর্তী চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যায়। তবে, গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই সাজিদ মারা যান।
সাজিদের ভাই শাহাবুদ্দিন দ্য অবজারভার পোস্টের সাথে কথা বলার সময় জানিয়েছেন, “তাকে আটক করেই মারধর করা হয়। এবং একটি মোটরসাইকেলের মাধ্যমে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বর্বরতা অব্যাহত ছিল। যখন আমরা যখন তার মুখোমুখি হয়ে সাক্ষাৎ করি তখন সে অচেতন অবস্থায় পড়ে ছিল। আমাদের কাছে দেওয়ার পরে আমরা অবিলম্বে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম। তার মৃত্যুর খবর গ্রামে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে যা মুসলিমদের মাঝে তাৎক্ষণিক আবেগপূর্ণ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।”
গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা চৌধুরী সাজিদের মতে, “একদল ছেলে একটি পার্কে তাস ও লুডু গেম খেলছিল। হঠাৎ পুলিশ এসে সাজিদকে শারীরিকভাবে মারধর শুরু করে। পরে তারা তাকে থানায় নিয়ে যায়। পরিবার তাকে আহত অবস্থায় থানা থেকে হাসপাতাল নিয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হল তাকে হাসপাতালে মৃত ঘোষণা করা হয়।”
জনাব চৌধুরী বলেন, সাজিদ তিন সন্তানের পিতা এবং সে সম্পূর্ণ নির্দোষ। কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
পুলিশি বর্বরতায় মৃত্যুতে ক্ষুব্ধ হয়ে হাজার হাজার গ্রামবাসী এবং আত্মীয়রা রাতাউল বাসস্ট্যান্ডে জমায়েত হয়, সেখানে তারা বিচারের দাবিতে সাজিদের প্রাণহীন দেহটি রেখে অবস্থান নেয়। বিক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীদেরকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে পুলিশ। এর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে পরিবেশ ক্রমশ উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠে।
পরে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার নামে, সিও প্রীতা সিং, সিও রাকেশ কুমার শর্মা, সিও বিজয় চৌধুরী সহ উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকদের এবং তিনটি থানার বাহিনীকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। গ্রামবাসীরা, পুলিশি অসদাচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসাবে রাস্তা অবরোধ করে।
পরে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানার বাহানায় সাজিদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়ে দেয় স্থানীয় পুলিশ।
তথ্যসূত্র:
——
1.Muslim Youth Allegedly Tortured To Death By Police In Uttar Pradesh’s Rataul (The Observer Post)
–https://tinyurl.com/5ab5wd2z