পবিত্র রমজান উপলক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বটতলায় কোরআন তেলাওয়াত বিষয়ক অনুষ্ঠানের আয়োজন যেসব শিক্ষার্থী করেছেন, তাদের কেন শাস্তি প্রদান করা হবে না—সে বিষয়ে জবাব চেয়ে আরবি বিভাগের চেয়ারম্যানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৩ মার্চ) আরবি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জুবায়ের মোহাম্মদ এহসানুল হক বরাবর এই চিঠিটি প্রেরণ করেছে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আবদুল বাছির।
জানা যায়, কোরআন তেলাওয়াত আয়োজনকারী সংগঠন আরবি সাহিত্য পরিষদ নামে পরিচিত। কিন্তু এটি আরবি বিভাগের অফিসিয়াল কোনো সংগঠন নয়। সংগঠনটি গত ১০ মার্চ বটতলায় কোরআন তেলাওয়াত মাহফিল আয়োজন করে এবং উপস্থিতদের মধ্যে টুপি বিতরণ করে।
এই আয়োজনের আগে ডিন এবং প্রক্টরের থেকে অনুমতি না নেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেছে বলে দাবি করে আরবি বিভাগের চেয়ারম্যানকে চিঠি পাঠিয়েছে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আবদুল বাছির। চিঠিতে শিক্ষার্থীরা অনুমতি না নিয়ে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করায় তাদেরকে কেন শাস্তি দেওয়া হবে না, এই মর্মে আরবি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জুবায়ের মোহাম্মদ এহসানুল হকের জবাব চাওয়া হয়।
জানতে চাইলে অধ্যাপক আবদুল বাছির দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেছে, গত ১০ মার্চ বটতলায় যে প্রোগ্রামটা হয়েছে সেটার ব্যাপারে আমাদের কাছ থেকে কোনোরকম অনুমতি নেওয়া হয়নি এবং আমরাও অবহিত নই। আমি জানার পর বিভাগের চেয়ারম্যানকে ছবি দেখিয়েছি এবং বলেছি এরা আপনার বিভাগের কি না। কিন্তু চেয়ারম্যান আমাকে বলেছেন এদেরকে তিনি চেনেন না। এমনকি আরবি সাহিত্য পরিষদ নামে বিভাগের কোনো সংগঠনই নেই।
অনুমতি না নিয়ে অনেক প্রোগ্রাম হয় সেক্ষেত্রে সমস্যা না থাকলেও এবার কেন সমস্যা জানতে চাইলে কলা অনুষদের ডিন আব্দুল বাছির বলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হলে আমরা ছাড় দেই কিন্তু এ ক্ষেত্রে তারা আমাদের শিক্ষার্থী কি না এ ব্যাপারে আমাদের এখনও সন্দেহ আছে।
তাহলে আরবি বিভাগের শিক্ষককে চিঠি কেন দেওয়া হয়েছে, এ ব্যাপারে সে কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি।
তবে তারা যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হন সেক্ষেত্রে প্রোগ্রাম করতে পারবেন কি না জানতে চাইলে আব্দুল বাছির বলে, সেক্ষেত্রে আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি না তবে তাদেরকে অনুমতি নিতে হবে।
তবে শিক্ষার্থীরা যে আরবি বিভাগের না মর্মে চেয়ারম্যানের বরাত দিয়ে আব্দুল বাছির বলেছে—এমন তথ্য আবার অস্বীকার করেছেন আরবি বিভাগের চেয়ারম্যান জুবায়ের এহসানুল হক। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ডিন সাহেব আমাকে এমন ছবি দেখিয়েছে যেটি পেছন থেকে তোলা যেখানে কোনো মুখ দেখা যাচ্ছে না। ফলে আমি স্যারকে বলি যে এই ছবি দেখে আমার শিক্ষার্থীদের চেনা সম্ভব হচ্ছে না। তবে সেখানে আমার বিভাগের শিক্ষার্থীরা নেই সেটা আমি বলিনি। তবে আরবি সাহিত্য পরিষদ নামে বিভাগ অনুমোদিত কোনো সংগঠন নেই এটাও সত্য। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক সংগঠন থাকতে পারে। সেখানে বিভাগের অনুমোদন থাকতে হবে এমন কোনো কথা নাই। আর আমার চেনা না চেনা দিয়েও তো প্রমাণ হয় না যে তারা আমার শিক্ষার্থী নয়। আমি নাও চিনতে পারি।
তিনি আরও বলেন, “এখানে কোনো একটা অপতৎপরতা চলছে। শিক্ষার্থীরা কোরআন তেলাওয়াত করছে কোনো বলাৎকার বা অনৈতিক কোনো কাজ তো করছে না। তাহলে কেন এত সমস্যা? কত শত প্রোগ্রাম এখানে হয় তখন তো কোনো অনুমতি লাগে না তাহলে কোরআন তেলাওয়াতের প্রোগ্রামে কী সমস্যা আমি বুঝি না।”
তবে ডিন অফিস থেকে প্রেরিত চিঠিতে কী উল্লেখ আছে, সেই বিষয়ে ড. জুবায়ের মোহাম্মদ এহসানুল হক কিছু বলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, এটা অফিসিয়াল বিষয়।
তথ্যসূত্র:
১. ঢাবিতে কোরআন তেলাওয়াত অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের শাস্তি দিতে ডিনের চিঠি – https://tinyurl.com/2sv4tez4