করোনা ডামাডোলের আড়ালে বাড়ছে এডিস মশার প্রকোপ!

0
940

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবকে বৈশ্বিক মহামারি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। দেশেও এখন পর্যন্ত প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। সম্ভাব্য খারাপ পরিস্থিতির আশঙ্কায় নেওয়া হচ্ছে নানাবিধ প্রতিরোধী পদক্ষেপ। অথচ গত বছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় এ বছরের তিন মাসে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি, ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার ঘনত্বও বেশি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখনই আগাম পদক্ষেপ না নেওয়া না হলে এবারও ডেঙ্গু পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে। করোনারকারণে সব ‘ফোকাস’ সেদিকে চলে গেছে। তাই ডেঙ্গু প্রতিরোধের দিকটা দুর্বল হওয়ার শঙ্কা তাদের।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) জানায় ২২ মার্চ পর্যন্ত করোনায় মোট সংক্রমণের সংখ্যা ২৭। দেশে এ পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দুই জন মারা গেছেন। এছাড়া, বিভিন্ন হাসপাতালে আইসোলেশনে আছেন ৪০ জন।

জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক ডা. শাহনীলা ফেরদৌসি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গতবারের তুলনায় চলতি বছর রোগী ভর্তির সংখ্যা বেশি ঠিকই, তবে গতবার কিছুটা ইনফরমেশন গ্যাপ ছিল, তথ্যগুলো সেভাবে শুরুর দিকে আসেনি। আবার গত মাসে প্রকাশিত পোস্ট মনসুন সার্ভে অনুযায়ী এবারে আবাসিক এলাকায় এডিস মশার ঘনত্ব কম, কিউলেক্স মশার ঘনত্ব বেশি।’

৫ মার্চ শুরু হয়ে ১৫ মার্চ পর্যন্ত‘প্রি মনসুন সার্ভে’ হয়েছে। তখন কিছুটা বৃষ্টি ছিল, যা এডিস মশা বাড়ার ‍উপযোগী।

‘করোনা ভাইরাস মোকাবিলার পাশাপাশি ডেঙ্গু নিয়েও সমানভাবে কাজ চালাতে হবে এবং পুরো সজাগ থাকতে হবে’, বলেন ডা. শাহনীলা ফেরদৌসী।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চলতি বছরের প্রথম এই তিনমাসে এডিস মশার যে ঘনত্ব পেয়েছি সেটা অনেক বেশি। এবারে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও বেশি। অর্থাৎ ডেঙ্গুর সিজনে রোগীর সংখ্যা বাড়বে যদি আগাম পদক্ষেপ না নেওয়া হয়।’

তিনি বলেন, “করোনা ভাইরাসের কারণে সব ‘ফোকাস’ চলে গেছে সেদিকে, তাই শঙ্কা হচ্ছে ডেঙ্গুর দিকটা দুর্বল না হয়।’ তিনি আগাম পদক্ষেপ হিসেবে এডিস মশা নিধনে এবং এডিস মশার প্রজননস্থল কমানোর ওপর জোর দেন।

‘এডিসের ব্রিডিং প্লেস ম্যানেজমেন্টের জন্য মার্চ থেকে মে—এই তিনমাস কাজ করতে হবে এবং মে জুন থেকে স্প্রের কাজ করতে হবে,’ বলেন কবিরুল বাশার।

জানতে চাইলেস্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,‘কেবল গত বছরের তুলনায় নয়, বলতে গেলে গত ১৮ বছরের তুলনাতেই চলতি বছরের শুরুতে রোগীর সংখ্যা বেশি। কিন্তু গতবছর যখন রোগী সংখ্যা ১ লাখের বেশি হয়ে গেলো, একদিনেই যখন ২ হাজার ৪০০-এর বেশি রোগী ভর্তি হলো, তাহলে সে হিসাবে একটা মিনিমাম সংখ্যায় নামতেতো সময় লাগবে।’

 

মন্তব্য করুন

দয়া করে আপনার মন্তব্য করুন!
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

পূর্ববর্তী নিবন্ধকরোনাভাইরাস প্রতিরোধে খাবার তালিকা
পরবর্তী নিবন্ধযথা সময়ে অনুষ্ঠিত হবে দেওবন্দের বাৎসরিক পরীক্ষা