
৭ অক্টোবর মঙ্গলবার রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে উদ্বোধন হল আফগানিস্তান বিষয়ক ৭ম মস্কো ফরম্যাট সভা। এই সভায় অংশগ্রহণ করছে আঞ্চলিক ১১টি সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধি: আফগানিস্তান, রাশিয়া, চীন, ইরান, ভারত, পাকিস্তান, কাজাখিস্তান, তাজিকিস্তান, কিরগিজস্তান, উজবেকিস্তান এবং তুর্কমেনিস্তান। ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ফোরামের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল আফগানিস্তানের সাথে আঞ্চলিক রাষ্ট্রসমূহের সমন্বয় জোরদার করা, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা। ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানের প্রতিনিধি হিসেবে সভায় অংশগ্রহণ করছেন তালিবান পররাষ্টমন্ত্রী মৌলভী আমির খান মুত্তাকি হাফিযাহুল্লাহ।
কাবুলের সাথে সহযোগিতা জোরদার করতে সমাবেশে অংশ নেয়া সদস্য রাষ্ট্রদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সভার আয়োজক দেশ রাশিয়া। তারা আফগান ইস্যুতে পশ্চিমা দেশগুলোর অবস্থানকে ‘বৈরী নীতি’ হিসেবে তুলে ধরেছে।
উদ্বোধনী বক্তব্যে রাশিয়ার পররাষ্ট্র সের্গেই ল্যাভরভ বলেছে, এই সমাবেশটি একটি হাই-প্রোফাইল আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে, যা রাশিয়া, চীন, ইরান, ভারত ও পাকিস্তানসহ এই অঞ্চলের মূল রাষ্ট্রগুলোকে একত্রিত করেছে।
সে আরও বলেছে, আঞ্চলিক শক্তিগুলো আফগানিস্তানকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত করতে সত্যিকার অর্থেই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে। আফগানিস্তান তার প্রতিবেশি রাষ্ট্রের সাথে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে। তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে সম্মান পাওয়ার যোগ্যতা রাখে।
সমাবেশে প্রথমবারের মতো ইমারতে ইসলামিয়া আফগানিস্তানকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানানো হয়েছে। বক্তব্যে সে আফগানিস্তানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেছে, আফগান প্রতিনিধি ছাড়া আফগানিস্তানের সাথে জড়িত বিষয়গুলো সমাধান করা সম্ভব নয়।
মূল সমাবেশ আরম্ভের পূর্বেই তালিবান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত করেছে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এই সময় সে আফগান-রাশিয়া সম্পর্ক এবং আঞ্চলিক রাষ্ট্রগুলোর সম্মুখীন হওয়া সাধারণ সমস্যাগুলো সমাধান, সদস্যদের সাধারণ সমৃদ্ধির পথ সহজতর করা ইত্যাদি প্রসঙ্গে আলোচনা করেছে। সে জোর দিয়ে বলেছে, মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তর নিরাপত্তা ও উন্নয়নের স্বার্থে আঞ্চলিক রাজনীতি ও অর্থনীতিতে আফগানিস্তানের অন্তর্ভুক্তি অপরিহার্য।
বিগত জুলাই মাসে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়া কর্তৃক ইমারতে ইসলামিয়া সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির প্রসঙ্গটি সে তুলে ধরেছে। সে বলেছে, দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার জন্য রাশিয়া আফগানিস্তানের উপর সকল বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই, মাদক পাচার রোধ ও আফগানিস্তানের সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক সম্প্রসারণের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া ফেডারেশন।
আফগান ইস্যুতে পশ্চিমা দেশের অবস্থানের তীব্র নিন্দা জানিয়ে সে বলেছে, তারা সার্বভৌম আফগান জাতির আর্থিক সম্পদ দখল’ করেছে। আফগানিস্তানের ব্যাংকিং ব্যবস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা অটল রেখেছে।
পশ্চিমাদের সংঘাতের নীতিতে সংশোধনের আহ্বান জানিয়ে সে বলেছে, পশ্চিমাদের উচিত বিগত আফগান যুদ্ধের ক্ষতিপূরণের দায়িত্ব নেয়া, আফগানিস্তানের যে সম্পদ তারা ছিনিয়ে নিয়েছে বা ক্ষতি করেছে তা ফেরত দেয়া। আফগানিস্তান বা প্রতিবেশী দেশগুলোতে বিদেশি সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের যেকোনও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সে সতর্ক করেছে। এই ধরনের পদক্ষেপ নতুন সংঘাতের পথে নিয়ে যাবে, আঞ্চলিক পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করে তুলবে।
তথ্যসূত্র:
1. Lavrov opens Moscow Format talks, calls for end to West’s ‘hostile policy’ toward Afghanistan
– https://tinyurl.com/arubebtt


