দীর্ঘ ৯ বছরের সিরিয়া যুদ্ধে ক্রুসেডারদের হামলায় লক্ষ লক্ষ সিরিয়ান মুসলিম দেশ-দেশান্তরে উদ্বাস্তু হয়েছেন। অসহায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। হাজার হাজার মানুষ আহত ও নিহত হয়েছেন। এখনও যারা সিরিয়ায় রয়ে গেছেন তাদের জন্য সিরিয়া হয়ে উঠেছে মৃত্যুপুরী। ক্রুসেডার রাশিয়া-ইরান ও কুখ্যাত নুসাইরি আসাদ সন্ত্রাসী বাহিনী মেতে উঠেছে মুসলিম গণহত্যায়। নিশ্চুপ কথিত মানবতাবাদীরা, এমনকি নিশ্চুপ মুসলিম বিশ্বও!
গেল ফেব্রুয়ারিতে সিরিয়ায় ইদলিবে নিষিদ্ধ সব মারণাস্ত্র ব্যবহার করে বৃষ্টিবোমা নিক্ষেপ করছে সন্ত্রাসী কুফফার জোট। ক্রুসেডার রাশিয়া জোট রাতদিন ২৪ঘন্টা অনবরত বোমা হামলা চালায়। বিমান ও রকেট হামলার মাধ্যমে পাখির মত মুসলিম হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে। গোটা ইদলিব শহরে রকেট বোমা ও ক্লাস্টার বোমা হামলা করছে। গত ফেব্রুয়ারিতে হাসপাতাল, ক্লিনিক ও স্কুলকে টার্গেট করে বোমা হামলা চালিয়েছে। এইসব হামলায় অসংখ্য অসহায় গৃহহীন মুসলিম নারী-পুরুষ শহীদ হন। হামলাগুলো এতোটাই হিংস্র যে, রাতে ইদলিব শহরটির যে দিকেই থাকানো হয় মনে হয় যেন এটি একটি আগুনের শহর।
“হোয়াইট হেলমেট” কর্মীরা জানান, গেল এক সপ্তাহে ইদলিব শহরে বেসামরিক লোকদের বাড়িঘর ও মুসলিমদের আশ্রয় শিবিরগুলোতে ৯৬টি বিমান হামলা, ৮টি ক্লাস্টার বোমা হামলা এবং ১৩১টিরও অধিক আর্টিলারি হামলা চালিয়েছে কুফ্ফার ও মুরতাদ বাহিনী।
শক্তিশালী সংবাদ মাধ্যম “নিউ ইয়র্ক টাইম’স, আল জাজিরা,দি গার্ডিয়ান সহ বহু আন্তর্জাতিক মিডিয়ার “মতে রাশিয়া জোট টার্গেট করে করে স্কুল, হাসপাতাল, ক্লিনিক, বাজার ও গৃহহীন মানুষের আশ্রয় শিবিরগুলোতে হামলা চালাচ্ছে। প্রচণ্ড শীত যেখানে মাইনাস ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় গৃহহীন সিরিয়ান মুসলিমরা নিজেদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে অনেক কষ্টে আশ্রয় শিবিরগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। সেখানেও সন্ত্রাসী হামলা থেকে রেহাই পাচ্ছেনা সাধারণ মানুষ । নিঃসন্দেহে এটি একটি যুদ্ধাপরাধ। কিন্তু, বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার ঠিকাদাররা এ নিয়ে নিশ্চুপ।
গত ফেব্রুয়ারিতে মাসব্যাপী বোমা হামলায় শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশু শহীদ হয়। “হোয়াইট হেলমেট সিভিল ডিফেন্স, সিরিয়া ” জানায়, ২৯ ফেব্রুয়ারিতে বোমা হামলায় দু’জন শিশুসহ ৬জন সাধারণ মানুষ নিহত হয়। একইভাবে,
(২৮/০২/২০) – পিতা, মাতা ও তাদের ২ সন্তানসহ ৪ জন নিহত হয়।
(২৭/০২/২০)- ৫ শিশু ও ২জন মহিলাসহ ১৫ জন সাধারণ মানুষ নিহত হয়। যাদের বেশিরভাগই এক পরিবারের বলে জানা যায়।
(২৬/০২/২০)- পিতা,মাতা ও তাদের ২ সন্তানসহ ৪জন নিহত হয়।
(২৫/০২/২০)- একই পরিবারের ৪জন সহ মোট ৬জন নিহত হয়। এবং ২০ জন মারাত্মকভাবে আহত হয়।
(২৪/০২/২০)- ৮টি স্কুল ও কিন্ডারগার্টেনে এবং হাস্পাতাল ও ক্লিনিকে হামলায় ৩ শিক্ষক ও ১ ছাত্র ৯ জন শিশুসহ ২৬জন নিহত ও ৯৫জন মারাত্মক আহত হয়। সন্ত্রাসী জোট এ-ই দিনেই ৯৬টি বিমান হামলা,৮টি ক্লাস্টার বোমা হামলা, ২৩১টি কামান ও মিসাইল হামলা চালিয়েছে।
(২৩/০২/২০)- ২৬ জন নিহত যাদের মধ্যে শিক্ষক ছাত্র ও শিশু রিয়েছে।
(২২/০২/২০)-৪জন নিহত ও অনেকে আহত।
(২১/০২/২০)- গণহত্যার পরে প্রাণ বাঁচানোর জন্য কাজ করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের বোমা হামলায় দু’জন নিবেদিত হোয়াইট হেলমেট কর্মী মারা গিয়েছেন এবং ২৩ জন স্বেচ্ছাসেবক আহত হয়েছেন।
হোয়াইট হেলমেট এবং যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলোর মতে, বছরের শুরু থেকেই কমপক্ষে ২২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আক্রমণ করা হয়েছে এবং মোট ৪০০ জন বেসামরিক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। আর, শত শত সাধারণ মানুষ মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন।