বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশি আখ্যা দিয়ে ভাঙা হল ‘দেশীয়’ শ্রমিকদের ঝুপড়ি!

0
1178
বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশি আখ্যা দিয়ে ভাঙা হল ‘দেশীয়’ শ্রমিকদের ঝুপড়ি!

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) পাসের পর থেকেই এর প্রতিবাদে ভারতে বিক্ষোভ চলছে। সেই বিক্ষোভের মাঝেই কোনো প্রমাণ ছাড়াই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী বলে একটি বস্তি থেকে কয়েকশো বাসিন্দাকে উচ্ছেদ করেছে বেঙ্গালুরু কর্তৃপক্ষ।

আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার শহরের মারাঠা হালল্লির কাছের ওই বস্তি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। ফলে আশ্রয় হারিয়ে খোলা আকাশের নীচে দিন কাটাচ্ছেন বাসিন্দারা। তাদের কেউ আসাম, কেউ ত্রিপুরা থেকে কাজের জন্যে ওই বস্তিতে এসে থাকছেন। এমনকি তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন কর্ণাটকের বাসিন্দাও রয়েছেন।

যদিও অসহায় অবস্থায় রাস্তায় থেকেও তাঁরা বলছেন, ‘কোন নথি দেখতে চান বলুন, সব দেখাচ্ছি। কিন্তু আমরা অন্য কোনও দেশের নয়, কেবল ভারতীয়।’

স্থানীয় সন্ত্রাসী দল বিজেপির গুণ্ডা অরবিন্দ লিম্বভালি ওই বস্তির ছবি তুলে টুইটারে পোস্ট করেন। তিনি লিখেন, ‘ওই এলাকায় অন্য জায়গা থেকে অনেকে এসে বেআইনিভাবে বসবাস করেছেন। তাদের অনেকেই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী।’

এরপরই ওই বস্তির সব বাড়িঘর ভেঙে দেওয়া হয়। তারপর একটি চিঠি দিয়ে বেঙ্গালুরু কর্তৃপক্ষ জানায়, ওই বাড়িগুলো বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা বেআইনিভাবে তৈরি করেছে।

উচ্ছেদ হওয়া বাসিন্দাদের দাবি, তারা কেউ বাংলাদেশি নন। সকলেরই ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রমাণের নথিপত্র রয়েছে।

আসাম থেকে আসা ওই বস্তির এক বাসিন্দা আবদুর রহমান বলেন, ‘শনিবার দুপুর ১২টায় আমাদের ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। আমাদের এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়। আমরা বাংলাদেশি নই। আমরা যে ভারতীয়, তার কাগজপত্র সব আছে। এখানে কাজ করে সংসার চলে আমাদের।’

ভারতরে একাধিক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ওই বস্তির বাসিন্দারা আধার কার্ড, ভোটার কার্ড দেখিয়েছেন। আবার এনআরসিতে যে তাদের নাম রয়েছে, সে রাজ্য থেকে আসা কয়েকজন সেই নথিও দেখিয়েছেন।

যাদের ঘর ভাঙা হয়েছে তাদের অধিকাংশই ত্রিপুরা কিংবা আসামের নাগরিক। এ ছাড়াও রয়েছেন বেঙ্গালুরুর কয়েকজন। বুলডোজার দিয়ে ঘর ভাঙা হয়েছে আসমের বাসিন্দা মুন্নির। তিনি বলেন, কোনো আগাম নোটিশ ছাড়াই বস্তিতে এসে ঘর ভাঙতে শুরু করে পুলিশ। ঘর থেকে মালপত্র বের করতে সময় পাইনি। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ভেবে এসব করেছে পুলিশ। কিন্তু ওরা কেন আমাদের নথিপত্র দেখছে না!

চার বছর আগে আসাম থেকে ওই বস্তিতে এসেছিলেন মুহাম্মদ আসাদ-উল। তিনি বলেন, আমরা এখানে সিকিউরিটি গার্ড ও ঝাড়ুদারের কাজ করি। পুলিশ যদি মনে করে আমরা অবৈধ নাগরিক তাহলে তাদের উচিত আমাদের নথিপত্র পরীক্ষা করে দেখা।

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধ‘সবকা সাথ,সবকা বিকাশ’১৩০ কোটি মানুষের যা সম্পদ তা মাত্র ৬৩ জন ধনীর পকেটে
পরবর্তী নিবন্ধসন্ত্রাসী বিজেপি নেতার ঘোষণা -মুসলিমদের জন্য বরাদ্দ টাকা হিন্দুদের জন্য খরচ করব